হোম > সারা দেশ > রাজশাহী

‘বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়ন ব্যয়ের এক-তৃতীয়াংশই ক্যাপাসিটি চার্জ’

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহীতে ন্যায্য জ্বালানি রূপান্তর বিষয়ে ক্যাবের প্রস্তাবিত জ্বালানি রূপান্তর নীতি-২০২৪ এর আলোকে আলোচনা সভা। ছবি: আজকের পত্রিকা

দেড় দশকে বিদ্যুৎ খাত উন্নয়নে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী সরকার ব্যয় করেছে ৩ লাখ কোটি টাকা। তার মধ্যে ক্যাপাসিটি চার্জই ছিল ১ লাখ ৬ হাজার কোটি টাকা। প্রয়োজন না থাকলেও অতিরিক্ত বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। উচ্চমূল্যের এসব বিদ্যুৎকেন্দ্র বসিয়ে রেখে বছরের পর বছর ক্যাপাসিটি চার্জের নামে দেড় দশকে বিপুল টাকা ক্ষমতাসীন সুবিধাভোগী ব্যক্তিদের পকেটে চলে গেছে। এতে বিদ্যুৎ খাতের ব্যয় দিনে দিনে বেড়েছে। আর এই ব্যয়ের দায় চেপেছে জনগণের ঘাড়ে। এ কারণে দফায় দফায় বেড়েছে বিদ্যুতের দামও।

আজ বৃহস্পতিবার রাজশাহীতে ন্যায্য জ্বালানি রূপান্তর বিষয়ে কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) প্রস্তাবিত জ্বালানি রূপান্তর নীতি-২০২৪-এর আলোকে ‘জ্বালানি খাত উন্নয়নে সুবিচার সংকট’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এ তথ্য উঠে এসেছে। সকালে নগরের একটি রেস্তোরাঁর সম্মেলনকক্ষে গণমাধ্যমকর্মীদের নিয়ে সভাটির আয়োজন করে ক্যাবের যুব সংসদ, রাজশাহী।

সভায় জানানো হয়, বিশ্বের নানা দেশে বিদ্যুতের উৎপাদনক্ষমতা চাহিদার চেয়ে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ বেশি রাখাই নিয়ম, যাকে বলা হয় রিজার্ভ মার্জিন। এটি সাধারণত অব্যবহৃতই থাকে। কিন্তু বাংলাদেশের রিজার্ভ মার্জিন ৩৫ শতাংশের বেশি। অতিরিক্ত সক্ষমতার কারণে সরকারকে অনেকগুলো বিদ্যুৎকেন্দ্র অলস বসিয়ে রাখতে হচ্ছে। আর সরকারি কোষাগার থেকে তাদের জন্য গুনতে হচ্ছে ক্যাপাসিটি চার্জ। ক্যাপাসিটি চার্জ হচ্ছে এমন চার্জ, যা বিদ্যুৎ উৎপাদন না হলেও উৎপাদনক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে কেন্দ্রগুলোকে দেওয়া হয়। বিদ্যুৎ খাতের জন্য দেওয়া ভর্তুকির ৮১ শতাংশই ব্যয় হয় এই ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধে।

সভায় আরও বলা হয়, ২০১০ সালে রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট নাম দিয়ে বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সূচনা হয়। বেসরকারি খাতে সুযোগ মানে উন্মুক্ত প্রতিযোগিতা। কিন্তু সেটি না করে সরকার গোষ্ঠীবিশেষকে প্রতিযোগিতাহীন বিনিয়োগের সুযোগ করে দিয়েছে। ফলে জ্বালানি খাতে ভয়াবহ লুণ্ঠনের সুযোগ সৃষ্টি হয়। কমিশন বাণিজ্যের জন্য রাজনীতিবিদ ও আমলারা এসব অপরিকল্পিত ও অপ্রয়োজনীয় বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে অনুমোদন দিয়েছেন। জনতুষ্টির জন্য নেওয়া এসব উদ্যোগ আস্থাভাজন উদ্যোক্তা গোষ্ঠীকে সুবিধা পাইয়ে দিতে করা হয়। এসব বিদ্যুৎকেন্দ্র বছরের বেশির ভাগ সময় অলস পড়ে আছে। কিন্তু দিতে হচ্ছে ক্যাপাসিটি চার্জ।

সভায় জানানো হয়, দেশে বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২৬ হাজার ৫৭৮ মেগাওয়াট। এর মধ্যে স্বাভাবিক সময়ে বিদ্যুৎ ব্যবহার হয় সাড়ে ১৩ হাজার মেগাওয়াট। আর তাপমাত্রা বাড়লে তা দাঁড়ায় সাড়ে ১৬ হাজার মেগাওয়াট। অর্থাৎ, সর্বোচ্চ সক্ষমতার বিদ্যুৎ ব্যবহার ধরলেও প্রায় ১১ হাজার মেগাওয়াট সক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র অলস বসে থাকে। অনিশ্চিত উৎসের ওপর ভর করে একের পর এক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ সরকারের দেনা বাড়িয়েছে। তরল জ্বালানি ব্যবহারে উৎপাদনের বাড়তি খরচ শেষ পর্যন্ত গ্রাহকের ওপরে পড়েছে।

ক্যাবের রাজশাহী যুব সংসদের সভাপতি জুলফিকার আলী হায়দারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ক্যাবের উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম। সভা পরিচালনা করেন ক্যাবের জেলার সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা মামুন। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী নাজিফা তাজনুর ও অরিত্র রোদ্দুর ধর।

বক্তারা গণমাধ্যমকে ন্যায্য জ্বালানি রূপান্তর বিষয়ে জনগণকে সচেতন করতে অগ্রণী ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান। পাশাপাশি নবায়নযোগ্য জ্বালানির ওপর জোর দেওয়ারও আহ্বান জানান তাঁরা। বক্তারা বলেন, ‘জ্বালানি খাতকে টেকসই, সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব করতে হলে একটি কার্যকর নীতি গ্রহণ সময়ের দাবি। ক্যাব প্রস্তাবিত জ্বালানি রূপান্তর নীতি-২০২৪ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য নিরাপদ জ্বালানি নিশ্চিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’

জমিতে পুকুর কাটতে বাধা দেওয়ায় কৃষককে ভেকুচাপায় হত্যার অভিযোগ

মুরগি মারার অভিযোগে প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে মামলা

৬ বছর পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বাদশ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত

নওগাঁয় বাসচাপায় কারারক্ষী নিহত

চায়না কমলা চাষে বাজিমাত এমরানের, মাল্টাতেও মিলছে সাফল্য

রাবিতে ‘রাজাকার, আলবদর, আলশামস’ প্রতিকৃতিতে জুতা নিক্ষেপ

শিশু সাজিদের মৃত্যু: মামলা করবে না পরিবার, ডিসি বললেন মামলা হবে

ব্যবসায়ীর দোকানে হামলা, মারধর করে টাকা লুটের অভিযোগ

স্কুলছাত্রীকে শ্লীলতাহানির মামলায় ছাত্রদল নেতা কারাগারে

বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় সমাবর্তন ২১ ডিসেম্বর