হোম > শিক্ষা > ক্যাম্পাস

শুধু সমস্যাগুলো বলবেন, দায়িত্বশীলদের সঙ্গে ফাডাফাডির দায়িত্ব আমার—ডাকসুর ‘জেনজি ইশতেহার’

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান। ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন নিয়ে চলছে ব্যাপক তোড়জোড়। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন বুধবার ডাকসুর ২৮টি পদের বিপরীতে জমা পড়েছে মোট ৫০৯টি মনোনয়নপত্র।

এদিকে, নির্বাচনী প্রচারণা এখনো শুরু না হলেও সামাজিকমাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে কেন্দ্রীয় জিএস (সাধারণ সম্পাদক) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়ে ফেসবুকে তার পোস্টটি ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

বুধবার (২০ আগস্ট) রাতে নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে দেওয়া পোস্টের সঙ্গে ব্যতিক্রমধর্মী একটি পোস্টারও যুক্ত করে দেন তিনি।

আশিকের পোস্টারে দেখা যায়, প্লাস্টিকের চেয়ারে বসে তিনি যেন কোনো গ্যাংস্টার সিনেমার চরিত্র। চোখে সানগ্লাস, হাতে লাইটার এবং ঠোঁটে সিগারেট।

আশিকুর ইংরেজি বিভাগের ২২-২৩ সেশনের শিক্ষার্থী। তিনি ডাকসুতে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। আশিকুর তার ইশতেহারে লিখেছেন, ‘ডাকসুতে আগুন লাগাতে চলে এলাম বন্ধুরা’।

তিনি তার ইশতেহারে ক্লাসে উপস্থিতির নম্বর শিথিল করবেন বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আই ডিক্লেয়ার ওয়ার ওন মাই ফ্যাকাল্টিজ (শিক্ষক)। কেন আমাকে ওই ৫ মার্কের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা বস্তাপচা লেকচার শোনা লাগবে? এর থেকে ক্লাস না করে ভালো রেজাল্ট করা যায়। এন্ড দে ইউজ ইট অ্যাজ এ ওয়েপন।’

‘অ্যাটেনডেন্স ৭০-৭৫% হলেই ফুল মার্ক দেওয়া উচিত। আর ৫০% থাকলেও পরীক্ষায় বসতে দেওয়া উচিত। কিউএস র‍্যাংকিং দিয়ে আদৌ কিছু হয়? আমাদের ঘাড়ের ওপর পা দিয়ে জাতে উঠার চেষ্টা করলে হবে না। অবশ্যই শিক্ষার্থীদের সুবিধা আগে।’

তিনি লিখেছেন, ‘এই একটা কারণই যথেষ্ট ডাকসুতে দাঁড়ানোর। আরও পয়েন্ট আছে। যেগুলো সবাই দিয়েছে, অমুক উন্নয়ন, তমুক উন্নয়ন— এগুলো চাইলে কপি করে এখানে যোগ করা যাবে। কিন্তু আমি ওই ‘উদ্দীপকের গুরুত্ব অপরিসীম’ টাইপ লোক নই। বাস্তবতা হলো সদস্য হিসেবে তেমন পরিবর্তন আনার কারোরই সে রকম সুযোগ/মুরোদ নাই। সর্বোচ্চ প্রেসারাইজ করতে পারবে।’

তিনি ইশতেহারে লিখেছেন, ‘সমস্যাগুলো খুঁজবেন আপনারা। আমি রিপ্রেজেন্টেটিভ। আপনারা আমাকে সমস্যাগুলো বলবেন, সেটা নিয়ে দায়িত্বশীলদের সঙ্গে ফাডাফাডি করার দায়িত্ব আমার। ফাডাফাডি, প্রেসারাইজ, আলোচনা করে দাবি আদায় আমার কাজ, সোফায় বসে আরাম করে তামাশা দেখা আপনার কাজ। কিন্তু হয় উল্টোটা। সমস্যা বের করে নেতারা আর তার জন্য রাস্তায় কষ্ট করে আন্দোলন করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।’

তিনি ইশতেহারে বলেন, ‘মেইন ফোকাস হলো ঢাবির যে রিসোর্স আর ইনফ্রাস্ট্রাকচার আছে সেটা কিভাবে তার ফুল পটেনশিয়ালে ইউটিলাইজ করা যায় সেটা নিয়ে। মেয়েদের যাতায়াত, নিরাপত্তা, বিশেষ করে আবাসন সমস্যার জন্য ক্যাম্পাসে হল নির্মাণ অথবা কর্মচারীদের যেকোনো একটি ভবন হোস্টেলে (হল না) রূপান্তরের বিষয়ে কাজ করব।’

এ ছাড়া ক্যাম্পাস যেন বহিরাগত জনসমাবেশের পার্কিং স্লট আর মূত্র বিসর্জনের জায়গা না হয়ে যায়, একাডেমিক এরিয়ায় সকল মিটিং-মিছিল শব্দদূষণ বন্ধ আর সর্বোচ্চ রাজুতে করার এখতিয়ার সেটাও প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে করা হবে, উল্লেখ করেছেন তিনি। তিনি উল্লেখ করেছেন, ঢাবিতে কুরআন তিলাওয়াত হবে, সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চা হবে, কনসার্ট সব হবে। কেউ কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানবে না।

আশিকুর বলেন, আমি বিশ্বাস করি আমাদের পোলাপাইনরা পর্যাপ্ত ফান্ডিং পেলে মেধা আর রিসোর্স পরিপূর্ণভাবে ইউটিলাইজ করতে পারবে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে উচ্চমানের গবেষণা হবে। এমনকি আমার বিশ্বাস তারা স্টেট অব দ্য আর্ট টেকনোলজি তৈরি করতে পারবে, আর সেটার শুরু হবে এই ঢাবি থেকেই ইনশাআল্লাহ।

তাকে কেন ভোট দেবেন তার যুক্তি হিসেবে তিনি উল্লেখ করেছেন তার আর্থিক সততা, কোনো নারী কেলেঙ্কারি নেই, ভাই ব্রাদার কোরাম নেই ও স্ট্র্যাটেজিক দক্ষতা ইত্যাদি। তিনি উল্লেখ করেছেন, রাজনীতি দুইভাবে হয়— থিওরি আর ডাইরেক্ট অ্যাকশন। বন্ধুরা সব দ্বিতীয়টায় বিশ্বাসী (যদিও বেশিরভাগ এটাই কার্যকরী) হলেও আমি সব মেটিকুলাসলি প্ল্যান করে করতে পছন্দ করি। আমি পেশাদার রাজনীতিবিদ নই। এ জন্যই আমি একজন নেতার পরিবর্তে একজন রাজনৈতিক আমলা হিসাবে কাজ করতে চাই। ডাকসু জিএস-এর কাজও মোটাদাগে এমনই। সো আমি এখানে মূলত ‘দ্য ওয়ারটাইম কনসিলিয়ার (যুদ্ধকালীন পরামর্শদাতা) ফ্রম দ্য গডফাদার’।

তিনি উল্লেখ করেছেন, আপনি যদি অ্যানিমে ও মুভি লাভার হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই এই ওটাকু (কাল্পনিক চরিত্র) কে ভোট দিবেন।

আশিকুর ভোট না দেওয়ার যুক্তি হিসেবে উল্লেখ করেছেন, আনরেস্পনসিভ— গভীর রাতে কোনো সমস্যায় পড়লে আমাকে ফোন দিলে অবশ্যই আমাকে পাবেন না। কারণ আমি তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ি। বাইকও নেই যে একটান দিয়ে চলে যাব।

‘তো ভোটাররা এই জায়গায় খেয়াল রাখবেন, বিশেষ করে হল সংসদে— যেকোনো সমস্যায় পড়লে কাকে ফোন দিলে পাওয়া যাবে। যদিও প্রক্টোরিয়াল টিমকে ফোন করলেও যথেষ্ট সাড়া পাবেন।’

তিনি এক্সপোজের বিষয়ে উল্লেখ করেছেন, এক্সপোজ- যেহেতু অন্যায়-অনিয়ম একদমই সহ্য করতে পারি না, তো যদি অন্য সদস্যরা একটুও অনিয়ম বা সিকি পয়সার কমিশনবাজি করে, তাদের এক্সপোজ করে দেব। তো যাদের সিলেটের পাথরচুরির সর্বদলীয় ঐক্যর মতো কিছু করার ইচ্ছা আছে, তারা আমাকে ভোট দিবেন না।

তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘আর সবই আল্লাহর হাতে। আর নিশ্চয়ই আমার জন্য আমার রবই যথেষ্ট।’

ইশতেহারের সঙ্গে যুক্ত করা ছবির বিষয়ে আশিকুর লিখেছেন, অনেকেরই পোষ্টারের ছবি নিয়ে আপত্তি আছে। কিন্তু দুইটা ভোট কম পাব— এই ভয়ে যদি পিছপা হতাম তাহলে আমি নিজেকে আর রেসপেক্ট করতাম না। A man must respect himself. A man must have his pride.

তিনি উল্লেখ করেছেন, This is Gen-Z era. আমার পোস্টার, প্রচারণা সব Gen-Z স্টাইলেই হবে। A debut should be dynamic. I am what I am. Someone has to be. And, whatever I do, I will do with full gusto.

ফান ফ্যাক্ট: ডাকসুতে দাড়াইছে সবাই, কিন্তু বসে আছে একজনই।

পরীক্ষা নিয়ে স্কুলে মুখোমুখি শিক্ষক-অভিভাবকেরা

শাবিপ্রবির ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, আবেদন শুরু ৮ ডিসেম্বর

ব্যাংকে ব্যবহৃত ১০টি ইংরেজি বাক্য: (পর্ব-১)

চীনের চংকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্পূর্ণ অর্থায়িত বৃত্তি

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি: বাংলায় বাড়তি প্রস্তুতি চাই

সরকারি স্কুলে ভর্তির বয়স নিয়ে নতুন নির্দেশনা মাউশির

ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাদেশ জারির দাবিতে লাগাতার অবস্থানের ডাক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় খুলবে ২৮ ডিসেম্বর, অনলাইন ক্লাস বন্ধ হবে তার আগেই

ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি: ৫ দফা দাবিতে ইডেনের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

ফোসেপ প্রকল্প : কেনাকাটায় হাতখোলা মাউশি