গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত থেকে ৯২ হাজার ২৬১ কোটি টাকা লোপাট হওয়ার তথ্য দিয়েছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। ভুয়া কাগজপত্র ও প্রতিষ্ঠানের নাম দিয়ে ঋণ নেওয়াসহ নানা উপায়ে এই অনিয়ম হয়েছে।
আজ শনিবার ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি ২০২৩-২৪: চলমান সংকট ও করণীয়’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ থেকে এই তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ে ব্যাংকে যে স্ক্যাম বা অনিয়মগুলো হয়, সেগুলো অফিশিয়াল সূত্রে পাওয়া যায় না। সেগুলো সংবাদমাধ্যমে আসে। গণমাধ্যমকর্মীরা সেগুলো হয়তো অফিশিয়াল সূত্রেই আনেন। এগুলোকে কম্পাইল করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, ২০০৮ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত গণমাধ্যমে ২৪টি ঘটনা প্রকাশ পেয়েছে। এসব ঘটনায় ৯২২.৬১ বিলিয়ন টাকা বা ৯২ হাজার ২৬১ কোটি টাকা আত্মসাৎ বা অপচয় হয়েছে।’
ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘ব্যাংকিং খাত বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত পুঁজিবাদের (ক্রনি ক্যাপিটালিজম) দখলে চলে গেছে। এ ধরনের পুঁজিপতিরা তাদের আর্থিক অভিজাততন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ব্যাংকিং খাতকে ব্যবহার করছে। টাকা আত্মসাৎ হচ্ছে, অপচয় হচ্ছে। ব্যাংকে যে টাকা, সেটি জনগণের টাকা। সেটা কীভাবে ব্যয় হচ্ছে তা চিন্তার বিষয়। সেই পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংকিং খাতে নিয়মকানুন বাস্তবায়ন ও সংস্কার একেবারেই জরুরি হয়ে পড়েছে।’
সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে রাজনৈতিক নেতৃত্বের উচ্চ পর্যায় থেকে পদক্ষেপ দরকার। উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতি বন্ধে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার প্রয়োজন, যাতে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা নিয়ম অনুযায়ী কাজ করতে পারেন।
ফাহমিদা খাতুনের মতে, শ্রম ইস্যুতে পশ্চিমা দেশগুলোর বিধিনিষেধের শঙ্কা দূর করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
সিপিডির বিশেষ ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান ও গবেষণা পরিচালক ড. গোলাম মোয়াজ্জেম সেখানে উপস্থিত ছিলেন।