ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপে ৫ দশমিক ৬ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে বহু মানুষ হতাহত হয়েছে। ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে বলেছে, সরকারি হিসাবে এই ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা ৬২। আর আঞ্চলিক গভর্নর রিদওয়ান কামিল বলেছেন, নিহতের সংখ্যা ১৬২। তবে কোনো সংখ্যাই স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি বিবিসি।
গতকাল সোমবার ইন্দোনেশিয়ার স্থানীয় সময় দুপুরে পশ্চিম জাভার সিয়াঞ্জুর শহরে এই ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটেছে। এতে হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি ভূমিধসের ঘটনাও ঘটেছে। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপের তথ্য অনুযায়ী এই ভূমিকম্পের গভীরতা ছিল ১০ কিলোমিটার। সিয়াঞ্জুর থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরের রাজধানী শহর জাকার্তায়ও কম্পন অনুভূত হয়েছে।
স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শত শত আহত মানুষকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ধসে পড়া ভবনের নিচে আটকে পড়া মানুষদের বাঁচানোর জন্য উদ্ধারকারীরা রাতভর কাজ করেছেন। যে এলাকায় ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে, সেই এলাকা ঘনবসতিপূর্ণ এবং ভূমিধসের প্রবণতা রয়েছে। অনেক এলাকায় দুর্বলভাবে নির্মিত ঘরগুলো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
স্থানীয় গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় কামিল বলেছেন, ভূমিকম্পে প্রায় ৩৬২ জন আহত হয়েছে। এদের অধিকাংশই ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছিল। বেশির ভাগ মানুষের হাড়গোড় ভেঙে গেছে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।
রিদওয়ান কামিল আরও বলেছেন, এই ভূমিকম্পে ১৩ হাজারেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। অন্যদিকে বিএনপিবি জানিয়েছে, ভূমিকম্পে ২ হাজার ২০০টিরও বেশি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সিয়াঞ্জুর শহরের প্রশাসনের প্রধান হারমান সুহেরম্যান বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, গ্রামের দিকে অনেক মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছে। অ্যাম্বুলেন্সগুলো গ্রাম থেকে শহরের হাসপাতালগুলোতে আসছে।
ইন্দোনেশিয়া একটি ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ। কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল-জাজিরা এক প্রতিবেদনে বলেছে, এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে পশ্চিম সুমাত্রা প্রদেশে ৬ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল। সেই ভূমিকম্পে ২৫ জন নিহত ও ৪৬০ জন আহত হয়েছিল। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে পশ্চিম সুলাওয়েসি প্রদেশেও ৬ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল। সেই ভূমিকম্পে শতাধিক নিহত হয়েছিল এবং ৬ হাজার ৫০০ জন আহত হয়েছিল।