১০৫ বছর বয়স। কিন্তু নড়বড়ে হয়নি একটি দাঁতও, পরতে হয় না চশমা। এই বয়সেও দিব্যি হেঁটে চলাফেরা করেন রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার লতিবপুর ইউনিয়নের নিঝাল গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রহিম।
গতকাল শুক্রবার সকালে উপজেলা সদরের মোহনা হোটেলের সামনে বসে ভিক্ষা করছিলেন বৃদ্ধ আব্দুর রহিম। তিনি একটি চাকু দিয়ে সুপারি কাটছিলেন। তাঁর কাছে গিয়ে জানতে চাওয়া হয়, এই বয়সেও কি সুপারি চিবোতে পারেন?
প্রশ্ন শুনে মুচকি হাসলেন রহিম। জানালেন, তাঁর দাঁত পড়েনি, এমনকি নড়বড়েও হয়নি। আলাপচারিতার মাঝেই পান-সুপারি মুখে দিয়ে কাপড়ের পোঁটলা থেকে চুনের ডিব্বা বের করলেন। তিনি জানান, তাঁর বয়স এখন ১০৫ বছর। মুক্তিযুদ্ধের সময় তাঁর বয়স ছিল ৫১ বছর।
পাঁচ ছেলে ও তিন মেয়ের জনক আব্দুর রহিম এখনো বেশ সক্ষম। তিনি বলেন, তাঁর ছেলে-মেয়েদের দেখলে তাঁদেরই বয়স বেশি মনে হবে। তাঁর আপন চার ছোট ভাই অনেক আগে মারা গেছেন। মাথার চুল দেখিয়ে তিনি বললেন, এখনো কিছুটা চুল কালো রয়েছে।
এত বয়সেও শারীরিক সক্ষমতা ঠিক থাকার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ভিক্ষা করি বটে, তবে ভালো খাবার খাই। নিয়মিত দাঁত ব্রাশ করি, মাথায় তেল দিই। ডিম ও কলা খাই। নিয়মিত গোসল করি এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের চেষ্টা করি।’
৯ ছেলে-মেয়ে থাকতেও কেন ভিক্ষা করেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ছেলে-মেয়েদের সংসার ঠিকমতো চলে না। কেউ চট্টগ্রাম, কেউ ঢাকায় থাকে, অন্যরা কৃষিশ্রমিকের কাজ করে। আমার স্ত্রী বেঁচে আছেন, তবে তিনি এখন অচল হয়ে পড়েছেন।’
জীবনের এই দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ধনদৌলত, হায়াত-মৌত আল্লাহর হাতে। তাঁর (স্রষ্টার) রহমতেই এখনো বেঁচে আছি এবং ভালো আছি। তবে আমার টাকার দরকার।’