মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলীয় শান রাজ্যে আজ মঙ্গলবার জান্তা সরকারের একটি জেট ফাইটারকে গুলি করে ভূপাতিত করেছে কাচিন ইন্ডিপেনডেন্স আর্মি (কেআইএ)। দুই সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে এটি দ্বিতীয় আকাশযান ভূপাতিত করার ঘটনা।
এ বিষয়ে কাচিন ইন্ডিপেনডেন্স আর্মির কর্মকর্তা কর্নেল নবু মিয়ানমারের ইরাবতি পত্রিকাকে বলেন, ‘নিশ্চিত করে বলতে পারি, একটা জেট ফাইটারকে আমরা ভূপাতিত করেছি।’
ইরাবতির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কাচিন ইন্ডিপেনডেন্স আর্মি মিয়ানমারের প্রাচীনতম সশস্ত্র গোষ্ঠী। এই সংগঠনটি মিয়ানমারের শাসক শ্রেণির বিরুদ্ধে সব সময় প্রতিরোধের অগ্রভাগে ছিল। সর্বশেষ আজ মঙ্গলবার শান রাজ্যের কুটকাই এলাকায় তারা জান্তা সরকারের বিমান ভূপাতিত করেছে।
কুটকাই অঞ্চলের নাম্পাকা নামে একটি গ্রামের কাছাকাছি অবস্থিত জান্তা সরকারের ‘পদাতিক ব্যাটেলিয়ন ১২৩’ এর সদর দপ্তর দখল করার চেষ্টা করছে কাচিন আর্মি। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে এই প্রচেষ্টা শুরু করেছিল কেআইএ। পরে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই তারা নাম্পাকা গ্রাম দখল করে নেয়।
গত ৩ জানুয়ারিও কাচিন রাজ্যের রাজধানী মাইটকিনাতে অবস্থিত সরকারি বিমানঘাঁটি থেকে ওয়াইংমাউ জনপদে থাকা একটি ঘাঁটিতে যাওয়ার সময় জাতিগত বিদ্রোহীরা একটি সামরিক পরিবহন হেলিকপ্টারকে গুলি করে ধ্বংস করে। এ ঘটনায় ওই বিমানে থাকা ৬ সেনা সদস্য নিহত হন।
এর আগে গত বছরের ১১ নভেম্বর দক্ষিণ মিয়ানমারের কারেন্নি (কেয়াহ) রাজ্যে শাসকদের একটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছিল জাতিগত প্রতিরোধ গোষ্ঠী। বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার আগে দুই পাইলটের মধ্যে মেজর খাইং থান্ট মো নামে একজন বেরিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছিলেন। এক সপ্তাহ পরে তাঁকে গ্রেপ্তার করে প্রতিরোধ গোষ্ঠী।
জান্তা সেনারা মাইটকিনাতে দুই অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভকারীকে হত্যা করলে ২০২১ সালের মার্চ থেকে কাচিন এবং উত্তর শান রাজ্যে সামরিক শাসকদের সঙ্গে কাচিন আর্মির সংঘর্ষ তীব্র হতে শুরু করে। সেই সময় থেকেই জান্তা সরকারের গ্রেপ্তার থেকে পালিয়ে বেড়ানো শত শত রাজনীতিবিদ এবং অভ্যুত্থানবিরোধী কর্মীসহ অসংখ্য যুবককে আশ্রয় দিয়ে সামরিক প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করে কাচিন আর্মি।
বর্তমানে কাচিন আর্মি শুধু কাচিন এবং উত্তর শান রাজ্যেই নয়, সাগাইং অঞ্চলেও পিপলস ডিফেন্স ফোর্সের সঙ্গে এক হয়ে মিয়ানমারের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করছে।
এ অবস্থায় জান্তা বাহিনী বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠী ও বেসামরিক নাগরিকদের ওপর বিমান শক্তি ব্যবহার করছে। বেসামরিক নাগরিকদের ওপর বোমা হামলার জন্য তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগও আনা হয়েছে।