ঢাকা: টানা ৫৪ দিন শুটিংয়ে ছিলেন না মেহজাবীন চৌধুরী। গত ঈদের বেশ আগে থেকে, করোনা পরিস্থিতির কারনে, সব শুটিং প্যাকআপ করে নিজেকে ঘরবন্দি করেছিলেন। মাঝে ঈদুল ফিতরের মতো বড় উৎসব চলে গেলো, কত ভালো ভালো কাজ এসেছিলো- অথচ করা হলো না!
৫৪ দিন পর কাজে ফিরেছিলেন গত ২২ মে। তারপর থেকে প্রায় দিনই মেহজাবিনের নতুন নাটকের খবর আসছিল। একদিকে কোরবানির ঈদের নাটকের শুটিং যতটা জমে উঠছিল, অন্যদিকে পাল্লা দিয়ে তত বাড়ছিল করোনার প্রকোপ। ফলাফল আবার লকডাউন। জুলাইয়ের শুরুতেই সবকিছু ঘরবন্দি।
মেহজাবীন আবারও নিজেকে গুটিয়ে নিলেন। স্বাস্থ্যবিধি পুরোপুরি মেনে ঘরেই থাকবেন। লকডাউনের এ কদিন শুটিং করবেন না তিনি। লকডাউনের একদিন আগে, বুধবার দুপুরে মেহজাবীন এমন ঘোষণা দিয়েছেন।
কোনো অভিনয়শিল্পী কিংবা নির্মাতার পক্ষ থেকেও ব্যক্তিগতভাবে শুটিং বন্ধের ঘোষণা আসেনি। এক্ষেত্রে এগিয়ে থাকলেন মেহজাবীন চৌধুরী। তিনি কঠোর লকডাউনের সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়ে, সবাইকে ঘরে থাকার পরামর্শ দিয়ে, শুটিং করবেন না বলে জানিয়ে দিলেন।
এ মাসের শুরুর দিকেও মেহজাবীনের আরেকটি ঘোষণা বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছিল। প্রতিদিন ১৩ ঘণ্টার বেশি কাজ করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন। নাটকের শুটিং এতো কম সময়ের মধ্যে হয় যে, গোটা টিমকে কখনও কখনও ১৮-২০ ঘণ্টা পর্যন্তও কাজ করতে হয়। মেহজাবীনের দাবি ছিল, মাসের পর মাস এতো টাইট শিডিউলে শুধু শুটিং-ই করতে থাকলে, নিজেকে প্রস্তুত করবেন কখন! অভিনেত্রী হিসেবে তারও তো প্রিপারেশনের ব্যাপার থাকে। নিজেকে দেওয়ার মতো সময় তো তার দরকার হয়, বাকি সবার মতো। সে সময়টা কই!
তাই সকাল ১০টা থেকে রাত ১১টা এই ১৩ ঘণ্টার বেশি- এক মিনিটও শুটিং নয়- এই ছিলো মেহজাবীন চৌধুরীর সিদ্ধান্ত।
তবে নাটকপাড়াকেন্দ্রিক সংগঠনগুলো জোর চেষ্টা করছে, শুটিং চালিয়ে যাওয়ার। লকডাউন শুরুর আগের রাতে অভিনয়শিল্পী সংঘের (অভিনয়শিল্পীদের সংগঠন) সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবীব নাসিম গণমাধ্যমে জানিয়েছেন, এই লকডাউনে শিল্পীরা অভিনয় করবেন কিনা, এটা শিল্পীদের নিজেদের সিদ্ধান্ত। তাঁরা আসলে দোলাচলে আছেন। কাউকে শুটিং বন্ধ করতে বলছেন না। আবার চালিয়ে যেতেও বলছেন না।
তবে লকডাউনে শুটিং চালিয়ে যেতে চান নির্মাতারা। ঈদের অনেক চ্যানেলের নাটকে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন নির্মাতারা। ঠিক সময়ে নাটক শুটিং করে চ্যানেলে জমা দিতে না পারলে নির্মাতারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এ বিষয়টি মাথায় রেখে ডিরেক্টরস গিল্ডের (পরিচালকদের সংগঠন) সভাপতি সালাহউদ্দিন লাভলু জানিয়েছেন, মৌখিক কোনো অনুমতি পেলেও শুটিং চালিয়ে যেতে চান তাঁরা। কারন হিসেবে তিনি বলেছেন, সামনে ঈদ। এ সময় কাজ বন্ধ করে দিলে কলাকুশলীরা বিপদগ্রস্ত হবে।
অন্যদিকে লকডাউনে সব ধরনের শুটিং বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত এসেছে চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির পক্ষ থেকে। কেউ শুটিং করলে তার বিরুদ্ধে সমিতি ব্যবস্থা নেবে বলেও জানিয়েছেন সোহানুর রহমান সোহান, তিনি চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি।