হোম > পরিবেশ

স্পেনে এখনো মুসলিম আমলের সেচ প্রণালি

ডয়চে ভেলে

জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যা মোকাবিলা করতে হাজার বছর আগের সেচ প্রণালি কাজে লাগতে পারে বলে মনে করেন প্রত্নতাত্ত্বিকেরা। তবে কৃষিপ্রযুক্তিবিদেরা আধুনিক ড্রিপ সেচব্যবস্থার পক্ষে সওয়াল করছেন।

যেখানেই তাঁকে প্রয়োজন, পাকো পেরেস সেখানেই হাজির হন। যদিও বয়স ৮৫ বছর পেরিয়ে গেছে। গ্রামের প্রাচীন সেচব্যবস্থা সম্পর্কে অন্য কারও এত ভালো ধারণা নেই। তিনি বলেন, ‘খালের মধ্যে পানি বইতে দেখা আমাকে সব সময়ে সবচেয়ে আনন্দ দিয়ে এসেছে। এভাবে আমরা খেতে চাষ করেছি। এই খালের ওপর আমরা নির্ভর করে আসছি।'

স্পেনের দক্ষিণ প্রান্তে আলপুখারা পর্বতে অষ্টম শতাব্দীতে মুর মুসলিমরা শাখা-প্রশাখাযুক্ত সেচব্যবস্থা চালু করেছিল। আজও সেই খাল ব্যবহার করা হচ্ছে। পাকো ও তাঁর ছেলে আন্তোনিও তাঁদের ক্যাপসিকামের খেতে এভাবে পানি দিচ্ছেন। মুরদের ঐতিহ্যের সুফল এখনো ভোগ করছেন তাঁরা। আন্তোনিও মনে করেন, ‘এই প্রণালির মাধ্যমে তারা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উত্তরাধিকার রেখে গেছে। রোমানরাও খাল কেটেছে বটে, কিন্তু আরবরা সেগুলোকে নিখুঁত করে তুলেছিল।'

তবে অনেক পরিখা কয়েক শতাব্দী ধরে ব্যবহার করা হয়নি। তাই খোসে মারিয়া মার্তিন সিবান্তসের সঙ্গে তারা সেগুলো পুনরুদ্ধারের কাজ করছেন। প্রত্নতাত্ত্বিক হিসেবে তাঁর কাছে সেই প্রণালির গুরুত্ব চাষবাসের তুলনায় অনেক বেশি। খোসে মনে করেন, ‘এখানকার মতো প্রাচীন খালগুলো পরিবেশের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেগুলো প্রাণ সঞ্চার করে। পানির একটা অংশ মাটির নিচে চলে যায় এবং সেখানে আবার দৃশ্যমান হয়ে ওঠে। এভাবে এই প্রণালি আরও বড় জীববৈচিত্র্য সৃষ্টির কাজে অবদান রাখছে।'

ইকো ফ্রন্টলাইনস
শাখা-প্রশাখার কারণে খালের পানি বেশি দ্রুত বয়ে যেতে পারে না। পানির পরিমাণ ধীরে ধীরে কমে চলায় তাতে সুবিধাই হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে পাকোর মনে আর কোনো সংশয় নেই। পাকো পেরেস বলেন, ‘আমার গ্রামে বহু বছর ধরে তুষারপাত ঘটেনি। আগে আমাদের বাড়ির সমতল ছাদ থেকে বরফ সরিয়ে রাস্তার ওপর ফেলতে হতো। তখন ১৫-২০ দিন বা এক মাস গ্রাম বরফে ঢাকা থাকত। এখন আর সেটা হয় না।’

জলাধারগুলোও পানির প্রকট অভাবের সাক্ষ্য বহন করে৷ অথচ স্পেনে আম ও আভোকাডোর মতো আরও বেশি করে  গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ফলমূল চাষ হচ্ছে, যে কাজে অনেক পানির প্রয়োজন। চাষবাসের কাজে আরও বেশি করে স্বয়ংক্রিয় প্রণালি ব্যবহার করা হচ্ছে, যার মাধ্যমে প্রত্যেকটি গাছের গোড়ায় পানির বিন্দু দেওয়া হয়।

কৃষিপ্রযুক্তিবিদ হিসেবে এদুয়ার্দো মালদোনাদোর মতে, প্রাচীন খালগুলোর আর কোনো প্রয়োজন নেই। কারণ, সরবরাহের সময় পানি চুইয়ে পড়ে বাষ্পীভূত হয়ে যায়।

এদুয়ার্দোর মতে, ‘ড্রিপ সেচই হলো ভবিষ্যতের পথ। এই প্রণালি অনেক বেশি কার্যকর এবং সব ধরনের প্লান্টেশনে কাজে লাগানো সম্ভব। এর মাধ্যমে আমরা ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ পানি সাশ্রয় করতে পারি।’

অন্যদিকে প্রত্নতাত্ত্বিকদের কাছে আজকের যুগে মূল আমলের পরিখাগুলোর প্রাসঙ্গিকতা বরং আরও বেড়ে গেছে। সে কারণে তাঁরা আলপুখারার গ্রামগুলোর বয়স্ক মানুষদের কাছে সে বিষয়ে আরও জানার চেষ্টা করছেন। খোসে মারিয়া মার্তিন সিবান্তস বলেন, ‘এই জ্ঞান সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে যাচ্ছে। আমরা যদি বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে কার্যকারিতা বিচার করি, বিশেষ করে ইকোলজিক্যাল ব্যবহারের কথা ভাবি, তখন বুঝতে পারব যে বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে এই প্রণালিগুলো অনেক বেশি কার্যকর।’

তবে ঐতিহ্যবাহী চাষিদের মধ্যে পুরোনো এই খাল ব্যবহারের প্রবণতা কমে চলেছে। সে কারণে হাজার বছরের পুরোনো মুর আমলের সেচব্যবস্থা চালু রাখা কঠিন হয়ে পড়ছে ৷
নর্মান স্ট্রিগেল/এসবি

শীতে কাঁপছে সারা দেশ ভোগাচ্ছে ঘন কুয়াশা

শীতের প্রকোপ বাড়ছে: ৭ জেলায় ঘন কুয়াশা ও শৈত্যপ্রবাহ, থাকবে কত দিন

বায়ুদূষণে শীর্ষে ঢাকা, সতর্ক থাকতে পারেন যেভাবে

মেঘলা ঢাকার আকাশ, কুয়াশার দেখা মিলতে পারে

শীতে জবুথবু, কুয়াশায় দুর্ঘটনা

বায়ুদূষণ বেড়েছে ঢাকায়, বিপর্যস্ত কায়রো

ঢাকার তাপমাত্রা কমবে

বায়ু দূষণে তৃতীয় স্থানে ঢাকা, শীর্ষে দিল্লি

ঢাকায় সকালে তাপমাত্রা আবারও ১৬ ডিগ্রির ঘরে

সকালে সূর্যের দেখা নেই, কুয়াশাচ্ছন্ন ঢাকার আকাশ