হোম > পরিবেশ

বন্য প্রাণী চোরাচালান ঠেকাবে ধেড়ে ইঁদুর

গত ২৫ বছর ধরে ভূমিমাইন এবং যক্ষ্মার জীবাণু শনাক্ত করে আসছে বিশালাকায় ইঁদুরেরা। ছবি: অ্যাপোপো

ইঁদুরকে কেউ পছন্দ করে না। কীভাবে করবে? এটা-ওটা কেটে কম ক্ষতি তো এরা করে না আমাদের। তবে আফ্রিকার জায়ান্ট পাউচড র‍্যাট নামের দেড়-দুই কেজির বিশালাকায় সেই বাদামি ইঁদুরের কথা আলাদা। মানুষের নানা ধরনের উপকার করে রীতিমতো ‘বীর ইঁদুর’ নামে পরিচিতি পেয়ে গেছে এরা।

এখন, তাদের পছন্দ করার আরও কারণ খুঁজে পাবেন। এক গবেষণা থেকে জানা গেছে, এই ইঁদুরেরা অবৈধ বন্য প্রাণী বাণিজ্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। এ জন্য ধন্যবাদ পেতে পারে এদের তীব্র ঘ্রাণশক্তি। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত চালানো এ গবেষণা ফলাফল নিয়ে গবেষণাপত্রটি প্রকাশ পায় গত মাস অর্থাৎ অক্টোবরে।

আফ্রিকার দক্ষিণের দেশগুলোর সাভানা বা ঘাসবহুল জমিতে বাস এই বিশাল ইঁদুরদের। গত ২৫ বছরের বেশি সময় ধরে বিপজ্জনক ভূমি মাইন এবং যক্ষ্মা রোগের জীবাণু শনাক্ত করতে সাহায্য করছে এই ইঁদুরেরা।

বন্যপ্রাণী চোরাচালান বন্ধে সাহায্য করতে পারে জায়ান্ট রেটরা। ছবি: অ্যাপোপো

অলাভজনক সংস্থা অ্যাপোপোর বিজ্ঞানীদের গবেষণায় দেখা গেছে, দৈত্যাকার এই ইঁদুররা হাতির দাঁত, গন্ডারের শিং, বনরুই ও এ জাতীয় পিপিলীকাভুকের চামড়া এবং আফ্রিকান শক্ত কাঠের নমুনা সফলভাবে শনাক্ত করতে পারছে। এমনকি যখন এই মূল্যবান বন্য প্রাণীর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত পণ্যগুলো অন্য জিনিসপত্রের সঙ্গে মিশ্রিত করা হয় তখনো।

এসব তথ্য জানা যায় বিবিসি ওয়াইল্ডলাইফ ম্যাগাজিনের এক প্রতিবেদন থেকে।

আইনপ্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের বহু কোটি ডলারের অবৈধ বন্য প্রাণী বাণিজ্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তার জন্য ইতিমধ্যেই উন্নত স্ক্যানার এবং শনাক্তকারী কুকুর রয়েছে। তাহলে ইঁদুরের এই বাহিনীর প্রয়োজন কেন?

এ ধরনের একটি ইঁদুরের প্রশিক্ষণে লাগে ৮০০ ডলার। ছবি: অ্যাপোপো

ইঁদুরের কার্যকারিতা প্রদর্শনকারী গবেষণাপত্রটির সহলেখক এবং বিজ্ঞানী ইসাবেলে জট জানিয়েছেন, শনাক্তকরণের স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার বাইরেও কয়েকটি সুবিধা এনে দিতে পারে জায়ান্ট রেটদের এ ব্যবহার।

প্রথম কথা, এ ধরনের শনাক্তকারী একটি ইঁদুরের প্রশিক্ষণে ব্যয় হয় আট হাজার ডলার, যেখানে কুকুরের বেলায় এই ব্যয় ৩০ হাজার ডলার পর্যন্ত হতে পারে। এদিকে বিমানবন্দরের স্ক্যানারের দাম ৩০ হাজার থেকে ১২ লাখ ডলার।

‘তাদের হালকা ওজনও অবৈধ পণ্য শনাক্তকরণে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়,’ জট বলেন, ‘কারণ আমরা ইঁদুরগুলোকে শিপিং কনটেইনারগুলোর বায়ু চলাচল ব্যবস্থার মতো উঁচু স্থানে তুলতে পারি।’ অন্য কথায় সেখান তারা যেতে পারে, যেখানে কুকুর পারে না।

এই ইঁদুররা হাতির দাঁত, গন্ডারের শিং, বনরুই ও এ জাতীয় পিপিলীকাভূকের চামড়া এবং আফ্রিকান শক্ত কাঠের নমুনা সফলভাবে শনাক্ত করেছে। ছবি: অ্যাপোপো

অবশেষে, কুকুরগুলোকে প্রায়ই একই ব্যক্তির অধীনে করতে হয়, ইঁদুরদের এ সমস্যা নেই।

ইতিমধ্যে আফ্রিকার দেশ তানজানিয়ার দার এস সালাম বন্দরে এর সফল ব্যবহারও করেছেন গবেষকেরা। এখন বিশ্বের অন্যান্য বিমানবন্দর এবং বন্দরে ইঁদুরদের ছড়িয়ে দেওয়া হবে কি না—এটাই প্রশ্ন।

অ্যাপোপো ইতিমধ্যে তানজানিয়ার বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে। খুব সম্ভব দেশটি ভবিষ্যতে এই ইঁদুরদের নিয়োগ করবে। ডিউক ইউনিভার্সিটির মনোরোগবিদ্যা এবং আচরণগত বিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক এবং জটের সহলেখক কেট ওয়েব বলেন, ‘আমরা সিঙ্গাপুর ও ফ্রান্সের বন্দরগুলো থেকেও সাড়া পেয়েছি।’

অর্থাৎ ‘বীর ইঁদুর’ তাদের প্রশংসার জন্য আর যথেষ্ট হচ্ছে না, এখন থেকে এদের ‘সুপার ইঁদুর’ হিসেবেই পরিচিত করিয়ে দেওয়া উচিত, কী বলেন?

জেঁকে বসেছে শীত, বছরের শেষ দিন পর্যন্ত কমতে পারে তাপমাত্রা

ফের বায়ুদূষণে বিপর্যস্ত দিল্লি, ঢাকার বাতাস খুব অস্বাস্থ্যকর

তাপমাত্রা কমবে কি না জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর

তীব্র শীতে বিপর্যস্ত দেশ কষ্টে খেটে খাওয়া মানুষ

শীতে কাঁপছে সারা দেশ ভোগাচ্ছে ঘন কুয়াশা

শীতের প্রকোপ বাড়ছে: ৭ জেলায় ঘন কুয়াশা ও শৈত্যপ্রবাহ, থাকবে কত দিন

বায়ুদূষণে শীর্ষে ঢাকা, সতর্ক থাকতে পারেন যেভাবে

মেঘলা ঢাকার আকাশ, কুয়াশার দেখা মিলতে পারে

শীতে জবুথবু, কুয়াশায় দুর্ঘটনা

বায়ুদূষণ বেড়েছে ঢাকায়, বিপর্যস্ত কায়রো