ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে শ্বশুরবাড়ি থেকে বাবা ও মেয়ের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত ব্যক্তিরা হলেন রতন (৩০) এবং তাঁর সাত বছর বয়সী মেয়ে নুরিয়া খাতুন। এই ঘটনায় রতনের শ্বশুর-শাশুড়ির বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে উপজেলার ভুবনকুড়া ইউনিয়নের আমিরখাঁ কুড়া এলাকার দুলাল মিয়ার বাড়িতে (শ্বশুরবাড়ি) এই নৃশংস ঘটনা ঘটে। নিহত রতন পার্শ্ববর্তী শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার বাঘবেড় ইউনিয়নের খিশাকুড়ি এলাকার আমির হোসেনের ছেলে।
স্থানীয় ও থানা-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ১০ বছর আগে প্রেমের সম্পর্কের মাধ্যমে রতন ও জুলেখার বিয়ে হয়। তাঁদের একমাত্র মেয়ে নুরিয়া নানা দুলাল মিয়ার বাড়িতেই থাকত। রতন ঢাকায় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন এবং জুলেখা প্রায় দুই বছর দুবাইয়ে ছিলেন।
জানা যায়, সম্প্রতি জুলেখা ছুটিতে বাড়ি আসেন। রতন স্ত্রীকে বিদেশ যেতে বারণ করেন এবং গ্রামে থেকে সংসার শুরু করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। কিন্তু জুলেখা ও তাঁর মা-বাবা এতে রাজি ছিলেন না। এ নিয়ে কয়েক দিন আগে রতন ও জুলেখার মধ্যে বাগ্বিতণ্ডাও হয়।
গত রাতে রতন ঢাকা থেকে শ্বশুরবাড়িতে আসেন। রাত ৩টার দিকে চিৎকার শুনে এলাকাবাসী এগিয়ে গেলে দেখেন, ঘরের মেঝেতে রতনের এবং বিছানায় মেয়ে নুরিয়ার গলাকাটা, রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে আছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। ভোরবেলা পুলিশ বাবা-মেয়ের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে।
এই ঘটনায় রতনের স্ত্রী জুলেখা খাতুনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে ছুটে আসেন রতনের বৃদ্ধ মা। শোকে তাঁর আহাজারি যেন থামছেই না। তিনি অভিযোগ করেন, তাঁর ছেলে স্ত্রীকে বিদেশে যেতে বারণ করায় কৌশলে তাঁর শ্বশুর-শাশুড়ি মিলে ছেলে ও নাতনিকে গলা কেটে হত্যা করেছেন।
রতনের মা বলেন, ‘দুই দিন আগে ছেলে কইছিল বউরে বুজায়া বাড়িতে আনব। ঘর তুলবো, বাড়িতে থাকবো আর বিদেশ যাইতো দিবো না...আমার ছেলে ও নাতিনডারে ওর শ্বশুর-শাশুড়ি মিল্লা মাইরা ফালাইলো, আমি বিচার চাই।’
হালুয়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর ইসলাম হারুন বলেন, ঘটনাস্থল থেকে সুরতহাল শেষে লাশ উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত হত্যাকাণ্ডের কারণ জানা যায়নি। এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।