হোম > সারা দেশ > রংপুর

বিক্রয়কেন্দ্র ফাঁকা, সারের মজুত তালাবদ্ধ গুদামে

আশরাফুল আলম আপন (রংপুর) বদরগঞ্জ

রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার কালুপাড়া ইউনিয়নে ডিলারের গুদামে মজুত করে রাখা হয়েছে বিপুল পরিমাণ সার। ছবি: আজকের পত্রিকা

রংপুরের বদরগঞ্জে টিএসপি ও ডিএপিসহ অন্যান্য রাসায়নিক সারের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির অভিযোগ উঠেছে ডিলারদের বিরুদ্ধে। এ কারণে কৃষককে সরকারি দরের চেয়ে বস্তাপ্রতি ১০০-৪০০ টাকা পর্যন্ত বেশি দামে সার কিনতে হচ্ছে।

বাড়তি টাকা খরচ হওয়ায় বোরো চাষ নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন কৃষকেরা। এদিকে কৃষকদের এমন অভিযোগের ভিত্তিতে গত রবি ও সোমবার সরেজমিনে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ১১ জন বিসিআইসি এবং ২৪ জন বিএডিসি সার ডিলার রয়েছেন। তাঁরা নির্ধারিত বিক্রয় কেন্দ্রে সরকারি খুচরা মূল্যে প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) ইউরিয়া ও টিএসপি ১৩৫০, এমওপি (পটাশ) ১০০০ ও ডিএপি সার (ড্যাব) ১০৫০ টাকায় কৃষকদের কাছে বিক্রি করার কথা। কিন্তু সরেজমিনে দেখা গেছে, বাইরে খুচরা সারের দোকানে ইউরিয়া ১৪০০-১৫০০, টিএসপি ১৭০০-১৮০০, পটাশ ও ড্যাব ১২০০-১৩০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

অভিযোগ রয়েছে, কৃষকেরা চাহিদামতো ডিলারদের দোকানে সার পাচ্ছেন না। অধিকাংশ ডিলার সারের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে গোপনে বেশি দামে খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করছেন। তাই বাধ্য হয়ে কৃষকেরা বাইরে থেকে চড়া দামে সার কিনে জমিতে প্রয়োগ করছেন।

সরেজমিনে উপজেলার গোপালপুর, মধুপুর, কালুপাড়া ও বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ডিলারের দোকানে গিয়ে সারের কৃত্রিম সংকটের বিষয়টি এ প্রতিবেদকের হাতে ধরা পড়ে। তাঁদের বিক্রয় কেন্দ্রে তেমন সার না থাকলেও তালাবদ্ধ গোডাউনে মজুত রাখা হয়েছে অনেক সার। কৃষকদের অভিযোগ, ভ্যানে ভ্যানে সেই সার পাচার করা হচ্ছে খুচরা দোকানে।

মধুপুর ইউনিয়নের সন্তোষপুর মুন্সিপাড়া গ্রামের কৃষক আনারুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ডিলারের দোকানে চাহিদামতো সার পাচ্ছি না। সেখানে এক বস্তা ইউরিয়া

ও এক বস্তা পটাশ পেয়েছি। ড্যাব ও টিএসপি সার সেখানে নেই। বাইরের দোকানে ড্যাব ১২০০ এবং টিএসপি ১৮০০ টাকা দাম পাওয়া যাচ্ছে।

এখন সেখান থেকে বেশি দামেই কিনতে হবে।’

উপজেলার সন্তোষপুর খামারবাড়ি বাজারের দুই বন্ধু ট্রেডার্সে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে বিপুল পরিমাণে টিএসপি ও ড্যাব মজুত রয়েছে। প্রথমে বেশি নেওয়ার কথা অস্বীকার করলেও পরে দোকানের স্বত্বাধিকারী সোলেমান আলী বলেন, ‘স্থানীয় ডিলারদের কাছে গিয়ে সার পাচ্ছি না। ব্যবসা ধরে রাখতে গঙ্গাচড়া উপজেলা থেকে বস্তায় এক-দুই শ টাকা বেশি দিয়ে নিয়ে আসছি।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কালা আমেরতল এলাকার আলতাফ নামের এক বিক্রেতা বেশি লাভের জন্য নিয়মিত কালোবাজারে সার বিক্রি করছেন। তবে তাঁর নামে কোনো ডিলারশিপ নেই। তিনি কালুপাড়া ইউনিয়নের ডিলার সুলতানা আখতারের সার তুলে বিক্রি করছেন। সার কেনাবেচার ঝামেলা এড়াতে প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার চুক্তিতে সুলতানার ডিলারশিপটি আলতাফের কাছে বিক্রি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

গত সোমবার দুপুরে আলতাফের দোকানে গিয়ে দেখা গেছে, কয়েকটি ইউরিয়ার বস্তা ছাড়া দোকানে আর তেমন কোনো সার নেই। তবে ওই দিন তাঁর রেজিস্টারে ছিল ইউরিয়া ৭৩৪ বস্তা, পটাশ ৪০৩ বস্তা, ড্যাব ৮৯ বস্তা এবং টিএসপি ১ বস্তা। জানতে চাইলে আলতাফের ছেলে মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘এখানে বিক্রয় কেন্দ্রে সার রাখার জায়গা না থাকায় দুটি গোডাউনে রেখেছি।’

তবে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ডিলারদের কালোবাজারে সার বিক্রি ও কৃষকদের বেশি দামে কেনার অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সেলিনা আখতার ও একই

অফিসের সার মনিটরিং কর্মকর্তা ওসমান গনি। তাঁরা দাবি করে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সারের কোনো সংকট নেই। ন্যায্যমূল্যে কৃষকেরা সার পাচ্ছেন।’

জানতে চাইলে রংপুরের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক রিয়াজ উদ্দিন বলেন, ‘সারের কোনো সংকট নেই। বেশি দামে সার বিক্রির অভিযোগ এই প্রথম আপনার মুখ থেকে শুনলাম। দেখেন আমি কী ব্যবস্থা নিচ্ছি।’ ইউএনও মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘সারের কৃত্রিম সংকটের বিষয়টি আমি কৃষকদের কাছ থেকে শুনেছি। অচিরেই অসাধু ডিলারদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সমাবেশ থেকে ফেরার পথে দুর্ঘটনা, প্রাণ গেল কর্মীর

‘১০ লাখ দিলেই তুমি সভাপতি’ বেরোবি ছাত্রদলের কমিটি নিয়ে অভিযোগ

‘সেবা বন্ধ থুইয়া মানুষোক জিম্মি করি আন্দোলন করেছে, গরিব মানুষ কোনঠে যাইবে’

স্থগিতাদেশ তুলে ব্রাকসুর নতুন রোডম্যাপ প্রকাশ

একটি শ্রেণি সংস্কার ছাড়াই ক্ষমতায় যেতে ‘ডাবল পাগল’ হয়ে গেছে: রেজাউল করীম

বাসের ধাক্কায় অটোরিকশার যাত্রী নিহত

পাঁচ দফা দাবিতে রংপুরে সমমনা ৮ দলের বিভাগীয় সমাবেশ আজ, দলে দলে আসছেন নেতা-কর্মীরা

শ্বশুর-জামাইকে পিটিয়ে হত্যায় জড়িতের অভিযোগে যুবক গ্রেপ্তার

নীলফামারীতে গৃহবধূকে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে ২ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

স্বামীকে হত্যার দায়ে স্ত্রী ও তাঁর প্রেমিকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড