দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমা এ বছর আরও শক্তিশালী হয়ে ধরা দিয়েছে। সাধারণত দক্ষিণি সিনেমা মানেই ধরা হয় বড় স্কেলের নির্মাণ, লার্জার দ্যান লাইফ গল্প, তারকার জয়গান। কিন্তু এসবের পাশাপাশি এবার দক্ষিণে গল্পের বৈচিত্র্য লক্ষ করা গেছে। অনেক ছোট বাজেটের সিনেমা আলোচনা তৈরি করেছে, বক্স অফিসে পেয়েছে ব্যাপক সাফল্য। সেসব সিনেমা শুধু প্যান-ইন্ডিয়া স্তরে নয়, আন্তর্জাতিক বাজারেও যথেষ্ট মনোযোগ কেড়েছে।
পৌরাণিক গল্পের সঙ্গে আধুনিক জীবনযাপন মিলিয়ে একাধিক সিনেমা তৈরি হয়েছে, কম বাজেটের সিনেমা বক্স অফিস কাঁপিয়েছে, অনেক সুপারস্টারকেও হোঁচট খেতে হয়েছে, উঠে এসেছে নতুন মুখ—সব মিলিয়ে দক্ষিণি ইন্ডাস্ট্রির ভিন্ন পথের যাত্রা শুরু হয়েছে এ বছর। লোককাহিনি থেকে কোর্টরুম ড্রামা, কলেজের প্রেম থেকে অপরাধ চক্র, ভক্তিমূলক মহাকাব্য থেকে ছোট ছোট গ্রামীণ প্রেমের গল্প—২০২৫ সালে সব ঘরানার সিনেমা উপহার দিয়েছে দক্ষিণি ইন্ডাস্ট্রি।
দক্ষিণে এ বছর সর্বোচ্চ ব্যবসা করেছে কন্নড় সিনেমা ‘কানতারা: চ্যাপ্টার ওয়ান’। ঋষভ শেঠি পরিচালিত সিনেমাটি তৈরি হয়েছিল ১৩০ কোটি রুপিতে, বিশ্বব্যাপী আয় করেছে সাড়ে ৮০০ কোটির বেশি। ব্যবসার অঙ্কে পৌরাণিক গল্পের এ সিনেমার পর দ্বিতীয় অবস্থানে আছে রজনীকান্তের ‘কুলি’। সাড়ে ৬০০ কোটির বেশি আয় করেছে লোকেশ কানাগরাজ পরিচালিত সিনেমাটি। এর পর সাফল্যের অঙ্কে যেসব সিনেমার নাম আসবে, সেগুলো সবই কম বাজেটে তৈরি।
মালয়ালম ইন্ডাস্ট্রিতে সবচেয়ে বড় চমকটা দিয়েছে দুলকার সালমান প্রযোজিত ‘লোকাহ চ্যাপ্টার ওয়ান: চন্দ্রা’। মাত্র ৪০ কোটিতে নির্মিত লোককাহিনিনির্ভর সিনেমা আয় করেছে ৩০০ কোটির বেশি। মালয়ালম ইন্ডাস্ট্রিতে এটিই প্রথম এত বড় সাফল্য পেল। কন্নড় ইন্ডাস্ট্রির ‘সু ফ্রম সো’র কথাও বলতে হবে। স্থানীয় লোককাহিনি অবলম্বনে মাত্র সাড়ে ৫ কোটিতে তৈরি সিনেমাটি এতটাই জনপ্রিয়তা পেয়েছে যে, বিশ্বজুড়ে আয় করেছে ১৫০ কোটির বেশি।
এ ছাড়া মোহনলাল অভিনীত মালয়ালম ইন্ডাস্ট্রির ‘থুডারাম’, ‘রন্থ’, ‘পোনমান’, তামিল ভাষার ‘ড্রাগন’, ‘ট্যুরিস্ট ফ্যামিলি’, তেলুগু ভাষার ‘কোর্ট: স্টেট ভার্সেস নোবডি’ সিনেমাগুলোর সাফল্য প্রমাণ করেছে, গল্প ভালো হলে ছোট বাজেটের সিনেমাও বড় সাফল্য পেতে পারে।