হোম > অর্থনীতি

অর্থনীতির ঝুঁকি ২০২৬ সালেও

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎

বাংলাদেশের অর্থনীতি শঙ্কামুক্ত নয়। তবে ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়ানোর আভাস মিলেছে। ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সেই পুনরুদ্ধারের গতি দৃশ্যমান হতে পারে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) প্রকাশিত সর্বশেষ এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক (এডিও) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৬ সালে দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি বেড়ে প্রায় ৫ শতাংশে পৌঁছাতে পারে। একই সময়ে মূল্যস্ফীতি নেমে দাঁড়াতে পারে ৮ শতাংশে, যা দক্ষিণ এশিয়ার গড় প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক ৭ শতাংশের তুলনায় দ্বিগুণের কাছাকাছি। তবে এই সম্ভাবনাকে ম্লান করতে পারে দেশে বিদ্যমান চার বড় চ্যালেঞ্জ—রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, ঘন ঘন বন্যা, শ্রমিক অস্থিরতা ও উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি। গতকাল মঙ্গলবার এডিবির সেপ্টেম্বর এডিও প্রকাশ করা হয়।

প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ছিল মাত্র ৪ শতাংশ, আর তার আগের বছর ৪ দশমিক ২ শতাংশ। তৈরি পোশাক খাত রপ্তানিতে শক্ত অবস্থান ধরে রাখলেও অভ্যন্তরীণ চাহিদা দুর্বল হয়ে পড়েছে। তবু শক্তিশালী রেমিট্যান্সের প্রবাহ এবং জাতীয় নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট ব্যয় বৃদ্ধির কারণে আগামী দিনে ভোগব্যয় বাড়বে, যা প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হয়ে উঠবে।

এ প্রসঙ্গে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জিয়ং বলেন, ‘বাংলাদেশের বাণিজ্যে মার্কিন শুল্কের প্রভাব এখনো স্পষ্ট নয়, আর ব্যাংক খাতের দুর্বলতাও কাটেনি। ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধি নির্ভর করবে ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নয়ন, বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা ও নির্ভরযোগ্য জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করার ওপর। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা গেলে উচ্চ প্রবৃদ্ধির পথে হাঁটবে বাংলাদেশ।’

ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধি নির্ভর করবে ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নয়ন, বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা ও নির্ভরযোগ্য জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিতের ওপর। হো ইউন জিয়ং, কান্ট্রি ডিরেক্টর, এডিবি

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরে সরকারি হিসাবের ভারসাম্য উন্নতির পথে। ঘাটতি থেকে বেরিয়ে প্রায় শূন্য দশমিক ০৩ শতাংশ উদ্বৃত্তে পৌঁছাতে পারে, যেখানে আগের বছর ঘাটতি ছিল ১ দশমিক ৫ শতাংশ। এই উত্তরণের মূল কারণ বাণিজ্য ঘাটতি সংকোচন ও প্রবাসী আয় বৃদ্ধি। তবে কঠোর রাজস্ব ও মুদ্রানীতি এবং বিনিয়োগকারীদের সতর্ক মনোভাব নতুন বিনিয়োগকে দমিয়ে রাখতে পারে।

আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ঝুঁকির দিকটিও স্পষ্টভাবে চিহ্নিত করেছে এডিবি। যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক এবং ইউরোপীয় বাজারে বাড়তি প্রতিযোগিতা বাংলাদেশের শিল্প খাতকে চাপে ফেলবে। প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে রপ্তানিকারকদের পণ্যের দাম কমাতে হতে পারে, যা শিল্প প্রবৃদ্ধি সীমিত করবে। এর বিপরীতে গৃহস্থালি ব্যয়ক্ষমতা বাড়লে সেবা খাত সম্প্রসারিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। কৃষি খাতের প্রবৃদ্ধি নির্ভর করবে অনুকূল আবহাওয়া ও সরকারি সহায়তার ওপর।

মুদ্রাস্ফীতি নিয়ে জোরালোভাবে সতর্কতা এসেছে প্রতিবেদনে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সার্বিক মুদ্রাস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৭ শতাংশ, আর ২০২৪-২৫ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ শতাংশে। এডিবি আশা করছে, জ্বালানি ও খাদ্যদ্রব্যের আন্তর্জাতিক দাম কমতে শুরু করলে ২০২৬ সালের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ায় মুদ্রাস্ফীতি কমে আসবে। তবে বাংলাদেশের জন্য পূর্বাভাস ৮ শতাংশ, যা অঞ্চলটির মধ্যে সর্বোচ্চ।

দক্ষিণ এশিয়ার পরিসরে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরেছে এডিবি। ২০২৬ সালে ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে বাংলাদেশ তৃতীয় স্থানে থাকবে। ভারতের প্রবৃদ্ধি হবে প্রায় ৬ দশমিক ৫ শতাংশ, ভুটানের ৬ শতাংশ। সবচেয়ে পিছিয়ে থাকবে আফগানিস্তান, ১ দশমিক ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে।

এডিবি জানায়, কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে হলে এখনই প্রয়োজন কাঠামোগত সংস্কার, বিচক্ষণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি ও কার্যকর নীতি বাস্তবায়ন। ব্যবসায়িক পরিবেশ, জ্বালানি নিরাপত্তা এবং ব্যাংক খাতের সংস্কার ছাড়া বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার দীর্ঘস্থায়ী হবে না।

তেল-পেঁয়াজে দাম বাড়তি, সবজিতে ফিরছে স্বস্তি

উত্তরা ব্যাংকের ২৫০তম শাখার উদ্বোধন

টানা চার মাস কমল রপ্তানি আয়

৯ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিল সিগারেট কোম্পানি

১২তম জাতীয় এসএমই পণ্য মেলা শুরু রোববার

প্রশান্ত মহাসাগরে দুই প্রকল্পের অনুমোদন দিল এডিবি-বিশ্বব্যাংক

এক ব্যক্তি ও তিন প্রতিষ্ঠানকে ১৬ কোটি টাকা জরিমানা

১৪টি বন্ধ পাটকল বেসরকারি খাতে, আরও হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে: বাণিজ্য উপদেষ্টা

মেট্রো রেলস্টেশনে ৯টি সুপারস্টোর চালু করবে এমজিআই

জনতা ব্যাংক পিএলসির ৮৬৬তম বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত