১৯৯২ সালে দেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়। তিন দশক ধরে এসব বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চশিক্ষায় অনন্য অবদান রাখছে। এ অগ্রগতি নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আজকের পত্রিকার সহ সম্পাদক ইলিয়াস শান্ত।
আপনাদের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় খাতে কী ধরনের পরিবর্তন এসেছে? বিশেষ করে শিক্ষার মান, গবেষণা ও প্রশাসনিক স্বচ্ছতার ক্ষেত্রে।
উচ্চশিক্ষা বিস্তারের ক্ষেত্রে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দেশে দারুণ এক পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। আগে আমাদের অনেক ছেলেমেয়ে দেশের বাইরে চলে যেত। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উচ্চশিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিতের ফলে শিক্ষার্থীদের দেশের বাইরে যাওয়ার হার কমে আসতে শুরু করেছে। শুধু এটিই নয়, অন্য যেকোনো বিচারে দেশের উচ্চশিক্ষা খাতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। প্রথম সারির প্রায় ৩০টি বিশ্ববিদ্যালয় এমন পর্যায়ে চলে গেছে যে, তারা প্রতিবছর আন্তর্জাতিক র্যাঙ্কিংয়ে জায়গা করে নিচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ধারাবাহিক কার্যক্রমকে আমরা এগিয়ে নিচ্ছি। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষা ও গবেষণার কিছু কিছু ক্ষেত্র আমরা ঢেলে সাজাচ্ছি। আমাদের দায়িত্বগ্রহণের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শতভাগ প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিয়ে কাজ করেছি। ২০১০ সালের বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী, বাজেটের অর্থ ব্যয় নিয়ে ইউজিসির সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর যোগাযোগে একটা গ্যাপ ছিল। আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর সেটাও কমিয়ে আনার চেষ্টা করছি।
ইউজিসির নির্দেশনা বাস্তবায়নে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পক্ষ থেকে কেমন প্রতিক্রিয়া পেয়ে থাকেন?
আমরা প্রায় প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এ ব্যাপারে সর্বোচ্চ সহযোগিতা পাচ্ছি। আইন অনুযায়ী নির্দেশনা মানার ক্ষেত্রে কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে এখন পর্যন্ত অসহযোগিতা পাইনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের থেকেও সহযোগিতা পাচ্ছি। গতকালও একজন উপাচার্য ফোনে জানালেন, আমাদের ভিজিট রিপোর্টের রিকমেন্ডেশন তাদের জন্য খুব কাজে দিয়েছে। তারা সেটা অনুসরণ করে ইতিবাচক ফল পাচ্ছেন। সম্প্রতি অন্য একটি বিশ্ববিদ্যালয়কে আমাদের ভিজিট রিপোর্টে ১৩টি গাইডলাইন পয়েন্ট দিয়েছি। গত ৩ মাসের মধ্যে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি ৮টি ফুলফিল করেছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সবগুলো পূর্ণ করার বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এটা একটা ভালো উদাহরণ। একইভাবে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্ষেত্রেও আমরা প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছি।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সংশোধিত আইনটি কেমন হতে যাচ্ছে?
আইন আসলে কোনো স্পেসিফিক ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর স্বার্থে নয়, এটা দেশের জাতীয় স্বার্থ বিবেচনায় করা হচ্ছে। যার মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের মাঝে শৃঙ্খলা ও দেশপ্রেম নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। ২০১০ সালের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইনের সীমাবদ্ধতা দূর করার চেষ্টা করা হচ্ছে। যেমন: কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান ছিল ‘ফ্রাইডে ইউনিভার্সিটি’। এখন অবশ্য এমন পরিবেশ নেই। এই যে সমস্যাগুলো, এগুলোকে কোনো না কোনো ফর্মে একটি প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। আর এটা যদি নিশ্চিত করা যায়, তাহলে আমরা যে কোয়ালিটি এডুকেশনের কথা বলছি, সেটা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। আইন সংশোধনের ক্ষেত্রে আমরা বিশেষজ্ঞ, শিক্ষক-গবেষক, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ও সিভিল সোসাইটির ভাবনাকে গুরুত্ব দিচ্ছি। আমরা এমন একটা অ্যাক্ট তৈরি করতে যাচ্ছি, যেটা কারো জন্য কোনো নেতিবাচক ফল বয়ে আনবে না। বরং আমাদের যে সীমাবদ্ধতাগুলো আছে, নতুন আইনে সেগুলোও কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬-৪ মাসের সেমিস্টার শেষ করা নিয়ে একটা আলোচনা ছিল। সেটার সমাধান হয়েছে কি?
২০২৪ সালে দায়িত্বগ্রহণের পর আমরা দেখেছি, সেমিস্টারের সংখ্যা নিয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে একটা অস্থিরতা ছিল। এ ক্ষেত্রে ইউজিসি নমনীয়তার নীতি অনুসরণ করেছে। একটা বিশ্ববিদ্যালয় বছরে দুটি সেমিস্টার রান করবে নাকি ৩ টি—এটা সে বিশ্ববিদ্যালয়ের সক্ষমতার ওপর নির্ভর করবে। বিদেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে দুটি সেমিস্টারের খুব বেশি প্রচলন দেখা যায়। এ ক্ষেত্রে ইউজিসি কারও ওপর কোনো কিছু চাপিয়ে দেবে না। আমরা তাদেরকে সহযোগিতা করতে চাই। আমরা একে অপরকে সহযোগিতার মাধ্যমে এগিয়ে যেতে চাই।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আন্তর্জাতিক র্যাঙ্কিংয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অগ্রগতি নজরকাড়ার মতো। এই অগ্রগতিকে আরও ত্বরান্বিত করতে ইউজিসি কী ধরনের উদ্যোগ নেবে?
আমরা এখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য গভর্নেন্স ফ্রেমওয়ার্কটা তৈরি করে দিতে চাই। এখনো আমাদের যেসব সীমাবদ্ধতা গুণগত শিক্ষার অন্তরায়—যেমন ধরুন, একটা বিভাগে পর্যাপ্ত শিক্ষক নেই বা সিনিয়র শিক্ষক নেই বা গবেষণা নেই বা ল্যাব নেই অথবা দেখা যায়, একজন শিক্ষক একাধারে একাধিক পদে দায়িত্ব পালন করছেন—এগুলো আমরা সমাধানের চেষ্টা করছি। র্যাঙ্কিংয়ে আসতে একটি বিশ্ববিদ্যালয়কে নির্দিষ্ট কিছু ক্রাইটেরিয়া ফিলআপ করতে হয়। যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন ঘাটতি দেখা যায়, আমরা তাদের ঘাটতি পূরণে গুরুত্বারোপ করে থাকি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আমাদের গাইডলাইন ফলো করে র্যাঙ্কিংয়ে ধারাবাহিক সাফল্য পাচ্ছে। একই সঙ্গে যেসব প্রতিষ্ঠান র্যাঙ্কিং প্রকাশ করছে, তাদের সঙ্গেও আমরা যোগাযোগটা বাড়াচ্ছি। র্যাঙ্কিংয়ে আরও ভালো করতে তাদের যেসব নির্দেশনা, সেগুলোও আমরা সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে দেওয়ার চেষ্টা করছি।
বিভাগগুলোতে শিক্ষকদের বৈচিত্র্য কেমন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কীভাবে শিক্ষক নিয়োগ হয়ে থাকে?
২০১০ সালের যে আইন রয়েছে, সেই আইনে উল্লেখিত শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালার আওতায় এটি হচ্ছে। নতুন একটি বিভাগ যখন কার্যক্রম শুরু করে, সেখানে কমপক্ষে ৪ জন শিক্ষক রাখতে হয়। একজন অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর, বাকি তিন লেকচারার বা অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর পর্যায়ের। বিভাগটি স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের জন্য প্রস্তুত হলে আমরা সেখানে ৮ জন শিক্ষক রাখার পরামর্শ দিয়ে থাকি। ওই বিভাগে একসঙ্গে দুইটি ডিগ্রি চলমান থাকলে সেখানে একজন প্রফেসর থাকা প্রচণ্ডরকম জরুরি। কারণ, বিভাগে শিক্ষার্থী সংখ্যা বাড়লে সিনিয়র শিক্ষক না থাকলে কোয়ালিটি পাঠদান কাভার করা কঠিন হয়ে পড়বে।
আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার সাথে চাকরির বাজার কতটুকু সামঞ্জস্যপূর্ণ?
এই জায়গায় আমাদের বড় ধরনের একটা গ্যাপ রয়েছে। যেমন ধরেন, যেসব সাবজেক্টের বিপরীতে চাকরির বাজার প্রচণ্ডরকম সীমিত, সেগুলো সম্পর্কে আমাদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এসেছে। বর্তমানে উদীয়মান যেসব চাকরির বাজার, সে সম্পর্কে আমাদের একটা স্টাডি করা দরকার। আমরা ইউজিসির সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে এ বিষয়ে আলাপ করেছি। এখন যে জব মার্কেট—যেমন প্লাম্বিং, কার্পেন্টার অথবা ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্ট—এ রকম বহুবিধ জব তৈরি হয়ে গেছে। এর পাশাপাশি আরও বিশেষ কিছু চাকরিও রয়েছে—যেমন: ডেটা সায়েন্স, রোবটিক্স বা এআই-রিলেটেড। এখন আমাদের সাবজেক্টগুলো এই চাকরির বাজারের বাস্তবতায় কতটুকু প্রাসঙ্গিক, সেটা একটা গুরুত্বপূর্ণ দিক। আজ থেকে ৩০ বছর পর চাকরির বাজার কোন দিকে যাবে? এই স্টাডিগুলো আমাদের থাকা দরকার।
বিদেশি শ্রমিকরা আমাদের দেশে এসে প্রতি বছর ১০ মিলিয়ন ডলারের বেশি নিয়ে যাচ্ছে। অথচ আমাদের দেশে বিশাল সংখ্যক গ্র্যাজুয়েট বেকার পড়ে থাকছে। ইউনিভার্সিটি এডুকেশনের কোয়ালিটি পরিবর্তনের মাধ্যমে আমরা এই ব্যবধানকে গুছিয়ে আনার চেষ্টা করছি।
ন্যাশনাল লেভেলে আমাদের আরেকটা বড় সংকট রয়ে গেছে। বর্তমানে আমাদের ১৭১টা বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। দেখা গেছে, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবলতা কানাডা বা অস্ট্রেলিয়ার চাইতে অনেক বেশি। কিন্তু আমাদের সমাজে—আমি প্রকৃতিকেও সংযুক্ত করছি—এখানে যে সমস্যাগুলো রয়েছে সেগুলো আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এড্রেস করতে পারছে না। আমরা দেখছি নদী দূষণ, বায়ু দূষণ, সামাজিক অসমতা, নারীর প্রতি সহিংসতা, একে অন্যের প্রতি ট্রাস্ট কমে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যদি আলোকিত মানুষ তৈরি করে, তাহলে এগুলোর তো উন্নতি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অবনতি হচ্ছে কেন?
আমি যে সমস্যাগুলোর কথা বললাম, এগুলো আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে এড্রেস করার কথা ছিল। এগুলো কেন আমরা নিয়ে আসতে পারছি না? শুধু প্রাইভেট নয়, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সহ সবাই মিলে সমস্যাগুলোকে এড্রেস করতে হবে। এটা ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি নিড বলে আমি মনে করি।
আরেকটা বিষয় হলো, আমাদের যে গ্র্যাজুয়েটরা প্রতি বছর বের হচ্ছেন...ধরেন একটা ছেলে ২০২০ সালে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করলো। তিনি কি এখনো বেকার? বা ২০২০ সালে পাস করার কত মাস পর চাকরি পেয়েছেন? কী চাকরি পেয়েছেন? সেটা কি তার সাবজেক্টের স্ট্যান্ডার্ডের সঙ্গে ম্যাচ করে, নাকি তিনি একটা লোয়ার-লেভেলের জব করেন? এটাকে বলে ক্যারিয়ার ট্র্যাকিং। এই ক্যারিয়ার ট্র্যাকিংটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই ট্র্যাকিংটা ন্যাশনাল লেভেল থেকেও হতে পারে। দেখা যায়, গ্র্যাজুয়েশন শেষ করার অনেক বছর পরও একজন চাকরি পাচ্ছেন না। ফলে তিনি হতাশায় থাকেন। আমাদের কাছে যদি এই ডাটাটা ক্লিয়ার থাকে, তাহলে আমরা তাদের পাশে দাঁড়াতে পারি।
শিক্ষার্থী ভর্তি-সংক্রান্ত কোনো নির্দেশিকা ইউজিসি থেকে রয়েছে কি, থাকলে তা কীভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে?
শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে অবশ্যই একটা মিনিমাম গ্রেড প্রয়োজন হয়। এ জায়গায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো একটা স্ট্যান্ডার্ড অনুসরণ করছে। শিক্ষার্থীদের ভর্তি যোগ্যতার বিষয়ে ইউজিসির একটা গাইডলাইন রয়েছে। সেটা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১০ অনুযায়ী করা হচ্ছে।
স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়া নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপর ইউজিসির যে চাপ ছিল, তার কতটুকু বাস্তবায়ন হয়েছে? এখন কতগুলো ক্যাম্পাস বাকি রয়েছে?
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়াটা একটা চলমান প্রক্রিয়া। কোনো বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাস নিয়ে প্রতিষ্ঠা না হলেও তাকে নির্দিষ্ট সময়ের পরে স্থায়ী ক্যাম্পাসে ফিরতে হয়। সেটা ১২ বছরের মধ্যে সম্পন্ন করতে হয়। গত ২–৩ মাসের মধ্যে ৩–৪টা বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাসের অনুমোদন পেয়েছে। ১২ বছর হওয়ার পরও যেসব বিশ্ববিদ্যালয় এখনো স্থায়ী ক্যাম্পাসে ফিরতে পারেনি, তাদের সঙ্গে আমরা আইন অনুযায়ী ডিল করছি। এখন পর্যন্ত ১৫–২০টি বিশ্ববিদ্যালয় হবে, যেগুলো ১২ বছর পরও স্থায়ী ক্যাম্পাসে ফিরতে পারেনি।
২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষার ফল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি ও শিক্ষার ওপর কী প্রভাব ফেলতে পারে বলে আপনি মনে করেন?
দেখুন, প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিগুলোতে সাড়ে ৩ লাখের মতো শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ রয়েছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আরও ৫০ হাজারের মতো শিক্ষার্থী ভর্তি হবে। ফলে এখনো প্রায় ৩ লাখ শিক্ষার্থী বাকি রয়েছে। সেই সেন্সে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো ধরনের প্রভাব পড়ার কথা নয়। আমি শুরুতে যে ৩০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা বললাম, সেগুলোর মধ্যে অনেক ইউনিভার্সিটি আছে, তারা চাইলেও আবেদন করা একটা বড় অংশের শিক্ষার্থীর ভর্তি নিতে পারছে না। কারণ, তাদের যে পরিমাণ আসন রয়েছে, তার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি আবেদন জমা পড়ে। এখানে শিক্ষার্থীদের আগ্রহের একটা জায়গা স্পষ্ট। কারণ এ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কোয়ালিটি এডুকেশন নিশ্চিত করতে পারছে।
উচ্চশিক্ষা খাতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিতে ইউজিসির কী পরামর্শ থাকবে?
প্রথমে আমাদের নিজেদের প্রশ্ন করা উচিত, গুণগত শিক্ষাটা আসলে কী? জাতীয় স্বার্থ বিবেচনায় গুণগত শিক্ষা নিশ্চিতে আমাদের কী করা উচিত? অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় কিন্তু আমরা যে কোয়ালিটি এডুকেশনের কথা বলি, সেটা নিশ্চিতে তারা সর্বোচ্চ দিয়ে কাজ করছে। কারণ, আমরা তাদের এটা বোঝাতে সক্ষম হয়েছি, আইন মানলে তাদেরই লাভ। ভালো শিক্ষক, ভালো গবেষণা বা মিনিমাম সুযোগ-সুবিধা—এ বিষয়গুলো নিশ্চিত করতে পারলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দাঁড়িয়ে যাবে। এটা প্রতিষ্ঠানের মালিকপক্ষের জন্য যেমন ভালো, একইভাবে দেশের জন্যও ভালো। বিশেষ করে আমাদের যেসব ছেলেমেয়ে পড়াশোনা করতে যাবে, তাদের জন্যও ভালো।