গ্রীষ্মের তপ্ত রোদে জ্যৈষ্ঠের আকাশ থেকে যেন দিনভর অগ্নি ঝরে। পিচঢালা সড়ক থেকেও বেরোয় উত্তাপ। ত্রাহি অবস্থায় একটু জিরিয়ে নিতে গাছের ছায়ায় দাঁড়ায় ক্লান্ত পথিক। তখন তাঁর চোখ আটকে যায় ফুলের রূপের বাহারে। রোদের আলোয় সেই রূপ যেন উছলে পড়ছে প্রকৃতিতে। নাম তার কনকচূড়া। সেই কনকচূড়ার রূপের মাধুর্যে নিমেষেই দূর হয়ে যায় পথিকের ক্লান্তি।
নয়নাভিরাম এই ফুলের দেখা মিলেছে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে। ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের পাশেই চরহোসেনপুর এলাকায় একটি কনকচূড়া ফুলের গাছ দেখা যায়। ওই পথে চলাচলকারীকে উষ্ণ অভ্যর্থনা দিতেই সবুজের মাঝে ডানা মেলে, সৌন্দর্য বিলিয়ে, নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে কনকচূড়া গাছ। মানুষ হয়তো এমন সৌন্দর্য দেখবে বলে পথে নামে না, নামে জীবন-জীবিকার তাগিদে। কিন্তু কনকচূড়া তার রূপ এমনভাবে মেলে ধরেছে, তা উপভোগ না করার সাধ্য কার।
প্রকৃতির মাঝে মুগ্ধতা ছড়ানোর পাশাপাশি কনকচূড়া ফুলের মৃদু সুগন্ধি ও উজ্জ্বল রং দূরবাহী হওয়ায় গাছের শাখায় শাখায় মৌমাছি ও প্রজাপতিরা এসে ভিড় করে। এ ছাড়া কনকচূড়া গাছের ফুল শেষ হতে না হতেই ফল ধরা শুরু করে। ফল দেখতে গোলাকৃতি ও তামাটে। কনকচূড়া পাতার নিশ্ছিদ্র বুনন ও প্রস্ফুটনের কারণে এই গাছের সৌন্দর্যে নিসর্গপ্রেমীদের মুগ্ধ না হয়ে উপায় নেই। ডালে ডালে ছড়িয়ে থাকার পাশাপাশি গাছের নিচেও পড়ে আছে অসংখ্য কনকচূড়া।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বনরাজ হর্টি কালচার নার্সারির পরিচালক মো. মহরম আলী বলেন, ‘কনকচূড়া অনেক অনেক উঁচু এলাকায় প্রাকৃতিকভাবেই হয়। তবে আমাদের এই অঞ্চলে খুব একটা চোখে পড়ে না। আমরা প্রয়োজন অনুসারে নার্সারিতে এই গাছের চারা উৎপন্ন করি। রুচিশীল প্রকৃতিপ্রেমীরা এই গাছ কিনে নিয়ে বাড়ির আঙিনায় লাগান।’