আগের মতো যাত্রীর চাপ নেই মাঝিরঘাট ফেরিঘাটে। মাত্র এক দিনের ব্যবধানে পাল্টে গেছে পুরো চিত্র। ঘাট এলাকায় নেই যাত্রী, শোরগোল নেই চালক আর স্থানীয় ব্যবসায়ীদের। গত শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার পর থেকে খালি পড়ে রয়েছে ফেরিঘাটে থাকা একমাত্র ১ নম্বর পন্টুনটি।
শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় এই ঘাট থেকে সব শেষ ফেরি হিসেবে শিমুলিয়ায় ফিরে যায় ফেরি বেগম রোকেয়া। এর আগেই অপসারণ করা হয়েছে ঘাটে থাকা অপর পন্টুনটি। তবে যাত্রীদের চাপ কিছুটা কম থাকলেও স্বাভাবিক রয়েছে এই রুটের লঞ্চ পারাপার।
পদ্মা সেতুর কারণে ঘাটের এমন বদলে যাওয়া। শনিবার উদ্বোধনের পর রোববার সকাল থেকে পদ্মা সেতুতে চলছে যানবাহন। সকাল থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার যানবাহন পারাপার হচ্ছে পদ্মা সেতু দিয়ে। ফলে যানবাহন ও জনমানবশূন্য হয়ে পড়েছে মাঝিরঘাট ফেরিঘাট। রোববার সকাল থেকে ঘাটে আসেনি কোনো ফেরি। ঘাট থেকে শিমুলিয়ার উদ্দেশেও ছেড়ে যায়নি।
তবে স্বাভাবিকের চেয়ে যাত্রী কিছুটা কম হলেও স্বাভাবিক আছে মাঝিরঘাট লঞ্চ পারাপার। ৩০ মিনিট পরপর এই ঘাট থেকে শিমুলিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যাচ্ছে একটি করে লঞ্চ। প্রতিটি লঞ্চেই যাত্রীদের উপস্থিতি চোখে পড়েছে। তবে তা অন্য সময়ের চেয়ে কম।
ফেরিঘাট যানবাহনশূন্য থাকায় দোকানপাটও বন্ধ। দুই-একটি দোকান খুললেও বেচাবিক্রি ছিল না বললেই চলে। ইতিমধ্যে ঘাটে থাকা অনেক চা-দোকানি তাঁদের দোকান অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছেন।
শরীয়তপুর থেকে ঢাকা যাওয়ার জন্য মাঝিরঘাটে আসা যাত্রী ননী গোপাল দে বলেন, ‘শরীয়তপুর থেকে ডাইরেক্ট বাসে সিট পাই নাই। তাই বাধ্য হয়ে সিটিং গাড়িতে মাঝিরঘাট এসেছি। লঞ্চে পদ্মা পার হয়ে অন্য বাসে ঢাকা যাব। নিয়মিত বাস চলাচল করলে আমাদের ভোগান্তি থাকত না।’
রোববার দীর্ঘ চার ঘণ্টা মাঝিরঘাট ফেরিঘাটে অপেক্ষা করেও কোনো যাত্রী বা যানবাহনের দেখা মেলেনি। মাঝিরঘাট এলাকার বাসিন্দা নেছার মাদবর বলেন, ‘মানুষ সব পদ্মা সেতু দিয়া পার হইতাছে। আমাগো এইহান দিয়া কেউ আহে না। ফেরিঘাটে ফেরি না থাকায় পন্টুনের ওপর লঞ্চ থামাইয়া যাত্রী ওঠানামা করতাছে।’
মাঝিরঘাট শিমুলিয়া নৌপথের ৭টি ফেরিতে প্রতিদিন গড়ে দুই থেকে আড়াই হাজার যানবাহন পারাপার হতো। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে এই রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে।