আসন্ন সংসদ নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘কেউ যদি আবার চিন্তা করেন, জনগণের সমর্থন পাব না, তাহলে বাঁকা পথে প্রশাসনিক ক্যুর মাধ্যমে আমরা নির্বাচনের ক্রেডিট হাইজ্যাক করব, তাহলে বলব বন্ধু সেই সূর্য ডুবে গেছে, সেই সূর্য আর বাংলাদেশে উঠবে না। এই সূর্য, কালো সূর্য আর বাংলাদেশে মুখ দেখবে না।’
শনিবার বিকেলে সিলেটের আলিয়া মাদ্রাসা ময়দানে ইসলামি ও সমমনা আট দলের সিলেট বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. শফিকুর রহমান এসব কথা বলেন। একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘যারা এত দিন নির্বাচনের জন্য নির্বাচন নির্বাচন করে জনগণকে বেহুঁশ করে তুলেছিল, এখন ভিন্ন সুরে কেউ কেউ কথা বলতে শুরু করেছে। এ লক্ষণ ভালো নয়।’
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘তাঁরা বুঝতে পেরেছেন, তাঁরা যেসব কর্মকাণ্ড বাংলাদেশে পরিচালনা করেছেন, জনগণ তাঁদের আগামী নির্বাচনে লাল কার্ড দেখানোর জন্য প্রস্তুত হয়ে গিয়েছে। এই লাল কার্ড দেখানো থেকে যদি কেউ বাঁচতে গিয়ে আগামী নির্বাচনকে ভন্ডুল করার চেষ্টা করেন, আমরা মহান আল্লাহর ওপর ভরসা করে বলছি, তাঁদের সকল ষড়যন্ত্র এ দেশের সকল সংগ্রামী জনগণ ভন্ডুল করবে ইনশা আল্লাহ।’
জামায়াত আমির বলেন, ‘ফ্যাসিজমের কালো ছায়া বাংলাদেশ থেকে যায়নি। একদল যে অপকর্ম করে চলে গিয়েছে, আরেক দল বাংলাদেশে সেই অপকর্মের দায়িত্ব নিয়েছে। একদল চাঁদাবাজি করার কারণে জনগণের ঘৃণা কুড়িয়েছে, আরেক দল আবার তার চাইতে বেশি শক্তি দিয়ে চাঁদাবাজিতে নেমে পড়েছে।’
তিনি বলেন, ‘একদল দখলদার বনতে গিয়ে জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে, আরেক দল বেপরোয়া দখলদার হয়ে উঠেছে। একদল জনগণের জানমাল নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে, আলেম-ওলামা, বিরোধী রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে হত্যা করেছে, খুন করেছে, ফাঁসি দিয়েছে, নির্যাতন করেছে, জেলে ভরেছে, পঙ্গু করেছে, দেশছাড়া করেছে, আরেক দল ঠিকই একই পথ ধরেছে। এমনকি নিজেদের মধ্যে মারামারিতে নিজেদের শেষ করে দিচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের যুবসমাজ যেই আকাঙ্ক্ষা নিয়ে রক্ত দিয়েছে, তাদের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে আট দল সম্পূর্ণ একমত। এই আকাঙ্ক্ষার বিপক্ষে যারা দাঁড়াবে, জনগণ আগামী নির্বাচনে আর তাদের ক্ষমা করবে না।’
খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা আব্দুল বাসিত আজাদের সভাপতিত্বে ইসলামি ও সমমনা আট দল সিলেট জেলা ও মহানগর নেতাদের যৌথ সঞ্চালনায় এ সমাবেশ হয়। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির সৈয়দ মো. রেজাউল করীম, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির শায়খ মাওলানা মামনুল হক, খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় মহাসচিব মাওলানা আহমদ আবদুল কাদের, জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মাছুম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্দ ইউনুছ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা রেজাউল করিম জালালী, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমির মাওলানা হাবীবুল্লাহ মিয়াজী, নেজামে ইসলাম পার্টির সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুল মজিদ আতাহারি, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির (বিডিপি) সভাপতি অ্যাডভোকেট এ কে এম আনোয়ারুল হক চান, জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের ও জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টর (জাগপা) সহসভাপতি ও মুখপাত্র ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান।