হোম > স্বাস্থ্য

অলস চোখ

ডা. মো. আরমান বিন আজিজ মজুমদার 

কোনো কারণে একটি চোখে বা দুটি চোখেই যদি এই স্বাভাবিক দৃষ্টিশক্তি ৬/৬-এর কম হয়ে থাকে, তাহলে এই সমস্যাকে বলা হয় ‘লেজি আই’ বা অ্যামব্লায়োপিয়া। অর্থাৎ দুর্বল বা অলস চোখ। অনেক সময় দেখা যায় চোখের ভেতরে কোনো সমস্যা নেই, অথচ দেখতে সমস্যা হওয়ার কারণে যতই চশমার পাওয়ার দেওয়া হোক না কেন, ভিশন বা দৃষ্টি কিছুতেই স্বাভাবিক হচ্ছে না। সেক্ষেত্রে বুঝতে হবে দৃষ্টিশক্তি ৬/৬-এর কম হওয়ার কারণেই দেখতে সমস্যা হচ্ছে। লেজি আই দুই ধরনের হয়—ইউনিলাটেরাল ও বাইলাটেরাল।

বেশিক্ষণ টিভি দেখতে গেলে বা কম্পিউটারে কাজ করতে গেলে সমস্যা হবে।

এক চোখে দৃষ্টিশক্তি কম থাকলে তাকে বলে ইউনিলাটেরাল অ্যামব্লায়োপিয়া। দুই চোখেই দৃষ্টিশক্তি কম থাকলে তাকে বলে বাইলাটেরাল অ্যামব্লায়োপিয়া। লেজি আই বা অ্যামব্লায়োপিয়া হলে তা কখনো কোনো ওষুধ দিয়ে সারানো সম্ভব নয়। এমন ক্ষেত্রে রোগীকে সুস্থ করে তুলতে প্লি-অপটিক এবং অর্থোপটিক চিকিৎসার দরকার হয়। সেই সঙ্গে চালাতে হয় নানা ধরনের ভিশন থেরাপি।

লেজি আই থেকে চোখ ট্যারা হয়ে যেতে পারে। এই ট্যারা দুভাবে হয়। এতে চোখের মণি দুটি নাকের দিকে অর্থাৎ ভেতরের দিকে ঢুকে যেতে পারে। আবার মণি দুটি বাইরের দিকে অর্থাৎ নাক থেকে দূরে সরে যেতে পারে। এসব কারণে দুটি চোখ সমান কাজ করতে পারে না। এর ফলে চোখের মাংসপেশি দুর্বল হয়ে পড়ে। রোগী বেশিক্ষণ টিভি দেখতে পারে না বা কম্পিউটারে কাজ করতে পারে না। দুটি চোখ একসঙ্গে কাজ না করতে পারায় চোখ বা চশমার পাওয়ার বেড়ে যায়। ঠিক সময়ে চিকিৎসা না নিলে অন্ধত্বও দেখা দিতে পারে। লেজি আই সাধারণত বাচ্চাদেরই বেশি হয়। 

উপসর্গ  

  • লেজি আইয়ের উপসর্গ হিসেবে সাধারণ মাথাব্যথা করবে।
  • চোখব্যথা অথবা চোখ জ্বালা করবে।
  • লেখার লাইন অসমান হবে। কখনো কখনো কোনো অক্ষর বা পুরো লাইন চোখ এড়িয়ে যাবে।
  • কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাচ্চার চোখ ট্যারা বা বাঁকা হয়ে যাবে। 

করণীয়

  • প্রথমেই আই স্পেশালিস্ট দেখিয়ে চোখের পাওয়ার পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া উচিত। সেই পাওয়ারের পাশে ভিশন কলামে সঠিক ভিশন লেখা রয়েছে কি-না তা দেখে নেওয়া উচিত।
  • ভিশনের সমস্যা ধরা পড়লে চিকিৎসক কিংবা দক্ষ অপটোমট্রিস্টের পরামর্শ নিন।
  • চোখ দেখানোর সময় অবশ্যই দুটো চোখের আলাদা আলাদাভাবে ভিশন পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে।
  • চশমা নেওয়ার পরও বাচ্চার দেখতে সমস্যা হলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
  • বংশগতভাবে পরিবারের কারও চোখ ট্যারা থাকলে বা চোখে হাই পাওয়ার থাকলে বাচ্চার দেড় বছরের মধ্যে তার চোখ অবশ্যই পরীক্ষা করিয়ে নেবেন।
  • সব লক্ষণ মিলে গেলেও চিকিৎসা করানোর আগে লেজি আই স্পেশালিস্টকে বিশেষ করে পেডিয়াট্রিক অফথালমোলজিস্ট কিংবা গ্র্যাজুয়েট অপটোমেট্রিস্ট দিয়ে চোখ পরীক্ষা করান। 

লেখক: সাবেক ফ্যাকাল্টি ও প্রশিক্ষক, চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

স্বাস্থ্য সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

রেইনবো ডায়েট কী, সুস্বাস্থ্যের জন্য কেন দরকারি

ওজন কমাতে অনুপ্রেরণা ধরে রাখবেন যেভাবে

শীতে থাইরয়েড রোগীরা যা করবেন

সবজির পুষ্টিগুণ পাওয়ার সঠিক উপায়

ঝাঁকির কারণে শিশুর মস্তিষ্কে আঘাত

কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে

প্রতিস্থাপনে শূকরের অঙ্গ একদিন মানব অঙ্গের চেয়ে উন্নত হতে পারে: বিশেষজ্ঞ

কিডনি রোগীর বন্ধু কামরুল

কবিরাজিসহ প্রথাগত চিকিৎসার কার্যকারিতা খতিয়ে দেখছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

শীতে খিচুড়ি কেন খাবেন