মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার চরাঞ্চলে পদ্মার ভয়াবহ ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে শত শত পরিবারের ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি। এ বছরের মে মাসের শেষ দিক থেকে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত উপজেলার লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়নের হরিহরদিয়া, গঙ্গাধরদী, সেলিমপুর, জয়পুর ও উত্তর পাটগ্রাম এলাকায় শত শত বিঘা ফসলি জমির পাশাপাশি তিন শতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে হারিয়ে গেছে।
জানা গেছে, গত বছর হরিহরদিয়ার নটাখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও গঙ্গাধরদীর পাঠানকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভাঙনে বিলীন হয়। বর্তমানে ঝুঁকির মধ্যে আছে নটাখোলা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র, নটাখোলা আফরোজা উচ্চ বিদ্যালয় ও লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ ভবন।
জানতে চাইলে পাটগ্রামের গৃহবধূ আরজিনা বেগম বলেন, ‘অনেক কষ্টে টাকা জমিয়ে পাকা একটা ঘর বানাইছিলাম। সেই ঘর এখন ভাঙনের মুখে। যেকোনো সময় পদ্মায় বিলীন হয়ে যাবে। আমাদের আর কিছুই থাকছে না, কেউ খোঁজও নিচ্ছে না।’
হায়দার আলী (৭২) বলেন, ‘১০ বিঘা জমি আছিল, সবই ভাঙনে গেছে। এখন আর কিছুই নাই।’ রমিজ উদ্দিন (৭০) বলেন, ‘আমাদের সব শেষ হইয়া গেল—ঘরবাড়ি, জমি, ফসল কিছুই রইল না। কেউ খোঁজ নিচ্ছে না, ভাঙন ঠেকাতে কোনো ব্যবস্থা করছে না।’
লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘এ বছর লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়নের সাতটি মসজিদ, হরিহরদিয়া, গঙ্গাধরদী ও সেলিমপুর বাজার নদীগর্ভে চলে গেছে। এ ছাড়া তিন শতাধিক ঘরবাড়িও ভেঙে গেছে।’
এ বিষয়ে হরিরামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তৌহিদুজ্জামান খান বলেন, ‘হরিহরদিয়া, সেলিমপুর, নতুনহাট ও হরিনাঘাট এলাকায় প্রায় ২০০ হেক্টর ফসলি জমি পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে।’ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘চরাঞ্চলের ভাঙনকবলিত এলাকায় দ্রুত ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’