রাজশাহীতে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিবদমান জমি একপক্ষ দখল করে নিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ৬ ডিসেম্বর রাজশাহী নগরীর কাটাখালী থানার আশরাফের মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আজ মঙ্গলবার সকালে আশরাফের মোড় এলাকায় এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে আজিজুল হক নামের এক ব্যক্তি এই অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আশরাফের মোড় এলাকায় রনহাট মৌজায় তাঁর প্রায় ১০ কাঠা জমি আছে। ওই জমি তিনি ১৯৭৯ সালে চাচা ইউসুফ কবিরাজের কাছ থেকে কেনেন। এরপর জমি ভোগদখল করছিলেন। খারিজ করে নিয়মিত খাজনাও পরিশোধ করছেন। তবে ১৯৯৬ সালে ইউসুফ কবিরাজের মৃত্যুর পর তাঁর দুই ছেলে আবদুর রাজ্জাক ও মো. রেজাউল দাবি করেন, তাঁদের বাবা এই জমি বিক্রি করেননি। তাঁরা জমির খারিজ বাতিলের জন্য ভূমি অফিসে আবেদন করেন; কিন্তু ভূমি অফিস জানিয়ে দেয়, জমি সঠিকভাবেই বিক্রি হয়েছে। এরপর তাঁরা আদালতে মামলা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আজিজুল হক আরও জানান, রাজশাহীর আদালতে দুদফা রায় হয়েছে তাঁর পক্ষে। কিন্তু রায়ের বিরুদ্ধে তাঁরা উচ্চ আদালতে আপিল করেন। সেখানে মামলাটি বিচারাধীন। ইতিমধ্যে আদালত নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন যেন কোনো পক্ষই সেখানে না যায়; কিন্তু গত ৬ ডিসেম্বর আবদুর রাজ্জাক ও রেজাউলসহ তাঁদের স্বজনেরা জমিতে গিয়ে আজিজুলের একটি ইটের দোকানঘর ও একটি গুদাম গুঁড়িয়ে দেন। এরপর তাঁরা বেড়া দিয়ে জমিটি ঘিরে দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। পুলিশ এ ব্যাপারে থানায় মামলা করতেও ডাকে; কিন্তু তিন দফা থানায় যাওয়া হলেও মামলা নেওয়া হয়নি। শুধু একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, প্রতিপক্ষের লোকেরা এখন প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছেন আজিজুলকে। তাই তিনি ও তাঁর পরিবার এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। সংবাদ সম্মেলন থেকে তিনি নিজের নিরাপত্তা চান। এ ছাড়া জমি দখলমুক্ত করতে পুলিশের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আবদুর রাজ্জাকের ছেলে মো. রাজিব বলেন, ‘আমার দাদা ইউসুফ কবিরাজ জমি বিক্রি করেননি। আজিজুল হক নিজের নামে জাল দলিল করে জমি খারিজ করে নিয়েছেন। এর তিন বছর আগেই দাদা আমার দাদি হালেমা বেগমকে জমি লিখে দেন; কিন্তু সে সময় জমি খারিজ করা হয়নি বলে এখন এত ঝামেলা হচ্ছে।’
এ নিয়ে জানতে চাইলে কাটাখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘জমির ব্যাপারে আসলে পুলিশের কিছু করার নেই। জমিকে কেন্দ্র করে মারামারি-সহিংসতা হলে তখন মামলা হতে পারে। এখন পুলিশ কোনো কিছু করতে পারে না। ওই জমিতে আদালতের নিষেধাজ্ঞা জারি আছে। আদালত চূড়ান্তভাবে যে সিদ্ধান্ত দেবেন, তিনিই জমি পাবেন।’