সিলেট নগরের একটি সিএনজি ফিলিং স্টেশনে তেলবাহী ট্রাকে আগুন লেগে যায়। এ সময় পাশে নর্দমার সংস্কারকাজ করতে থাকা ৫ জন শ্রমিক দগ্ধ হয়েছেন। আজ রোববার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নগরের পাঠানটুলা এলাকার নর্থ–ইস্ট সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সিটি মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর নির্দেশে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
অগ্নিদগ্ধরা হলেন–সিলেট নগরের ঘাসিটুলা বেতের বাজার এলাকার মো. জাফর আলীর ছেলে মো. মনতাজ মিয়া (৩৫), একই এলাকার মো. মঙ্গল মিয়ার ছেলে লিটন মিয়া (২৫), মতি মিয়ার ছেলে আলম মিয়া (২৩), মিছির আলীর ছেলে মতি মিয়া (৬০) ও রজনী চন্দ দাসের ছেলে সুভাষ দাস (৫৫)।
তাঁদেরকে উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের কর্তব্যরত ডা. এম এ মান্নান জানান, ‘হাসপাতালে আসা আহত পাঁচজনের মধ্যে ২ জনের মুখমণ্ডলসহ শরীরের ৩৫ ভাগ পুড়ে গেছে। বাকিদের মধ্যে দুজনের ৩০ ভাগ আর একজনের ২৮ ভাগ দগ্ধ হয়েছেন। এখনো চিকিৎসা চলছে, তবে প্রয়োজন পড়লে তাদের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হতে পারে।’
পাঠানটুলা এলাকার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, নর্থ-ইস্ট সিএনজি রি-ফুয়েলিং স্টেশনের পাশে নর্দমার সংস্কারের কাজ করছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের শ্রমিকেরা। বিকেল সোয়া ৪টার দিকে এক শ্রমিক পাম্পের রি-ফুয়েলিং মেশিনের কাছেই ওয়েল্ডিং গ্রাইন্ডিং মেশিন দিয়ে রড কাটছিলেন। এ সময় আগুনে ফুলকি গিয়ে স্টেশনটিতে দাঁড়িয়ে থাকা একটি তেলবাহী ট্রাকের নিচে পড়লে সেখানে আগুন ধরে যায়। অগ্নিকাণ্ডের পর খবর দেওয়া হলেও ফায়ার সার্ভিস ইউনিট ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই সিএনজি পাম্পের কর্মচারীরা স্টেশনটিতে থাকা অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের মাধ্যমে আগুন নিভিয়ে ফেলেন।
দগ্ধরা সবাই এমএন ইয়াকুব কনস্ট্রাকশনের ডে লেবার বলে জানা গেছে। কনস্ট্রাকশন ফার্মের ঠিকাদার মামুন জানান, ‘কয়েক মাস আগে সিটি করপোরেশন থেকে পাম্প কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে কনস্ট্রাকশন কাজের ব্যাপারে জানানো হয়েছে। কাজ চলাকালীন পাম্প বন্ধ রাখতে বলার পরও তারা তা করেনি। এরপরও তাদের প্রতিদিন কাজ চলাকালীন পাম্প বন্ধ রাখতে বলার পরও তারা পাম্প বন্ধ না রেখে জবাব দিয়েছেন, আপনারা আপনাদের নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আহত ৫ শ্রমিকের সবার ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে।’
সিসিকের তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন–সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইফতেখার আহমদ চৌধুরী, প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড মাইনিং ডিপার্টমেন্টের প্রফেসর ড. ফরহাদ মোহাম্মদ হাওলাদার, জালালাবাদ গ্যাস লিমিটেডের জিএম (অপারেশন) ইঞ্জিনিয়ার সারওয়ার জাহান মাহমুদ কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন–সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইফতেখার আহমদ চৌধুরী, প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম।