পাবনার কাজিরহাট-আরিচা নৌপথে স্পিডবোট পারাপারে নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বোটমালিকদের বিরুদ্ধে। ২১০ টাকার ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ২৫০ টাকা। এ ছাড়া অতিরিক্ত যাত্রী বহন এবং পর্যাপ্ত লাইফ জ্যাকেট সরবরাহ না করারও অভিযোগ রয়েছে।
জানা গেছে, গত ৯ এপ্রিল আরিচা-কাজিরহাট নৌপথে স্পিডবোটের যাত্রীভাড়া ২১০ টাকা নির্ধারণ করে দেয় বিআইডব্লিউটিএ। কিন্তু এ ভাড়া মানছেন না বোটমালিকেরা।
গত রোববার কাজিরহাট ঘাট এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কাউন্টার থেকে ২৫০ টাকায় স্পিডবোটের টিকিট নিচ্ছেন যাত্রীরা। টিকিটে ২৫০ টাকাই লেখা রয়েছে। তবে টিকিটে বিআইডব্লিউটিএ বা সংশ্লিষ্ট কোনো প্রতিষ্ঠানের সিল নেই। এ দিকে ঘাট ফি’র নামে নেওয়া হচ্ছে আরও ৫ টাকা। সব মিলিয়ে যাত্রীদের গুণতে হচ্ছে হচ্ছে ২৫৫ টাকা।
রাশিদুল ইসলাম নামের এক যাত্রী বলেন, ‘কাউন্টারে গেলে অতিরিক্ত কোনো কথা বলার সুযোগ নেই। এই ভাড়াতেই যেতে হবে, না হলে অন্যভাবে যান বলে অপমানজনক আচরণ করা হয়।’
দুলাল হোসেন ও শরিফুল ইসলামসহ আরও কয়েক যাত্রী বলেন, ‘যে বোটটি ছাড়বে, দেখুন এতে ২০-২২ জন যাত্রী তোলা হয়েছে। এভাবে ঠাসাঠাসি করে বসা যায় না জানালে চালকেরা দুর্ব্যবহার করে। এভাবেই অনিরাপত্তা ও ভোগান্তিতে নদী পার হতে হয় যাত্রীদের।’
স্পিডবোটচালক শফিকুল ইসলাম ও শামিম হোসেন বলেন, ‘এক ট্রিপে ২২ লিটার তেল লাগে। সে হিসাবে ২৭০০-২৯০০ টাকার তেল লাগে। সঙ্গে চালক ও ঘাট খরচ আছে। এসব খরচ মিটিয়ে মালিকদের কিছুই থাকে না। সরকারনির্ধারিত ভাড়ায় স্পিডবোট চালালে মালিকেরা লোকসানে পড়বেন।’
বোটমালিক সমিতির সভাপতি রইস উদ্দিন বলেন, অনেক আগে থেকেই ২৫০ টাকাই নেওয়া হয়। ওইভাবেই নেওয়া হচ্ছিল। এখন সপ্তাহ দুয়েক আগে প্রজ্ঞাপন হয়েছে নতুন ভাড়ার। দ্রুতই ভাড়া আদায়ের ব্যাপারটা সমন্বয় করা হবে।
বিআইডব্লিউটিএ সূত্র বলছে, আরিচা ও কাজিরহাট দুই পাড়ে এখন মোট ১৪২টি স্পিডবোট চলাচল করছে।
বিআইডব্লিউটিএর নগরবাড়ী-কাজীরহাট ঘাট কার্যালয়ের পোর্ট অফিসার আব্দুল ওয়াকিল বলেন, ‘সপ্তাহ দুয়েক আগে এই রুটে ২১০ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। আমরা ইতিমধ্যে বোটমালিকদের সঙ্গে নতুন ভাড়া আদায় ও অন্যান্য নিয়ম পালনের ব্যাপারে কথা বলেছি। কিন্তু তাঁরা সেই অতিরিক্ত ভাড়া আদায় এখনো অব্যাহত রেখেছেন।’
পাবনার বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোরশেদুল ইসলাম বলেন, ‘কয়েকদিন আগেও আমরা অভিযান চালিয়ে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছি। কিন্তু এতেও অনিয়ম বন্ধ হচ্ছে না। অভিযানে গেলে দুইপাড় থেকেই বোট চালানো বন্ধ করে দেয়। এরপরও আমরা তৎপর রয়েছি।’