গত বছর পরমাণু অস্ত্র তৈরির পেছনে উত্তর কোরিয়া ৬৪ কোটি ডলারের বেশি খরচ করে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পরমাণু অস্ত্রবিরোধী সংস্থাগুলো সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা মহামারি ও অর্থনৈতিক সংকট সত্ত্বেও এই বিপুল পরিমাণ অর্থ পরমাণু অস্ত্র তৈরির পেছনে খরচ করেছে উত্তর কোরিয়া।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, পরমাণু অস্ত্র তৈরির কর্মসূচিতে উত্তর কোরিয়া আসলে ঠিক কী পরিমাণ অর্থ খরচ করছে, তার নিশ্চিত তথ্য-উপাত্ত পাওয়া সম্ভব নয়। কারণ দেশটি এ-সংক্রান্ত কোনো তথ্যই জনসমক্ষে প্রকাশ করে না। এমনকি এখনো পর্যন্ত ঠিক কতটি পরমাণু অস্ত্র উত্তর কোরিয়ার রয়েছে, সে সম্পর্কেও কখনো কোনো তথ্য দেয়নি দেশটি। তবে ২০০৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৬টি পরমাণু পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে উত্তর কোরিয়া। আর নিয়মিতই বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ চালিয়ে যাচ্ছে দেশটি।
স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার জেনেভাভিত্তিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ক্যাম্পেইন টু অ্যাবোলিশ নিউক্লিয়ার উইপনস (আইসিএএন) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সামরিক খাতে উত্তর কোরিয়া তাদের গড় জাতীয় আয়ের এক-তৃতীয়াংশ ব্যয় করে আসছে। এই ধারণা অনুযায়ী, মূল সামরিক বাজেটের ৬ শতাংশ ব্যবহার করা হচ্ছে পরমাণু অস্ত্র তৈরির কর্মসূচিতে।
এদিকে স্নায়ুযুদ্ধের পর এই প্রথমবারের মতো বিশ্বজুড়ে পারমাণবিক অস্ত্রাগার বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এসআইপিআরআই) নামের একটি চিন্তক প্রতিষ্ঠান সম্প্রতি জানিয়েছে, বিশ্বে এখন পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের ঝুঁকি কয়েক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে।
অর্থনৈতিক ও খাদ্যসংকটের মধ্য থেকেও পরমাণু অস্ত্র তৈরির কর্মসূচিতে কোটি কোটি ডলার ব্যয় করা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই উত্তর কোরিয়ার সমালোচনা করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। পরমাণু অস্ত্র ও ব্যালিস্টিক মিসাইল তৈরির কাজ চলমান রাখায় মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতায়ও রয়েছে দেশটি। তবে উত্তর কোরিয়ার বক্তব্য, আত্মরক্ষার খাতিরে পরমাণু অস্ত্র তৈরির অধিকার তাদের রয়েছে।