ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভারত সীমান্ত অভিমুখে আইনজীবীদের লংমার্চ শুরু হয়েছে। অভিন্ন নদীতে ভারতের একতরফা পানি প্রত্যাহার ও বিএসএফের হত্যার প্রতিবাদসহ চার দফা দাবিতে ভারত সীমান্ত অভিমুখে লংমার্চ করছেন আইনজীবীরা।
ভয়েস অব ল ইয়ার্স বাংলাদেশের উদ্যোগে শুক্রবার ঢাকা থেকে শুরু হওয়া লংমার্চটি আজ শনিবার সকাল ১০টায় চাঁপাইনবাবগঞ্জে এসে পৌঁছায়। পরে জেলা আইনজীবী সমিতি থেকে লংমার্চটি জেলা শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজ গেটে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট ইসহাক আলীর সভাপতিত্বে পথসভা অনুষ্ঠিত হয়।
পথসভায় বক্তব্য দেন ভয়েস অব ল ইয়ার্স বাংলাদেশের আহ্বায়ক ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আশরাফ উজ জামান, লংমার্চ বাস্তবায়ন কমিটির সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেনসহ অ্যাডভোকেট মাঈন উদ্দিন ফারুকী, সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক মো. মোস্তফা আল ইয়াহয়া প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, সীমান্তে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। তারা শান্তিপ্রিয় বাংলাদেশি কৃষকদের একের পর এক হত্যা করছে এবং নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত বিএসএফ সদস্যদের হাতে প্রায় ৬০৭ জন বাংলাদেশি নিহত ও ৭৬১ জন আহত হয়েছে।
বক্তারা আরও বলেন, ৫ আগস্টের পর ৩৯ জন বাংলাদেশি নাগরিককে হত্যা করেছে বিএসএফ। চলতি বছরের ৭ মে থেকে আন্তর্জাতিক সীমান্ত নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘন করে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অবৈধভাবে পুশ ইন শুরু করে ভারত, যা এখন পর্যন্ত চলমান।
বক্তারা পথসভায় লংমার্চের চারটি দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো—ভারত কর্তৃক ফারাক্কা, তিস্তা, টিপাইমুখসহ বাংলাদেশের ৫৪টি নদী থেকে একতরফা পানি প্রত্যাহার নীতি থেকে সরে যেতে হবে; বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফের প্রতিনিয়ত মানুষ হত্যা বন্ধ করতে হবে; অবৈধভাবে ভারতীয় বাহিনীর দখলে রাখা তালপট্টি ছেড়ে দিতে হবে এবং ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার করা শেখ হাসিনাসহ তাঁর দোসরদের সহযোগিতা ও আশ্রয় দেওয়া যাবে না।
লংমার্চ বাস্তবায়ন কমিটির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শাহ আহমদ বাদল জানান, ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে শুরু হওয়া লংমার্চটি গাজীপুর, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, নাটোর ও রাজশাহী হয়ে আজ চাঁপাইনবাবগঞ্জে।
পথসভা শেষে আবারও চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ সীমান্ত অভিমুখে রওনা দেয় লংমার্চটি। বিকেলে সোনামসজিদ সীমান্তে গিয়ে শেষ হবে দুই দিনের লংমার্চ কর্মসূচি।