কম্বোডিয়ার ফনম পেনের এক পার্কে ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন জেসিকা ক্যারিয়াড হপকিন্স নামের এক ব্রিটিশ নারী। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে ব্যক্তিগত সম্পর্কের টানাপোড়েন ও একটি তথাকথিত ‘ত্রিভুজ প্রেম’-এর জটিলতার কারণে। ৩৪ বছর বয়সী নিহত জেসিকা যুক্তরাজ্যের হার্টফোর্ডশায়ারের হারপেনডেনের বাসিন্দা।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, গত শুক্রবার রাতে ফনম পেনের চামকারমন জেলার একটি পাবলিক পার্কে জেসিকার মরদেহ পাওয়া যায়। স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, জেসিকার গলায় ও শরীরে ছুরিকাঘাতের একাধিক চিহ্ন ছিল।
ফনম পেনের পুলিশ কমিশনার চুয়োন নরিন জানান, প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে—হত্যার পেছনে হিংসা ও ব্যক্তিগত সম্পর্কজনিত কারণ জড়িত।
এ ঘটনার জেরে পরদিন শনিবার পুলিশ ৩৩ বছর বয়সী এক বিদেশি নারীকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাঁকে কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের নাগরিক কিডিকিলা নগান্ডা গ্লোডি হিসেবে শনাক্ত করা হয়। জানা গেছে, গ্লোডি ও জেসিকা ভাড়া করা একই বাসায় থাকতেন।
পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তা এম ভিচটার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে জানান, ঘটনার দিন দুই নারী মোটরবাইকে করে কোহ পিচে যান। এরপর কাছের একটি পার্কে বসে তাঁদের মধ্যে তীব্র বাগ্বিতণ্ডা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ওই সময় জেসিকাকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেন গ্লোডি এবং ধারালো ছুরি দিয়ে একাধিকবার জেসিকার গলায় আঘাত করেন।
ঘটনার পর গ্লোডি সেখান থেকে পালিয়ে যান। পুলিশ পরে ঘটনাস্থল থেকে হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করেছে। শনিবার বিকেলে দাউন পেন জেলার একটি বিউটি সেলুন থেকে গ্লোডিকে আটক করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, হাতকড়া পরিহিত অবস্থায় পুলিশ তাঁকে বের করে নিয়ে যাচ্ছে।
পুলিশ কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল বুন সাটিয়া জানান, জিজ্ঞাসাবাদে গ্লোডি স্বীকার করেছেন, তিনি ধারণা করেছিলেন তাঁর প্রেমিক জেসিকার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন। এ সন্দেহ থেকে তাঁদের মধ্যে সংঘাত শুরু হয়।
ঘটনাটি স্থানীয় প্রবাসী সমাজকে নাড়া দিয়েছে। কয়েক বছর ধরে কম্বোডিয়ায় বসবাস করছিলেন জেসিকা। তিনি প্রথমে সিয়েম রিপে থাকতেন, পরে রাজধানী ফনম পেনে চলে আসেন। ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নিহত নারীর পরিবারের পাশে তারা রয়েছে এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছে।