বুকভরা স্বপ্ন নিয়ে ওমানে পাড়ি জমিয়েছিলেন শ্যামনগর উপজেলার শ্রীফলকাঠি গ্রামের এক সন্তানের জননী নাসিমা খাতুন (২৯)। ভাগ্যের নির্মমতার শিকার হয়ে মাত্র দেড় বছরের মধ্যে লাশ হয়ে জন্মস্থানে ফিরতে হয়েছে ওই গৃহবধূকে। দেনা পরিশোধসহ সংসারের সচ্ছলতা ফেরাতে স্বামী সিরাজুল ইসলামের উৎসাহে মধ্যপ্রাচ্যের দেশে যান নাসিমা। পরিবারের দুঃখ ঘুচতে না ঘুচতেই স্বামীর তালাকের খবরে আড়াই মাস আগে সড়ক দুর্ঘটনায় স্থানীয় এক হাসপাতালে মৃত্যু হয় তার। দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে গত বুধবার মৃতদেহ দেশে ফেরার পর গতকাল বৃহস্পতিবার নিজ গ্রামে তাঁকে দাফন করা হয়েছে।
নিহত গৃহবধূর পিতা বরকত গাজী জানান, টানাপোড়েনের সংসারের অভাব ঘোচাতে স্থানীয় এক আত্মীয়ের সহায়তায় তাঁর মেয়েকে ওমানে পাঠান জামাই সিরাজুল ইসলাম। দেড় বছরের প্রবাসজীবনে নাসিমার উপার্জনের অর্থে যাবতীয় ঋণ পরিশোধের পাশাপাশি অবস্থা ফেরে মেয়ের সংসারে।
তিনি বলেন, দায়দেনামুক্ত হতে না হতেই আকস্মিকভাবে আড়াই মাস আগে নাসিমাকে তালাক দেন তাঁর স্বামী। ঘটনা জানার পাঁচ দিন পর কর্মস্থল থেকে বাসায় ফেরার পথে ওমানের সড়কে দুর্ঘটনার শিকার হন। ১০ দিন স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর মৃত্যু হয় নাসিমার।
নাসিমার ভাই হেলাল হোসেন জানান, তাঁর বোনের পরিশ্রমের টাকায় সংসারের অভাব ঘুচতেই তাঁকে তালাক দেন স্বামী সিরাজুল ইসলাম। মানসিকভাবে ভেঙে পড়ায় তাঁর বোন সেখানে দুর্ঘটনার শিকার হন। তিনি বলেন, প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় প্রায় ২ মাস ১০ দিন পর বুধবার মৃতদেহ দেশে আসার পর বাবার বাড়িতে তাঁকে দাফন করা হয়েছে।
ঈশ্বরীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জি এম শোকর আলী বলেন, ‘দাফনের সময় আমি উপস্থিত ছিলাম। ডিভোর্সের পর স্বামীর পরিবারের সঙ্গে নিহতের পরিবারের সমঝোতা হয়েছে বলে শুনেছি।’