শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি ‘পুরোপুরি ধসে পড়েছে’। সংকট এত বেশি ঘনীভূত হয়েছে যে, দেশটির কাছে জ্বালানি তেল কেনার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থও নেই। স্থানীয় সময় বুধবার দেশটির পার্লামেন্টে দেওয়া এক ভাষণে এ কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে। বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের এক প্রতিবেদনে থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
রনিল বিক্রমাসিংহে বলেছেন, ‘জ্বালানি তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ এবং খাদ্য সংকটের বাইরেও আমরা আরও গুরুতর সমস্যার মুখোমুখি। আমাদের অর্থনীতি পুরোপুরি ধসে পড়েছে।’ এ সময় তিনি আরও জানান, পর্যাপ্ত অর্থ না থাকায় শ্রীলঙ্কার এখন আর জ্বালানি তেল আমদানি করতে সক্ষম নয়।
শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে সিলন (শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান) পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের ঋণ রয়েছে প্রায় ৭০০ মিলিয়ন ডলার। ফলে, বিশ্বের কোনো দেশ বা প্রতিষ্ঠানই আমাদের তেল সরবরাহে আগ্রহী নয়। এমনকি নগদ টাকার বিনিময়েও তাঁরা তেল সরবরাহ করতে চাচ্ছে না।’
শ্রীলঙ্কার এই অর্থনৈতিক সংকটকে দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট। বিশ্লেষকদের ধারণা, রনিল বিক্রমাসিংহের এই স্বীকারোক্তি মূলত তাঁর সমালোচক এবং বিরোধী রাজনীতিবিদদের বোঝানোর জন্য যে, তিনি আগেই বিধ্বস্ত হওয়া অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। একই সঙ্গে সমালোচক এবং বিরোধীদের এই ধারণাও দেওয়া যে, শিগগিরই এই সংকট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব নয়। এ সময় তিনি, তাঁর পূর্ববর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রীকে দেশটির অর্থনীতি ডুবানোর জন্য দায়ী করেন।
পূর্ববর্তী সরকারের সমালোচনা করে রনিল বিক্রমাসিংহে বলেন, ‘যদি শুরুতেই অর্থনীতি ধসে পড়া রোধে পদক্ষেপ নেওয়া হতো তাহলে আজ এমন পরিস্থিতি দেখতে হতো না। কিন্তু আমরা সেই সুযোগ হারিয়ে ফেলেছি। এখন আমরা একেবারে অধঃপতনের চিহ্ন দেখতে পাচ্ছি।’
এর আগে, চলতি সপ্তাহে শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টের প্রধান দুই বিরোধী দল রনিল বিক্রমাসিংহের বিভিন্ন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে পার্লামেন্টের অধিবেশন বর্জন করে। গত মে মাসে রনিল বিক্রমাসিংহে দেশটির প্রধানমন্ত্রী এবং তার কিছুদিন পর অর্থমন্ত্রী হিসেবেও নিযুক্ত হন তিনি।