গর্ভাবস্থা নারীর জন্য খুবই আনন্দের এবং সুন্দর এক সময়। গর্ভধারণের পর হবু মায়ের মানসিক চাপ ও উদ্বেগ বেড়ে যায়। এই চাপ ও উদ্বেগ যদি স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে বেশি বেড়ে যায়, তাহলে বিষন্নতা ও অন্যান্য মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রায় ৩৩ শতাংশ নারী গর্ভাবস্থায় বিষন্নতায় ভুগে থাকেন এবং সঠিক যত্ন বা চিকিৎসা নেওয়া ছাড়া সন্তান জন্ম দেন। আর এর প্রভাব পড়ে সদ্য জন্ম নেওয়া সন্তানের ওপর।
লক্ষণ
গর্ভাবস্থায় বিষন্নতার কিছু লক্ষণ দেখা দেয়। এই লক্ষণগুলো দুই সপ্তাহের বেশি সময় অপরিবর্তনীয় অবস্থায় থাকলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
- খুব বিরক্তবোধ হওয়া এবং অল্পতেই রেগে যাওয়া।
- কোনো কিছুতে মনোযোগ দিতে না পারা।
- গভীর দুঃখবোধ ও হতাশা।
- অকারণেই বেশি অস্থির লাগা।
- কারণ ছাড়া কোনো কিছুতে আনন্দ বা আগ্রহ না পাওয়া।
- অকারণে কান্না পাওয়া।
- খাদ্যাভ্যাসে হঠাৎ পরিবর্তন আসা।
- খুব বেশি ঘুম কিংবা ঘুমহীন অবস্থার মধ্য দিয়ে যাওয়া।
- অপরাধবোধ, গ্লানিবোধ হওয়া। নিজেকে খুব খারাপ ভাবা।
- শিশুর প্রসব ও মা হওয়া নিয়ে অধিক চিন্তা করা।
কারণ
বেশ কিছু কারণে গর্ভাবস্থায় মানসিক চাপ তৈরি হতে পারে। যেমন,
- হরমোনের পরিবর্তন।
- ক্লান্তি ভাব।
- শারীরিক চাপ।
- বিপাকীয় পরিবর্তন।
প্রতিকার
- সব সময় ইতিবাচক চিন্তা করতে হবে এবং ইতিবাচক পরিবেশে থাকতে হবে।
- গর্ভাবস্থায় হালকা যোগব্যায়াম করতে হবে।
- দিনের বেলা পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে এবং রাতে পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে।
- এ সময় পুষ্টিকর খাবার বেশি করে খেতে হবে।
- জীবনসঙ্গী ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ভালো সময় কাটাতে হবে। এতে মন ভালো থাকবে।
- প্রিয় শখ থাকলে তার চর্চা করা যেতে পারে।
- অতিরিক্ত চাপ অনুভব হলে, চাপগুলো ডায়েরিতে লিখে ফেলা যেতে পারে। এতে চাপ অনেকটাই কমে যাবে।
- প্রতিদিন নিয়ম করে হালকা হাঁটাহাঁটি করতে হবে।
- এরপরও চাপ না কমলে একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ বা মনোবিজ্ঞানীর পরামর্শ নিতে হবে।
লেখক: সাইকো সোশ্যাল কাউন্সিলর, ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম।