পারিবারিকভাবে ২০২২ সালের আগস্টে বিয়ে হয় পিয়াল ও মিতুর। দাম্পত্য জীবন বেশ সুখেই কাটছিল। ২৭ আগস্ট পিয়ালের অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সড়ক দুর্ঘটনায় সব স্বপ্ন শেষে হয়ে যায়। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই মারা যান পিয়াল।
এই সময় গুরুতর আহত হন মিতু। হাসপাতাল থেকে হাসপাতাল ঘুরে সাত দিন পর তিনিও হেরে গেলেন। এই নবদম্পতির মৃত্যুতে দুই পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
পরিবারের সূত্রে জানা যায়, গত ১৭ আগস্ট ঢাকা থেকে মোটরসাইকেল যোগে পিয়াল ও মিতু কুড়িগ্রামের উদ্দেশে রওনা দেন। ওই দিন সন্ধ্যার দিকে গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জে পৌঁছালে তাঁদের মোটরসাইকেলটি দুর্ঘটনার কবলে পড়েন। ঘটনাস্থলেই মারা যান পিয়াল। পরে স্থানীয়রা মিতুকে গোবিন্দগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।চিকিৎসকেরা তাঁকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন।
মিম্মা আরা মিতু (২৪) উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের ঘোলদার পাড়ার সাবেক সেনা সদস্য মিজানুর রহমান দুলুর মেয়ে। দুই বোন এক ভাইয়ের মধ্যে মিতু সবার বড়। তিনি সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। স্বামীর চাকরির সুবাদে ঢাকায় বসবাস করতেন তাঁরা।
পিয়ালের ছোট ভাই দারুদ রিয়াল আমান জানান, গত বছরের ১৮ আগস্ট পিয়াল ও মিতুর বিয়ে হয়। ভাই-বোনদের মধ্যে সবার বড় ছিলেন পিয়াল। পিয়াল কুড়িগ্রাম সরকারি পলিটেকনিক্যাল থেকে পাশ করার পর ঢাকায় বিএসসি করেন। এরপর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি নেন। ওই কোম্পানি থেকে পিয়াল অস্ট্রেলিয়ায় দুই বছর মেয়াদের চাকরির সুযোগ পান। ২৭ আগস্ট তাঁর অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার কথা ছিল। এ জন্যই বাড়ি আসছিলেন।
পিয়াল হাসান (৩০) চিলমারী উপজেলার রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের ময়নার খামার গ্রামের শাহ আলমের ছেলে।
এদিকে আজ শনিবার সকালে ঢাকা থেকে মিতুর মরদেহ গ্রামে পৌঁছালে একনজর দেখার জন্য আশপাশের লোকজন একনজর দেখতে ছুটে যান। ঘোলদার পাড় গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে তাঁর লাশ দাফন করা হয়।
হাতিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শায়খুল ইসলাম নয়া শোক প্রকাশ করে বলেন, ‘ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। স্বামীর পর স্ত্রী মিতু মৃত্যুবরণ করেছেন। আমাদের সবাইকে সাবধানে মোটরসাইকেল চালানো দরকার। সবার সচেতনতা প্রয়োজন।’