শীত কিংবা বর্ষা সব ঋতুতেই পর্যটকদের প্রিয় জায়গা হয়ে উঠেছে হাকালুকি হাওর। এশিয়ার অন্যতম বৃহত্তম মিঠাপানির এ জলাভূমির আয়তন ১৮ হাজার ১১৫ হেক্টর। এটি মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা, কুলাউড়া ও সিলেট জেলার ফেঞ্চুগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ এবং বিয়ানীবাজার উপজেলা জুড়ে বিস্তৃত।
মিনি কক্সবাজার খ্যাত হাকালুকি হাওরে অগণিত ভ্রমণপিয়াসি বেড়াতে আসেন। পর্যটকদের জন্য এখানে রয়েছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত প্রমোদতরী হাওর বিলাস, স্পিড বোটসহ শ্যালো ইঞ্জিন চালিত সুসজ্জিত নৌকা। যেগুলো ঘণ্টা ও দিন হিসেবে ভাড়া নেন পর্যটকেরা। হাকালুকির হাওরের মাঝখানে রয়েছে ওয়াচ টাওয়ার। ওয়াচ টাওয়ারে উঠে হাকালুকি হাওরের অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। সন্ধ্যায় সূর্যাস্ত এখানে মেলে ধরে নয়নাভিরাম দৃশ্য। স্বচ্ছ পানির বুকে রক্তিম সূর্য ডোবা দেখতে বিকেল থেকেই অপেক্ষায় থাকেন শত-শত পর্যটক।
শীত মৌসুমে দেখা যায় হাকালুকি হাওরের অন্যরূপ। হাজার হাজার অতিথি পাখির কলরবে মুখরিত হয়ে ওঠে হাওর। এ সময় অতিথি পাখি দেখতে পর্যটকেরা ছুটে আসেন।
হাকালুকি হাওরের পর্যটন ব্যবস্থা নিয়ে স্থানীয় বণিক সমিতির উপদেষ্টা মুহিব উদ্দিন বাদল বলেন, ‘আমরা পরিবেশ ও নিরাপত্তার ব্যাপারে সব সময় সচেতন। আগত পর্যটকদের যেন কোনো সমস্যা না হয় সেই বিষয়টি আমরা সবাই মিলে খেয়াল রাখি। পর্যটকেরা যেন ভ্রমণে এসে বিড়ম্বনায় না পড়েন এর জন্য নৌ-যানের সুশৃঙ্খল ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
প্রমোদতরী হাওর বিলাসের মালিক মুজিব চৌধুরী বলেন, ‘হাকালুকি হাওরের পর্যটন ও জীব বৈচিত্র্য আকর্ষণীয়। পর্যটকদের আনন্দ দিতে এখানে হাওর বিলাস ছাড়াও আনা হয়েছে রোমাঞ্চকর জেটস্কি। হাওর বিলাসে রাত্রিযাপনেরও ব্যবস্থা রয়েছে।'
ঢাকা থেকে এখানে বেড়াতে আসা এক দম্পতি জানান, 'এখানে প্রতি বছরই আসি। এখানকার সৌন্দর্যের বর্ণনা ভাষায় প্রকাশের মতো নয়।'
হাকালুকি হাওরের পর্যটন নিয়ে ফেঞ্চুগঞ্জের ঘিলাছড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লেইস চৌধুরী বলেন, 'প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আল্লাহর দান। এখানে প্রায় সারা বছরই পর্যটকেরা আসেন। তাঁদের সেবা করতে এলাকার মানুষ কৃপণতা করে না। আমরা সব সময় সচেতন থাকি যেন কোন বিব্রতকর ঘটনা না ঘটে।’