দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইউলের এক সহযোগীর ব্যক্তিগত মেইল হ্যাক করেছিল উত্তর কোরিয়া। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ব্রিটিশ বিবিসিকে এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। গত বছরের নভেম্বরে ইউন সুক-ইউলের যুক্তরাজ্য সফরের সময় এই ঘটনা ঘটে।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টর কার্যালয় জানিয়েছে, প্রেসিডেন্টের ওই সহযোগী ব্যক্তিগত মেইল অফিসের কাজে ব্যবহারের সময় এই হ্যাকিংয়ের ঘটনা ঘটে। দেশটির স্থানীয় একটি সংবাদপত্র সরকারের উচ্চপর্যায়ের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ইউনের ভ্রমণ তালিকা জানার জন্য এই হ্যাক করা হয়ে থাকতে পারে।
কুকমিন ইলবো নামের ওই সংবাদপত্রটি জানিয়েছে, ওই সহযোগীর ব্যক্তিগত মেইলে বেশ কয়েকটি মেইল পাঠিয়েছিলে প্রেসিডেন্ট নিজে। হ্যাকিংয়ের পর সেই মেইলগুলোও মুছে ফেলা হয়েছে। তবে এই হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে কী ধরনের তথ্য চুরি হয়েছে সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি দক্ষিণের প্রেসিডেন্ট কার্যালয়।
দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদমাধ্যমগুলোর দাবি, এই প্রথমবার সফলভাবে উত্তর কোরিয়া দক্ষিণের প্রেসিডেন্টর কোনো ঘনিষ্ঠ সহযোগীর মেইল হ্যাক করতে পেরেছে। তবে প্রেসিডেন্ট কার্যালয় জানিয়েছে, প্রেসিডেন্টর নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুরক্ষিত আছে।
দক্ষিণ কোরিয়া সরকারি সূত্রমতে, এই হ্যাকিংয়ের বিষয়টি জানার পর সবাই আতঙ্কিত ছিলেন এই ভেবে যে, এই হ্যাকিং হয়তো প্রেসিডেন্ট ইউনের ভ্রমণ নিরাপত্তায় প্রভাব ফেলতে পারে। তবে সেরকম কিছু ঘটেনি। সেই সময় তিন দিনের সফরে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লন্ডনে ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লস, রানি ক্যামিলা ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের সঙ্গে দেখা করেছেন।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের তরফ থেকে বিবিসির কাছে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘জনৈক দায়িত্বজ্ঞানহীন পরিচালক নিয়ম ভেঙে ব্যক্তিগত কাজের জন্য কমার্শিয়াল মেইল ব্যবহারে করায় সমস্যাটি ঘটে।’ পশ্চিমা বিশ্বের অভিযোগ—সাধারণত, অর্থ ও তথ্য চুরির লক্ষ্যেই উত্তর কোরিয়া হ্যাকিং কার্যক্রম চালিয়ে থাকে করে থাকে। দিনদিন এই দেশটির হ্যাকারদের হ্যাকিং পরিসীমা কেবল বেড়েই চলেছে।
বিগত কয়েক বছর ধরেই পিয়ংইয়ং পশ্চিমা বিশ্বের ব্যাপক নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি। দেশটির সাইবার হ্যাকাররা বিপুল অর্থ ক্রিপ্টোকারেন্সি হিসেবে আত্মসাৎ করে এবং দেশটির শাসকগোষ্ঠীকে পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচিতে সাহায্য করে থাকে। ২০১৬ সাল থেকে এখন পর্যন্ত উত্তর কোরিয়ার হ্যাকাররা ৩০০ কোটি ডলার আত্মসাৎ করেছে বলে ধারণা করা হয়।