হোম > অর্থনীতি

ইআরডির জুলাই মাসে প্রতিবেদন: ঋণছাড়ে সতর্ক উন্নয়ন-সহযোগীরা

মাহফুজুল ইসলাম, ঢাকা

পুরোনো ঋণ শোধের চাপ আরও জোরদার হলেও চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম মাসে চলমান প্রকল্পে উন্নয়ন সহযোগীদের ঋণছাড় নেমে এসেছে প্রায় অর্ধেকে। এর বিপরীতে একই সময়ে নতুন ঋণের প্রতিশ্রুতি বেড়েছে যেন উল্টো হাওয়ার মতো; যেন সাবধানতার সঙ্গে এগোচ্ছে তারা। পুরোনো ঋণ পরিশোধে চাপ বেশি, আগের প্রতিশ্রুতির ঋণে ছাড় কম, কিন্তু নতুন বাড়তি প্রতিশ্রুতিতে আপত্তি নেই। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) জুলাই মাসের হালনাগাদ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে ঋণপ্রবাহের এই অদ্ভুত টানাপোড়েন।

এ প্রসঙ্গে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, দাতা সংস্থাগুলো জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা চায়। এ দুটির নিশ্চয়তা থাকলে ঋণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি বাড়বে। তিনি আরও বলেন, সরকারের সক্ষমতা বৃদ্ধি পেলে এবং উন্নয়ন কার্যক্রমে গতি ফিরে এলে ঋণছাড়ের পরিমাণও বৃদ্ধি পাবে।

ইআরডির হালনাগাদ তথ্য বলছে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে উন্নয়ন সহযোগীদের ঋণ ও অনুদান ছাড় হয়েছে ২০ কোটি ৭৫ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। এর মধ্যে অনুদান বাবদ ছাড় হয়েছে মাত্র ৩ লাখ ১০ হাজার ডলার, আর ঋণ বাবদ ছাড় হয়েছে ২০ কোটি ২৪ লাখ ৪০ হাজার ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে জুলাইয়ে ঋণছাড় হয়েছিল ৩৫ কোটি ৮৩ লাখ ২০ হাজার ডলার। অর্থাৎ চলতি বছরের তুলনায় ঋণছাড় ১৫ কোটি ৫৫ লাখ ৭০ হাজার ডলার কমে গেছে।

জুলাই মাসে ঋণছাড়ের শীর্ষে ছিল এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। সংস্থাটি ঋণ ছাড় করেছে ৭ কোটি ৭৫ লাখ ডলার। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে আইডিএ, ৫ কোটি ৯০ লাখ ৭০ হাজার ডলার। জাপান ১ কোটি ৭২ লাখ ৪০ হাজার, ভারত ১ কোটি ৩৬ লাখ ৩০ হাজার ডলার, আর অন্যান্য দেশ ও দাতা সংস্থা ৩ কোটি ৫৩ লাখ ৩০ হাজার ডলার।

ঋণছাড় কমলেও চলতি বছরের জুলাইয়ে বিদেশিরা নতুন করে ঋণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ৮ কোটি ৩৪ লাখ ৬০ হাজার ডলার, যেখানে গত বছরের একই সময়ে ছিল মাত্র ১ কোটি ৬৪ লাখ ডলার; প্রায় পাঁচ গুণ বেড়েছে। নতুন প্রতিশ্রুতির শীর্ষে রয়েছে আইডিএ, যা ৮ লাখ ৭০ হাজার ডলার ঋণ দেওয়া প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এডিবি, জাপান, ভারত, চীন ও রাশিয়া নতুন প্রতিশ্রুতি দেয়নি।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৮৩২ কোটি ডলারের প্রতিশ্রুতির বিপরীতে ঋণ ছাড় করা হয়েছে ৮৫৭ কোটি ডলার। এর আগের অর্থবছর ২০২৩-২৪-এ প্রতিশ্রুতির বিপরীতে ঋণ ছাড় করা হয়েছিল ১ হাজার ২৮ কোটি ডলার, যেখানে প্রতিশ্রুতি ছিল ১ হাজার ৭৪ কোটি ডলার। ফলে বৈদেশিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি কমেছে ২২ দশমিক ৫ শতাংশ, ঋণছাড়ের পরিমাণ কমেছে ১৬ দশমিক ৬৩ শতাংশ।

বিদেশি ঋণ ও অনুদান কমলেও গত অর্থবছরে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের হার বেড়েছে। চলতি বছরের জুলাইয়ে সরকার ৪৪ কোটি ৬৬ লাখ ৮০ হাজার ডলার পরিশোধ করেছে, যা দেশীয় টাকায় ৫ হাজার ৪৪৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা। এর মধ্যে মূল ঋণ পরিশোধ হয়েছে ৩২ কোটি ৭৭ লাখ ২০ হাজার ডলার, আর সুদ দেওয়া হয়েছে ১১ কোটি ৮৯ লাখ ৬০ হাজার ডলার।

গত বছরের জুলাইয়ে পরিশোধ করা হয়েছিল ৩৮ কোটি ৫৮ লাখ ৭০ হাজার ডলার। অর্থাৎ চলতি বছরের জুলাইয়ে ৬ কোটি ১০ লাখ ডলার বেশি পরিশোধ করা হয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সরকার মোট ৪০৯ কোটি ডলার বিদেশি ঋণ পরিশোধ করেছে, যার মধ্যে মূল ঋণ ২৬০ কোটি এবং সুদ ১৪৯ কোটি ডলার।

বিশ্বব্যাংকের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, ঋণ পরিশোধের হার বাড়বেই। তিনি সতর্ক করেন, নতুন ঋণ নেওয়ার আগে সরকারের উচিত ঋণব্যবস্থাকে কৌশলগতভাবে যাচাই করা। কারণ দেশের প্রশাসনিক স্থিতিশীলতা এখনো চ্যালেঞ্জের মুখে, যা প্রকল্পের জন্য জরুরি তহবিলের প্রবাহ কমিয়ে দেয়। তিনি বলেন, প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে দ্রুত শক্তিশালী করতে হবে, যাতে প্রকল্পের অগ্রগতি সচল থাকে।

বন্ধ সব পোশাক কারখানা, ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর শোক

স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল: আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা

ইসলামী ব্যাংকের শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত

যশোরের খেজুর রস: লক্ষ্য ১২০ কোটি টাকার গুড় উৎপাদন

ইসলামি ১০ ও সরকারি ৬ ব্যাংক: ঋণের অর্ধেকের বেশি অনাদায়ি

ছয় মাসে ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

এনবিআর কর্মকর্তার নাম ভাঙিয়ে টাকা দাবি, সতর্কবার্তা

যুক্তরাষ্ট্র থেকে এল আরও ৫৭ হাজার টন গম

চট্টগ্রামে ওয়ালটন পণ্যের ক্রেতাদের হাতে উপহার হস্তান্তর

অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় বাড়ল আরও এক মাস