নান্দাইলে দেনাদারদের (যাদের কাছ থেকে টাকা পাবে) নাম ও টাকার পরিমাণ উল্লেখ করে পাওনাদারের (যিনি টাকা পাবেন) টাঙানো ব্যানার সরিয়ে দিয়েছেন পুলিশ। গতকাল বুধবার বিকালে নান্দাইল মডেল থানা পুলিশ ব্যানারটি সরিয়ে দেন এবং পাওনাদার কাঠুরিয়া ইনতাজ আলী ব্যাপারীকে তার পাওনা টাকা আদায়ে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
এর আগে পাওনাদারদের কাছ থেকে টাকা ফেরত না পেয়ে অভিনব কৌশল অবলম্বন করে ডিজিটাল ব্যানার টানিয়ে দেন ইনতাজ আলী ব্যাপারী। ব্যানারে ৬ জন দেনাদারের নাম এবং তাদের কাছে বকেয়া টাকার পরিমাণ উল্লেখ করা ছিল। এই ঘটনা নিয়ে আজকের পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে `ব্যানার টানিয়ে দেনাদারদের নাম-টাকার অঙ্ক প্রকাশ কাঠুরিয়ার' শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হলে বিষয়টি জানাজানি হয়।
উপজেলার আচারগাঁও ইউনিয়নের টঙ্গির চর এলাকার বাসিন্দা ইনতাজ আলী ব্যাপারী প্রায় ৩০ বছর ধরে কাঠ কেটে জীবিকা নির্বাহ করতেন। বর্তমানে বয়সজনিত কারণে তিনি আর আগের মতো কাজ করতে পারেন না। গত পাঁচ বছরে ছয়জনের কাছে পাওনা ২৫ হাজার টাকা ফেরত পেতে বহু চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। এমনকি থানায় অভিযোগ করেও কোনো সমাধান পাননি। এই হতাশা থেকেই তিনি ক্ষোভে ৪ বাই ৫ ইঞ্চি আকারের একটি ডিজিটাল ব্যানার তৈরি করে বিভিন্ন জায়গায় টাঙিয়ে দেন।
ডিজিটাল ব্যানারে লেখা ছিল ইনতাজ আলী পাওনাদার-দিলু ব্যাপারী ৬ হাজার টাকা, হুমায়ুন ব্যাপারী ২ হাজার ৬০০, সুজন ব্যাপারী ৭৫০, নজরুল ব্যাপারী ২ হাজার ৪০০, বারেক গাছের ব্যাপারী ১৩ হাজার ও রতন গাছ কাটে ২০০ টাকা। ব্যানারের নিচে লেখা রয়েছে- থানা থেকে অর্ডার, এই বিষয়টা এলাকাবাসীকে জানানোর জন্য। যদি এই টাকা না দেন তাহলে থানায় মামলা হবে।
ইনতাজ আলী ব্যাপারী বলেন - টেহার (টাকা) লাইগ্যাই তো ব্যানার দিছিলাম। এহন (এখন) পুলিশ আইসা ব্যানার সরাইয়া দিছে। তারা এহন টেহার ব্যবস্থা কইরা দিব আমারে বলে গেছে।
নান্দাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার জালাল উদ্দিন মাহমুদ জানান, ইনতাজ আলী পাওনাদারদের কাছে টাকা না পেয়ে এই ধরনের কাজ করেছেন। বিষয়টি নজরে আসার পর তাকে টাকা আদায়ে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছি।