হোম > ছাপা সংস্করণ

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­

দুর্নীতি, মূল্যস্ফীতি, উচ্চ করহারসহ ১৭ ধরনের বাধায় বিপর্যস্ত দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য। রয়েছে সামাজিক সমস্যাও। দুর্নীতি থেকে উত্তরণে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ডিজিটালাইজেশন করতে হবে। অসৎ ব্যবসার জোট গড়ে উঠতে দেওয়া যাবে না। আর প্রথমেই সংস্কার করতে হবে রাজনীতিতে। দূর করতে হবে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন।

গতকাল রোববার রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে ‘বাংলাদেশে ব্যবসায়িক পরিবেশ সংস্কার: অন্তর্বর্তী সরকারের অ্যাজেন্ডা’ শীর্ষক সংলাপে বক্তারা এসব কথা বলেন। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এই আয়োজন করে। সংলাপে প্রধান অতিথি ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিকবিষয়ক বিশেষ দূত (উপদেষ্টা) অধ্যাপক লুৎফে সিদ্দিকী। সভাপতিত্ব করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।

অনুষ্ঠানে সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম এক্সিকিউটিভ ওপেনিয়ন সার্ভে (ইওএস) প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। তিনি জানান, ব্যবসা পরিচালনায় ঘুষের কারবার আরও বেড়েছে। কর-সংক্রান্ত সেবা পেতে ঘুষ দিতে হয় বলে মনে করেন ৫৭ শতাংশের বেশি ব্যবসায়ী। যদিও গত বছর পরিচালিত জরিপে এই অভিযোগ ছিল ৪৭ দশমিক ৮ শতাংশ ব্যবসায়ীর।

জরিপে তথ্য সংগ্রহ করা হয় গত এপ্রিল থেকে জুনের মধ্যে। এতে সেবা খাত, শিল্প ও কৃষি খাতের দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানের নির্বাহীরা তাঁদের মতামত দেন।

গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বাংলাদেশে ব্যবসা করার ক্ষেত্রে ১৭টি সমস্যা চিহ্নিত করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে দুর্নীতি, আমলাতন্ত্রের অদক্ষতা, বৈদেশিক মুদ্রার স্থিতিশীলতা, মুদ্রাস্ফীতি, আর্থিক সীমাবদ্ধতা, অপর্যাপ্ত অবকাঠামো, নীতির অস্থিতিশীলতা, দুর্বল শ্রমশক্তি, উচ্চ করহার, উদ্ভাবনের জন্য অপর্যাপ্ত ক্ষমতা, রাজনৈতিক অস্থিরতা, ঝুঁকিপূর্ণ জনস্বাস্থ্য এবং শ্রমনীতির সীমাবদ্ধতা। তিনি বলেন, ব্যবসায়িক প্রতিযোগিতার মানদণ্ডে বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা ও ভারতের চেয়ে পিছিয়ে। অর্থনীতির তুলনায় ব্যবসায়িক প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত বলেন, ব্যবসায়ীদের মধ্যে একটা নেক্সাস রয়েছে, যাঁরা সহজভাবে ব্যবসা করতে চান না। কারণ, তাঁরা নিজেদের শর্টকাট খুঁজে নিয়েছেন। এটা জানা যে কী করতে হবে, তবে বাস্তবায়ন ও প্রয়োগের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ হলো রাজনৈতিক অর্থনীতি।

সিস্টেমের পরিবর্তন খুবই কঠিন বলে মনে করেন লুৎফে সিদ্দিকী। তিনি বলেন, ‘বহুমুখী সিস্টেম একটির সঙ্গে আরেকটি জড়িত। এর কার্যকর ব্যবচ্ছেদ পয়েন্ট খুঁজে বের করা কঠিন। কারণ, এটা মেকানিক্যাল সিস্টেম নয়, ইকোলজিক্যাল সিস্টেম। এটা রিঅ্যাক্ট করে। এজন্য এটা খুঁজে বের করা কঠিন যে, আমরা কীভাবে এটাতে সংস্কার ধাপগুলো প্রবেশ করাব, যাতে আমরা সুফল বের করতে পারি। সংস্কার উদ্যোগের ক্ষেত্রে বেশির ভাগই ব্যর্থ হয়, কারণ হলো সংস্কার করতে গিয়ে আমরা প্রথমেই কিছু ব্যর্থতার জন্ম দিই (ক্রিয়েট আর্লি লুজারস)। এরপর তারা নিজেদের মধ্যে জোট (কোয়ালিশন) গঠন করে এবং পরবর্তী ধাপে সংস্কারে বাধা সৃষ্টি করে।’

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেন, ‘সরকারি সংস্থার নিচের স্তরের দুর্নীতি বড় সমস্যা। সবার মতে, ডিজিটালাইজেশন এর সমাধান। আমিও এটার সঙ্গে একমত।’

এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আব্দুল আউয়াল মিন্টু বলেন, ‘বর্তমান সরকারের কাছে সংস্কার চাচ্ছেন, প্রথমত এটিই ভুল প্রত্যাশা। আমাদের একটা মেকানিজম করা উচিত, যাতে করে সংস্কার একটা চলমান প্রক্রিয়ায় থাকে। কারণ, প্রত্যেক জেনারেশন আগের জেনারেশনের চেয়ে শ্রেয়তর, সেটা শুধু শিক্ষার দিক থেকে নয়, প্রযুক্তি ও অন্যান্য ক্ষেত্রেও।’

ঢাকা চেম্বার সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেন, ‘দুর্নীতির কয়েকটি স্তর রয়েছে। এটা হচ্ছে সবচেয়ে প্রাথমিক স্তরের (গ্রাউন্ড লেভেল) দুর্নীতি, যেটা ব্যবসায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে। এটা স্পিড মানি, ঘুষ নয়। ঘুষ ও স্পিড মানির মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। যদি আমাদেরকে সরকারের নিচের স্তরের ফাংশনারিজের সঙ্গে ডিল করতে বাধ্য করেন, তা হলে এ সমস্যা যাবে না। এটার একটাই সমাধান, সেটা হলো স্বয়ংক্রিয়করণ (অটোমেশন)।’

বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান বলেন, ‘১৫ বছর ধরে ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো নিয়ে কাজ করছি, সব তথ্য এক জায়গায় থাকবে। কিন্তু এটা তো হচ্ছেই না। কিন্তু দিনে দিনে জটিল করা হচ্ছে। সবকিছু একটার মধ্যে আনতে গেলে কিছুই হবে না।’

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘দেশের ১৫ থেকে ২৪ বছরের তরুণদের মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশই কোনো প্রশিক্ষণ, শিক্ষা বা কর্মের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নীত হবে। আমরা যদি এই বড় জনসংখ্যাকে কর্মের বাইরে রাখি, তা হলে আমাদের প্রবৃদ্ধি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’

শেয়ারবাজারে তথ্যের স্বচ্ছতায় এআই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে: বিআইসিএম নির্বাহী প্রেসিডেন্ট

প্রথমবার চীনের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত ১ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়াল

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন: কোটিপতি হিসাব বাড়ছেই

পেঁয়াজ আমদানি: রাতারাতি পাইকারিতে দাম কমেছে কেজিতে ২৫ টাকা

বেক্সিমকো সুকুক: মূলধন ফেরত অনিশ্চিত, মেয়াদ বাড়ানোর সুপারিশ আইসিবির

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন: বিদেশি ঋণ বেড়েছে ৪২ শতাংশ, দ্বিগুণ হলো পরিশোধের চাপ

দিনে ১৫০০ টন পেঁয়াজ আমদানি, ভারতের চাষিদের মুখে হাসি ফেরাল বাংলাদেশ

৬ দিনে রেমিট্যান্স এল ৬৩ কোটি ২০ লাখ ডলার

নভেম্বরে কমেছে অর্থনীতির গতি

ফিকির নতুন সভাপতি রুপালী হক চৌধুরী