নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে জোবেদা খাতুন (৭৫) নামের এক বৃদ্ধার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ সোমবার সকালে পৌর শহরের টেংগাপাড়া এলাকায় নিজ বাড়ির পুকুরপাড়ের একটি আমগাছে লাশটি পাওয়া যায়। মোহনগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জোবেদা খাতুন মোহনগঞ্জ পৌর শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডের টেংগাপাড়া এলাকার মৃত মো. মিছিল মিয়ার স্ত্রী। জোবেদা খাতুনের আগের ও বর্তমান দুই সংসারে দুই ছেলে ও চার মেয়ে রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রতিবেশী জানান, ছেলের বউদের সঙ্গে জোবেদার বনিবনা হচ্ছিল না। পাশেই মেয়েদের বাসায় থাকতেন তিনি। ভোররাত ৫টার দিকে মেয়ের বাসা থেকে নিজের বাড়িতে আসেন জোবেদা। পরে সকাল ৬টার দিকে ছোট ছেলের বাসার পাশের পুকুরপাড়ে একটি আমগাছে দড়ি দিয়ে জোবেদার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান এলাকাবাসী। পরে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। তবে জোবেদার শরীরের কাপড়চোপড় ও মাথার চুল ভেজা ছিল। এতে সবার সন্দেহ ধানা বাঁধে। তাঁরা জানান, জোবেদা স্ট্রোকে প্যারালাইজড ছিলেন। দুই লাঠিতে ভর দিয়ে সামান্য একটু সোজা হয়ে এক পা, দুই পা হাঁটতেন। তিনি কীভাবে এত উঁচু গাছে ফাঁস লাগাবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন প্রতিবেশীরা। তাঁদের সন্দেহ তাঁকে কেউ পানিতে চুবিয়ে হত্যার পর গাছে ঝুলিয়ে রেখেছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে জোবেদার দুই ছেলেকে পাওয়া যায়নি। আর মেয়েরা এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সাজ্জাদুল আলম শিবলী বলেন, ‘কিছু দিন আগে স্ট্রোক করে ওই নারীর অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। প্যারালাইজডের মতোই। বিছানা থেকে উঠতে পারতেন না। তারপর লাঠি দিয়ে ধীরে ধীরে হাঁটতেন। যে গাছটায় ফাঁস লাগানো পাওয়া গেছে, ওই গাছের ডালে তাঁর পক্ষে দড়ি লাগানো সম্ভব নয়। এমনকি সুস্থ-সবল মানুষের পক্ষে ওই ডালে ফাঁস নেওয়া কষ্টকর হবে। বিষয়টা দেখে অবাক হয়েছি। লাশ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্টে সব জানা যাবে।’
ওসি আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘এ ঘটনায় জোবেদার দুই সংসারের ছেলেমেয়ে ঝগড়া শুরু করে। পরে অবশ্য তারা সবাই মিলে এসেছিল, ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ নিয়ে যেতে। কিন্তু দেওয়া হয়নি। মৃত্যু ঘিরে যেহেতু রহস্য তৈরি হয়েছে, তাই কারণ জানতে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নেত্রকোনা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হচ্ছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’