হোম > পরিবেশ

চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে, জনজীবনে স্থবিরতা

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি

চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। গত কয়েক দিন ধরে এ অঞ্চলের তাপমাত্রা বিরাজ করছে ১০ ডিগ্রির নিচে। এর সঙ্গে রয়েছে উত্তরের হিমেল হাওয়া। ফলে স্থবিরতা নেমে এসেছে জনজীবনে। কেউ কেউ আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করার চেষ্টা করছে।

আজ শুক্রবার এ জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল বৃহস্পতিবার এ জেলায় তাপমাত্রা ছিল ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস বলছে, তাপমাত্রা আরও কমতে পারে।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সাধারণত ১০ ডিগ্রির নিচ থেকে ৮ ডিগ্রি পর্যন্ত তাপমাত্রা থাকলে বলা হয় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, ৮ ডিগ্রি থেকে ৬ পর্যন্ত থাকলে ধরা হয় মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ আর ৬ ডিগ্রি থেকে ৪ পর্যন্ত তাপমাত্রা থাকলে ধরা হয় তীব্র শৈত্যপ্রবাহ। চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা কয়েকদিন ধরে ১০ থেকে ৮ ডিগ্রির মধ্যে থাকছে। সেই হিসেবে চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে বইছে মৃদু শৈত্য প্রবাহ।

বেলা বাড়লেও সূর্যের দেখা নেই বললেই চলে। নেই রোদের উত্তাপ কিংবা প্রখরতা। উত্তরীয় হিমেল হাওয়ার কাছে কাবু হচ্ছে জনজীবন। ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। তীব্র শীতে নিম্ন আয়ের মানুষেরা পড়েছে চরম বিপাকে। টান পড়ছে আয় রোজগারে। তীব্র শীতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে আছেন খেটে খাওয়া মানুষেরা। এ ছাড়া শৈত্যপ্রবাহের কারণে শীতকালীন ফসলের কিছুটা উপকার হলেও বোরো আবাদে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি বিপদে আছে বৃদ্ধ আর শিশুরা। শীত নিবারণের জন্য তারা ছুটছে কম দামের কাপড়ের দোকানে। গত কদিন ধরে কমদামের কাপড়ের দোকানগুলো উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে শীত নিবারণে প্রশাসন ও সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

চাকরিজীবী কাসেব রহমান বলেন, ‘সকাল ৮টার মধ্যে অফিসের উদ্দেশে বের হতে হয়। আজ প্রচণ্ড শীতের কারণে রিকশা না নিয়ে হেঁটে যাচ্ছি। যাতে শরীরটা একটু গরম থাকে। কিন্তু উত্তরের হিমেল হাওয়ায় জবুথবু অবস্থা। খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষতো নাজেহাল হয়ে যাচ্ছে।’

নাজমুল ইসলাম নামে একজন হোটেল কর্মচারী বলেন, ‘সকালে নাশতার জন্য হোটেলে চাপ থাকে। যে কারণে ফজরের আজানের পর থেকে কাজের চাপ। ওই সময় থেকে পানি ব্যবহার করছি। পানি ধরলে মনে হচ্ছে হাত অবশ হয়ে যাচ্ছে। আঙুলগুলো নাড়ানো যাচ্ছে না। তারপরও কাজ করছি। ঠান্ডার ভয় করলে মালিক মজুরি দেবে না।’

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের পর্যবেক্ষক রকিবুল হাসান জানান, চুয়াডাঙ্গায় কুয়াশাচ্ছন্ন পরিবেশ বিরাজ করছে। যার ফলে তাপমাত্রা কিছুটা বেড়েছে। তবে বাতাসের আর্দ্রতা অনেক বেশি। ৯৭ ভাগ আর্দ্রতায় শীত অনুভূত হচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গায় শীত বেশি। সরকারিভাবে বরাদ্দ পাওয়া কম্বল জেলা প্রশাসনসহ উপজেলা প্রশাসন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে শীতার্তদের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিভাস চন্দ্র বলেন, ‘শৈত্যপ্রবাহে শীতকালীন সব ফসলেরই উপকার হচ্ছে। তবে কোল্ড ইনজুরিতে আক্রান্ত হচ্ছে বোরোর বীজতলা। এ সময় কৃষকদের বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। চারা লালচে বর্ণ ধারণ করলে পটাশ ও ইউরিয়া স্প্রে করতে হবে। তাতে কাজ না হলে জিপশাম দিতে হবে। বেশি সমস্যা দেখা দিলে ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হবে। আমরা ফসলের যত্ন নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি। চুয়াডাঙ্গায় তেমন ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। বীজতলার ক্ষেত্রে আমরা পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখার পরামর্শ দিচ্ছি।’

জেঁকে বসেছে শীত, বছরের শেষ দিন পর্যন্ত কমতে পারে তাপমাত্রা

ফের বায়ুদূষণে বিপর্যস্ত দিল্লি, ঢাকার বাতাস খুব অস্বাস্থ্যকর

তাপমাত্রা কমবে কি না জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর

তীব্র শীতে বিপর্যস্ত দেশ কষ্টে খেটে খাওয়া মানুষ

শীতে কাঁপছে সারা দেশ ভোগাচ্ছে ঘন কুয়াশা

শীতের প্রকোপ বাড়ছে: ৭ জেলায় ঘন কুয়াশা ও শৈত্যপ্রবাহ, থাকবে কত দিন

বায়ুদূষণে শীর্ষে ঢাকা, সতর্ক থাকতে পারেন যেভাবে

মেঘলা ঢাকার আকাশ, কুয়াশার দেখা মিলতে পারে

শীতে জবুথবু, কুয়াশায় দুর্ঘটনা

বায়ুদূষণ বেড়েছে ঢাকায়, বিপর্যস্ত কায়রো