কুড়িগ্রামের উলিপুরে নকল সার তৈরির একটি কারখানার সন্ধান পেয়েছে প্রশাসন। সেখানে অভিযান চালিয়ে কারখানার মালিককে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পৌরসভার নারিকেলবাড়ি খেয়ারপাড় এলাকায় এই অভিযান চালানো হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে একটি চক্র বিভিন্ন কোম্পানির মোড়কে নিজেদের তৈরি নকল সার প্যাকেটজাত করে বিক্রি করে আসছিল। আজ বিকেলে একটি সার কোম্পানির প্রতিনিধি স্থানীয় এক দোকানে গিয়ে তাঁদের কোম্পানি ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মোড়কজাত সার দেখতে পান। দোকানদার তাঁকে জানান, ওই সার স্থানীয় এক ব্যক্তি কম দামে সরবরাহ করেন। এতে সন্দেহ হলে প্রতিনিধি অনুসন্ধান চালান। পরে তিনি আছির উদ্দিনের ছেলে সিদ্দিকুর রহমানের (৪০) বাড়িতে গিয়ে নকল সার তৈরির কারখানা ও বিভিন্ন কোম্পানির মোড়কজাত সার জব্দ করেন। এরপর তিনি বিষয়টি উপজেলা কৃষি বিভাগকে জানালে প্রশাসন অভিযান চালায়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সিদ্দিকুর রহমান দীর্ঘদিন ধরে নকল সার বাজারজাত করছেন। সরেজমিনে দেখা গেছে, তিনি জিপসাম, ম্যাগনেশিয়াম, ডিএপি ও ডলো চুন মিশিয়ে নকল সার তৈরি করতেন। পরে সেগুলো মনোভিট, সালফাভিট, গ্রিনভিট, থট, গ্রিনার, হাদিয়া ভিট ও সিলভা গোল্ড কোম্পানির মোড়কে ভরে বাজারজাত করতেন। এসব নকল সার কিনে কৃষকেরা প্রতারিত হচ্ছিলেন।
এস-কিউ নাফিস ক্রপ কেয়ার লিমিটেডের প্রতিনিধি আতিকুর রহমান বলেন, ‘ওই প্রতারক আমাদের কোম্পানিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মোড়ক ব্যবহার করে স্বল্পমূল্যে সার বিক্রি করতেন। এসব সার কৃষকের কোনো কাজে আসত না।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন বলেন, বিভিন্ন ব্র্যান্ডের অপব্যবহার ও ভেজাল মিশ্রণ করায় সার ব্যবস্থাপনা আইন, ২০০৬-এর ১৬(১) ধারা লঙ্ঘন হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত প্রতারককে এক লাখ টাকা জরিমানা করেন। অনাদায়ে তাঁকে বিনাশ্রম কারাদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়। এ সময় কারখানার সব মালামাল জব্দ করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক নয়ন কুমার সাহা বলেন, প্রতারককে এক লাখ টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তিনি জরিমানার টাকা পরিশোধ করেছেন। জব্দ করা সব উপকরণ ধ্বংসের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।