জীবনের অন্যতম তিনটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত জন্ম, মৃত্যু এবং বিয়ে। করোনা মহামারির কারণে বিয়েতে অংশ নিতে পারছেন না বর-কনের কাছের আত্মীয়রা। এমনকি সন্তান জন্ম নিলে কেউ এসে তাকে কোলে নিয়ে আদর করতে পারছেন না। আত্মার সম্পর্কের এ দূরত্ব ঘোচাতে অভিনব এক রীতি চালু করেছে জাপান। এর নাম 'রাইস বেবি'। সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
'রাইস বেবি' রীতিতে আত্মীয়ের বাসায় চালের প্যাকেট পাঠানো হয়। সদ্য জন্ম নেওয়া নবজাতকের বাবা-মা তাঁদের কাছের মানুষদের ঠিকানায় এ উপহার পাঠান। অভিনব পদ্ধতিতে বানানো হয় সেই উপহার। নবজাতকের ওজনের সমান চাল থাকে সেই প্যাকেটে। আর সেখানে যুক্ত করা হয় তার চেহারার একটি ছবি। করোনার কারণে আত্মীয়রা তাঁকে কোলে নিয়ে আদর করার যে সুযোগ হারিয়েছেন তা পুষিয়ে দিতেই এ উদ্যোগ।
১৪ বছর আগে এ রীতি প্রথম চালু করেছিলেন কুমি নো জুটো ইউসিমিয়া রাইস শপের মালিক নারুও উনো। করোনা শুরুর পর একদিন তাঁদের কিতাকিউসু শহরের দোকানে একজন ক্রেতা সেই ডিজাইনের প্যাকেট দেখে আগ্রহ প্রকাশ করেন। এরপর থেকে তাঁরা এ ধরনের প্যাকেট বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন। এ তথ্য ছড়িয়ে গেলে জাপানের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাড়তে থাকে অর্ডার। এটি এখন সাধারণ রীতিতে পরিণত হয়েছে।
রীতিকে নতুন রূপ দিতে তাঁরা এর সঙ্গে যুক্ত করেন বিয়েতে অভিনব উপহারের আইডিয়া। ছোট্ট আয়োজনে বাবা মা উপস্থিত থাকুক বা না থাকুক তাঁদের পাঠানো হয় চালের প্যাকেট। দুইটি প্যাকেটে যুক্ত করা হয় বর ও কনের ছোটবেলার ছবি। বাবা-মা তাঁদের জন্ম দেওয়ার কৃতজ্ঞতা স্বরূপ এ উপহার। বর্তমানে এ ধরনের অর্ডার বেশি পাচ্ছে কোম্পানিটি।
প্রতি বছর জাপানের জনসংখ্যা কমছে, কমছে নবজাতকও। এমনকি দেশটিতে বিয়ের প্রতিও আগের চেয়ে মানুষের আগ্রহ কমে গেছে। নতুন এ রীতি সমস্যা সমাধানে কিছুটা হলেও প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।