ভারতের মাটিতে চলমান ওয়ানডে ক্রিকেট বিশ্বকাপের মাঠে ঢুকে পড়েছে রাজনীতি। ঘটনাটি ঘটেছে চেন্নাইয়ে অনুষ্ঠিত পাকিস্তান ও আফগানিস্তান ম্যাচে। পাকিস্তানের বিপক্ষের ম্যাচে ম্যাচ-সেরা হয়েছেন আফগানিস্তানের খেলোয়াড় ইব্রাহিম জাদরান। আর তিনি তাঁর ম্যাচ-সেরার পুরস্কারটি উৎসর্গ করেছেন পাকিস্তান থেকে বিতাড়িত আফগান শরণার্থীদের প্রতি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
চলতি মাসের শুরুর দিকে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রত্যাশী প্রায় ১৭ লাখ আফগানকে নভেম্বরের মধ্যে দেশ ত্যাগের নির্দেশ দেয় পাকিস্তান। দুই দেশের সীমান্তে জঙ্গি হামলার ঘটনায় উত্তেজনা বাড়ার পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে এই ঘোষণা দিয়েছে ইসলামাবাদ। স্বেচ্ছায় না গেলে আফগানদের জোরপূর্বক নির্বাসনে পাঠানো হবে বলে জানান পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সরফরাজ বুগতি।
সরফরাজ বুগতি বলেন, ‘যদি তারা না যায়, তবে প্রাদেশিক কিংবা কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন আইন প্রয়োগকারী সবগুলো সংস্থাকে অবৈধ আফগানদের নির্বাসন বাস্তবায়নের নির্দেশ দেওয়া হবে।’ সেই সঙ্গে তিনি পাকিস্তানে ‘অবৈধ’ আফগানদের ব্যক্তিগত ব্যবসা ও সম্পদ শনাক্ত ও বাজেয়াপ্ত করার লক্ষ্যে একটি টাস্কফোর্স গঠনেরও ঘোষণা দেন।
দুই দেশের মধ্যকার রাজনীতির সেই বিষয়টি এবার প্রভাবিত করেছে খেলার মাঠকেও। গতকাল সোমবার চেন্নাইয়ের এম এ চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত খেলায় পাকিস্তানের বিপক্ষে ৮ উইকেটে জয়লাভ করে আফগানিস্তান। আফগানিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ ৮৭ রান করেন ইব্রাহিম জাদরান। ম্যাচ জেতানো ইনিংসের সুবাদে জিতে নেন ম্যাচ-সেরার পুরস্কার। সেই পুরস্কার তিনি উৎসর্গ করেন পাকিস্তান থেকে বিতাড়িত ১৭ লাখ আফগান শরণার্থীকে।
ম্যাচ শেষে পুরস্কার নিতে গিয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে জাদরান বলেন, ‘আমি নিজের জন্য এবং দেশের জন্য খুব আনন্দিত। আমি এই ম্যাচ-সেরা পুরস্কারটি উৎসর্গ করতে চাই যাদের পাকিস্তান থেকে আফগানিস্তানে ফেরত পাঠানো হয়েছে।’
উল্লেখ্য, বিদেশে আশ্রয় নেওয়ার অধিকার আন্তর্জাতিক আইনের অন্তর্ভুক্ত। পাকিস্তানে কয়েক লাখ আফগান শরণার্থী রয়েছে। বিশেষ করে ২০২১ সালে তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করার পর এই সংখ্যা বেড়েছে। জাতিসংঘের মতে, প্রায় ১৩ লাখ আফগান পাকিস্তানে শরণার্থী হিসেবে নিবন্ধিত রয়েছে এবং আরও ৮ লাখ ৮০ হাজার আফগান পাকিস্তানে থাকার আইনি মর্যাদা পেয়েছে। তবে আরও ১৭ লাখ আফগান এখনো পাকিস্তানে ‘অবৈধভাবে’ অবস্থান করছে, যারা শরণার্থীর মর্যাদা পায়নি—এমন দাবি করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সরফরাজ বুগতি।