নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় চরের জমির দখল নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার সংঘর্ষ ও গোলাগুলিতে ৫ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে সুখচর ইউনিয়নের চর আমান উল্যাহ গ্রামের মহিউদ্দিনের ছেলে মো. আলাউদ্দিন নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। আর চারজনের মৃতদেহ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল আলম গতকাল সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন নিহত চার জনের মধ্যে জাহাজমারা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মো. সামছু রয়েছেন।
তবে আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে হাতিয়া থানায় এসে নিজের সন্তানের মৃতদেহ শনাক্ত করেন সামছুর স্ত্রী মাহফুজা বেগম। এ সময় মাহফুজার সঙ্গে তার বড় ছেলে ফখরুল ইসলামও ছিলেন। ফখরুল ইসলাম জানান, তার পিতাকে কিছু লোকজন চরের ভূমির লোভ দেখিয়ে নিয়ে আসে। থানায় এসে ভাইয়ের মৃতদেহ পেয়েছেন। কিন্তু পিতার মৃতদেহ পাননি। তার বাবাকে উদ্ধারে তারা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
নিহতদের স্বজনদের বরাত দিয়ে আজ বুধবার হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, সংঘর্ষ ও গোলাগুলিতে নিহত ৫ জন হলেন উপজেলার সুখচর ইউনিয়নের চর আমান উল্যাহ গ্রামের মহি উদ্দিনের ছেলে মো. আলা উদ্দিন, জাহাজমারা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডে মো. সামছুর ছেলে মোবারক হোসেন সিহাব, সুবর্নচর উপজেলার চরমজিদ ইউনিয়নের জয়নাল আবেদিনের ছেলে আবুল কাশেম, হাতিয়া পৌরসভার পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের হকসাব ও উপজেলার চানন্দী ইউনিয়ন কামাল উদ্দিন।
এই ঘটনায় সোরাব উদ্দিন নামে আহত একজনকে পুলিশ উদ্ধার করে হাতিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করে। তার বাড়ী নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নে।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার সুখচর ইউনিয়নের ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সীমান্তবর্তী জাগলার চরে এ সংর্ঘষ ও গোলাগুলি হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার জাগলারচরের জমি সরকার এখন পর্যন্ত কাউকে বন্দোবস্ত দেয়নি। এ সুযোগে ৫ আগস্টের পর জাহাজমারা ইউনিয়নের কোপা সামছু বাহিনী জাগলারচরের বেশ কিছু জমি বিক্রি করে। কিছু দিন পর পাশ্ববর্তী সুখচর ইউনিয়নের আলাউদ্দিন বাহিনী জাগলার চরের জমির দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠে। এ নিয়ে গত দুমাস ধরে উভয় গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ চলে আসছে। এতে সামছু চরের দক্ষিণ পাশে চরকিং ইউনিয়নের সীমানায় আর উত্তর পাশে সুখচর ইউনিয়ন সীমানায় অবস্থান নেয় আলাউদ্দিন গ্রুপ।
হাতিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল আলম বলেন, গোলাগুলির ঘটনায় সামছু নামে একজন নিখোঁজ রয়েছে। চরে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও পাওয়া যায়নি। থানায় আনা নিহত চারজনকে ময়না তদন্তের জন্য নোয়াখালী জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় এখনো কেউ লিখিত কোনো অভিযোগ দেয়নি।