‘হামার ছয় বছরের মেয়ে সারাবান তহুরা এই বাঁশের সাঁকো দিয়ে স্কুলে যায়। এরই মধ্যে তিনবার পুকুরে পড়ে গেছে। ভাগ্য ভালো, প্রতিবেশীরা দেখে ফেলায় প্রাণে বাঁচিচে। কিন্তু প্রতিদিন তো কেউ থাকে না।’ কথাগুলো বলছিলেন জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার সাঁতার পূর্বপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ইউসুব আলী।
এই একটি বক্তব্যেই যেন ফুটে উঠেছে শতাধিক পরিবারের নিত্যদিনের দুর্ভোগ। দীর্ঘ আট মাস ধরে একটি বাঁশের সাঁকোর ওপর ভর করে ঝুঁকি নিয়ে চলাফেরা করছেন তারা।
সরেজমিনে জানা গেছে, কালাই উপজেলার মাত্রাই ইউনিয়নের সাঁতার পূর্বপাড়া গ্রামের ‘মাগুড়া গাড়ি’ নামে দুই বিঘার সরকারি খাস পুকুরে মাছ চাষের জন্য ইজারা দেওয়া হয়েছে। এর ফলে পুকুরের পাশঘেঁষা মূল চলাচলের রাস্তা পানিতে বিলীন হয়ে গেছে। এতে এলাকাবাসীর চলাফেরা কঠিন হয়ে পড়ে।
বাধ্য হয়ে গ্রামবাসী নিজেদের উদ্যোগে ১ লাখ টাকা ব্যয়ে তিন দিনে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে একটি অস্থায়ী সাঁকো তৈরি করে। তবে সেটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
স্থানীয় বাসিন্দা বৃদ্ধ একাব্বর হোসেন বলেন, ‘জরুরি দরকার ছাড়া বাইরে বের হই না। সাঁকোর কথা ভাবলেই ভয় লাগে। পা ফসকে গেলে আর উঠে দাঁড়াতে পারব না।’
আশরাফ আলী নামে আরেকজন বলেন, ‘গর্ভবতী মায়েদের হাসপাতালে নিতে হলে সবচেয়ে বেশি আতঙ্কে থাকতে হয়।’
অভিভাবকদের অভিযোগ, শিশুদের স্কুলে যাওয়া-আসার সময় প্রতিটি মুহূর্তেই দুর্ঘটনার শঙ্কা থাকে। সব সময় কেউ সঙ্গে যেতে পারে না, অনেক সময় শিশুদের একাই যেতে হয়।
বিষয়টি নিয়ে কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামিমা আক্তার জাহান বলেন, ‘এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। আমরা সরেজমিনে গিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেব।’
এলাকাবাসীর দাবি, দ্রুত পুকুর ভরাট করে আগের মতো সড়কটি পুনর্নির্মাণ করা হোক, যেন তারা নিরাপদে চলাচল করতে পারে।