ময়মনসিংহে টনসিল অপারেশনে গিয়ে তাইয়্যিবা তাবাসসুম তন্দ্রা (১২) নামের এক স্কুলছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। গত শনিবার রাতে ময়মনসিংহ শহরের চরপাড়া এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। চিকিৎসক টনসিল অপারেশন করতে গিয়ে তন্দ্রার শ্বাসনালি কেটে ফেলেছেন বলে অভিযোগ স্কুলছাত্রীর স্বজনদের।
মারা যাওয়া তন্দ্রা ত্রিশাল পৌর শহরের রাহেলা-হযরত মডেল স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী ছিল। সে ত্রিশাল উপজেলার বীররামপুর গফাকুড়ি মোড় এলাকার ব্যবসায়ী গোলাপ মিয়ার মেয়ে। স্কুলছাত্রীর অকাল প্রয়াণে স্কুলের শিক্ষক, সহপাঠী ও এলাকাবাসী শোকাহত। স্বজনেরা শোকাহত থাকায় পরে অভিযোগ দেওয়ার কথা জানিয়েছেন।
পরিবারের সদস্যদের ভাষ্য, তন্দ্রা টনসিলের সমস্যায় ভুগছিল। চিকিৎসার জন্য তাঁরা তাকে চরপাড়া এলাকার এপেক্স হাসপাতালে নেন। চিকিৎসক কামিনী কুমার ত্রিপুরার পরামর্শে ওই হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। পরে শনিবার রাতে অপারেশনের সময় তন্দ্রার শ্বাসনালি কেটে যায় এবং ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ পরিবারের।
স্বজনদের আরও অভিযোগ, চিকিৎসকের অসতর্কতাই এই মৃত্যুর জন্য দায়ী। নিহত তন্দ্রার চাচা আবুল কালাম বলেন, ‘আমরা আমাদের মেয়েকে সুস্থ করার আশায় ওই হাসপাতালে নিয়েছিলাম। আর এ ডাক্তারই আমাদের মেয়েকে মেরে ফেলল। এটা কোনো স্বাভাবিক মৃত্যু নয়, এটা স্পষ্টতই ডাক্তারের অবহেলা। আমরা এর সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ বিচার চাই।’
চিকিৎসক কামিনী কুমার ত্রিপুরা কিশোরগঞ্জের প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজের নাক, কান ও গলা বিভাগের চিকিৎসক। অবসরে ময়মনসিংহে রোগী দেখেন তিনি। এ বিষয়ে তাঁর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
রাহেলা-হযরত মডেল স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা আব্দুল আউয়াল বলেন, ‘এ হৃদয়বিদারক ঘটনাটি কেবল একটি পরিবারের অপূরণীয় ক্ষতি নয়, এটি সমাজের প্রতিটি বিবেকবান মানুষের মনে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করবে। আমাদের সবার প্রত্যাশা, স্থানীয় প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ অতি দ্রুত এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটন করবে এবং দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করবে।’
এপেক্স হাসপাতালের ব্যবস্থাপক মোস্তফা আনোয়ার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা শিশুটিকে বাঁচাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। ডাক্তার অনেক ভালো, উনি খুব যত্নসহকারে কাজ করেন। এটা একটা দুর্ঘটনা।’
জেলা সিভিল সার্জন সাইফুল ইসলাম খান বলেন, রোগীর স্বজনেরা অভিযোগ করলে তদন্ত কমিটি গঠন করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।