আলোচিত প্রশান্ত কুমার হালদারের (পি কে হালদার) আর্থিক প্রতিষ্ঠান পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ গঠন করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। আজ মঙ্গলবার বিচারপতি মোহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের একক ভার্চ্যুয়াল বেঞ্চ পরিচালনা পর্ষদ গঠনের লিখিত আদেশ দেন।
গত ২৮ জুন এ সংক্রান্ত রায় দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি পুনরুজ্জীবিত বা পুনর্গঠনের নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত। তখন পরিচালনা পর্ষদ আদালত গঠন করে দেবেন মর্মে রায়ে বলা হয়েছিল। এরই ধারাবাহিকতায় আজ প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনার জন্য ১০ সদস্যের একটি বোর্ড গঠন করে দেন।
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কামাল উল আলমকে চেয়ারম্যান করা হয়েছে। অন্যান্য পরিচালক হলেন সাবেক সচিব আনোয়ারুল ইসলাম শিকদার, অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ হাসান শাহেদ ফেরদৌস, পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল হালিম চৌধুরী, ব্রিগেডিয়ার (অব.) কাজী তাওফিকুল ইসলাম, এফসিএ নুর–ই খোদা আব্দুল মবিন ও মাওলা মোহাম্মাদ, প্রতিষ্ঠানটির সঞ্চয়কারীদের প্রতিনিধি ডা. নাশিদ কামাল, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের চেয়ারম্যান ড. নুরুল কবির এবং আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মাদ জালালুদ্দিন।
হাইকোর্টের লিখিত আদেশে বোর্ডের চেয়ারম্যানকে প্রথম সভা আহ্বান করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে অডিট রিপোর্ট তৈরি করা, আদালতের নির্দেশনাসমূহ বোর্ড সদস্যদের সামনে তুলে ধরতে এবং সবার কার্যাবলী নির্ধারণ করতে বলা হয়েছে। এছাড়াও বোর্ড সদস্য ও আমানতকারীদের বিষয়ে পৃথক নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত।
এর আগে এ সংক্রান্তে বাংলাদেশ ব্যাংকের আইনজীবীদের মতামত নেন আদালত। এই কোম্পানি থেকে যারা ঋণ নিয়েছিলেন তাঁদেরও বক্তব্য নেওয়া হয় মামলার শুনানিকালে।
১৯৯৭ সালের ২৪ নভেম্বর আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পিপলস লিজিংকে অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১৯ সালের জুলাইয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অবসায়নের পক্ষে সম্মতি দেয় সরকার। এরপর মো. আসাদুজ্জামানকে অবসায়ক (প্রবেশনাল লিক্যুডেটর) নিযুক্ত করা হয়।
পিপলস লিজিং থেকে টাকা নিয়ে ফেরত না দেওয়া ১২৯ জনের মধ্যে বিদেশে পলাতক পি কে হালদার একজন। তালিকায় তাঁর নাম উঠে এসেছে পাঁচবার। তিনি একাই পৃথক চারটি কোম্পানি ও নিজের নামে মোট পাঁচটিতে ২৫৩ কোটি ৯৩ লাখ ৮৯ হাজার ৭৬৩ টাকা ঋণ নিয়েছেন।
পিকে হালদারের অর্থ কেলেঙ্কারির পর পিপলস লিজিং ভয়ানক সংকটে পড়ে। এ কারণে অবসায়নের সিদ্ধান্ত নেয় সরকারসহ সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু আমানতকারীরা বলেন, কোম্পানি অবসায়ন করা হলে তাঁদের ক্ষতির আরও বাড়বে। এ কারণে ২০১ জন বিনিয়োগকারী পিপলস লিজিংকে অবসায়ন না করে পুনর্গঠনের আবেদন জানান।