হোম > সারা দেশ > যশোর

এমএম কলেজে হল দখল নিয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে উত্তেজনা

যশোর প্রতিনিধি

যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজের ‘আসাদ হল’ দখল নিয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর থেকে ক্যাম্পাসে দুটি গ্রুপের মহড়া দিচ্ছে। 

সংশ্লিষ্টরা বলছে, আট বছর ধরে হলের নিয়ন্ত্রণ ছিল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও যশোর-৬ সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদারের অনুসারীদের হাতে। শাহীন চাকলাদারের অনুসারী কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুর রহমান নিয়ন্ত্রণ করতেন। 

তবে আজ বুধবার থেকে যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদের অনুসারীরা দখলে নিয়েছেন। নাবিলের অনুসারী ও কলেজ ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক নুর ইসলাম বর্তমানে হলটি দখলে রেখেছেন। 

দখলে নেওয়াকে কেন্দ্র করে গতকাল মঙ্গলবার থেকে দুই গ্রুপের মহড়া-মিছিলে উত্তেজনা বিরাজ করছে ক্যাম্পাসে। পুলিশ ও কলেজ প্রশাসন কঠোর অবস্থান থাকায় কোনো সংঘর্ষ হয়নি। তবে নিজেদের আধিপত্য বজায় রাখতে আগামীকাল বৃহস্পতিবার ক্যাম্পাসে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে শাহীন চাকলাদারের অনুসারীরা। 

জেলা ও কলেজ ছাত্রলীগের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, জেলা আওয়ামী লীগ দুটি গ্রুপে বিভক্ত। একটির নেতৃত্ব দেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও যশোর-৬ সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদার। অন্যটি যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ। আওয়ামী লীগের এই শীর্ষ দুই নেতার বিভক্তির কারণে সংগঠনের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগও দীর্ঘদিন দুটি গ্রুপে বিভক্ত। 

এই বিভক্তের কারণে এমএম কলেজ ছাত্রলীগেও দুটি গ্রুপে বিভক্ত ছিল। ২০১৫ সালের ২১ এপ্রিল ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে শহীদ আসাদ হল দখলে নেন শাহীন চাকলাদারের অনুসারীরা। এরপর আট বছর ধরে তাঁরা হলটি দখলে রেখেছিলেন। 

তবে গতকাল দুপুরে নাবিলের অনুসারী কাজীপাড়ার শাকিল হোসেনের নেতৃত্বে হল দখলের জন্য ক্যাম্পাসে মহড়া দেয় কিছু বহিরাগত যুবক। এদের সঙ্গে যোগ দেন দীর্ঘদিন শাহীন চাকলাদারের সঙ্গে রাজনীতি করা ছাত্রলীগ নেতা নুর ইসলামও। পরে বহিরাগত শাকিল ও ছাত্রলীগ নেতা নুর ইসলাম যৌথভাবে আসাদ হলের সব ছাত্রলীগ নেতাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে নির্দেশ দেন ‘এই হলে থাকতে হলে নাবিল ভাইয়ের সঙ্গে রাজনীতি করতে হবে; না করলে হলে জায়গা নেই’। 

হল দখলের খবরে শাহীন চাকলাদারের অনুসারী কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুর রহমান ক্যাম্পাসে মহড়া দিয়ে অবস্থান নেন। এ সময় ক্যাম্পাসে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ও বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। তখন কলেজের অধ্যক্ষ নার্গিস আক্তার পুলিশে খবর দেন। পুলিশ ও কলেজ প্রশাসনের হস্তক্ষেপে কোনো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু আজ বুধবারও বহিরাগতদের নিয়ে ছাত্রলীগের একটি পক্ষ ক্যাম্পাসে মহড়া দিচ্ছে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এমএম কলেজ ছাত্রলীগের এক নেতা বলেন, এমএম কলেজের আশপাশে যত ছাত্রাবাস আছে সেগুলো সব নিয়ন্ত্রণ করে আসাদ হল ছাত্রলীগ। মূলত জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কর্মসূচিতে জনসমাগম ঘটতে সাধারণ ছাত্রদের নিয়ে যায় আসাদ হল ছাত্রলীগ। এত দিন শাহীন চাকলাদারের মিছিল-মিটিংয়ে আসাদ হল ছাত্রদের নিয়ে যেত। কিন্তু বেশ কিছুদিন ধরে নাবিলের অনুসারীরা হল দখলে মরিয়া হয়ে ওঠে। সেই সুযোগে নাবিলের অনুসারী নুর ইসলাম হল দখলে নিয়েছে। একই সঙ্গে নাবিলের সঙ্গে রাজনীতি না করলে হল ছাড়ার নির্দেশও তিনি দিয়েছেন। 

ওই ছাত্রলীগ নেতা আরও বলেন, ক্যাম্পাসে শাহীন চাকলাদার পক্ষে এত দিন যারা মিছিল মিটিং ও প্রভাব বিস্তার করতেন, তাঁরা কেউ আসাদ হল নেই। অনেককে হল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। দুটি গ্রুপ দুই দিন ধরে মহড়া অব্যাহত রাখায় বর্তমানে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করছে। তবে কঠোর অবস্থানে রয়েছে কলেজ প্রশাসন। আজ দুপুরে শিক্ষক সমিতির নেতাদের নিয়ে আসাদ হলে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে যান কলেজের অধ্যক্ষ মর্জিনা আক্তার। 

এমএম কলেজের অধ্যক্ষ মর্জিনা আক্তার বলেন, ‘কলেজে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে দেওয়া হবে না। ক্যাম্পাসে পরিবেশ সুষ্ঠু রাখতে ছাত্রলীগের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছি। যদি কেউ বিশৃঙ্খলা করে তাদের বিরুদ্ধে কলেজ প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।’ 

আসাদ হলে দায়িত্ব থাকা শাহীন চাকলাদারের অনুসারী সৌরভ ভট্টাচার্য বলেন, ‘বহিরাগতরা বিভিন্ন সময়ে প্রভাব বিস্তারের জন্য হল দখলের পাঁয়তারা করে। তারা কিছু ছাত্রকে ভয়ভীতি দেখিয়ে বের করে দিয়েছে। বর্তমানে আমি ঢাকাতে আছি তাই এর বেশি কিছু বলতে পারছি না।’ 

এই বিষয়ে জানতে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাঁদের পাওয়া যায়নি। 

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা ছাত্রলীগের এক সহসভাপতি আজকের পত্রিকাকে জানান, দীর্ঘদিন কমিটি না হওয়ায় এমএম কলেজ ছাত্রলীগে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। বহিরাগতরা কলেজ ক্যাম্পাসে প্রভাব বিস্তারের জন্য ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার করছে। যারা হল দখল করছেন বা করার পাঁয়তারা করছেন, তাঁরা কেউ ছাত্র নয়; বহিরাগত। ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার করে ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলা করলে তাঁদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

এ বিষয়ে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) এ কে এম শফিকুল আলম আজকের পত্রিকাকে চৌধুরী বলেন, ‘ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে কলেজে উত্তেজনা বিরাজ করায় ক্যাম্পাসে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। কলেজ প্রশাসনের সহযোগিতায় পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়েছে। কাউকে আটক করা হয়নি। এখন পর্যন্ত কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাও ঘটেনি। তবে আমরা খবর রাখছি।’ 

 

আবাসিক হোটেল থেকে জাপা নেতার মরদেহ উদ্ধার

খুলনায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে সাংবাদিক নিহত, প্রাণিচিকিৎসক আশঙ্কাজনক

খুলনায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে সাংবাদিক নিহত

খুলনায় আদালত প্রাঙ্গণে জোড়া খুনের ঘটনায় যুবক গ্রেপ্তার

রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে ১৩ দফা দাবি পরিবেশ ও উন্নয়ন ফোরামের

প্রার্থীর আবেদনের ভিত্তিতে নিরাপত্তা দেওয়া হবে: কেএমপি কমিশনার

আমির হামজার বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের বিবৃতি

খুলনায় আবাসিক হোটেল থেকে যুবকের লাশ উদ্ধার

সাত দফা দাবিতে মিরপুরে রেলপথ অবরোধ, দুই ঘণ্টা পর প্রত্যাহার

খুলনার পূর্ব রূপসায় যুবককে গুলি করে হত্যা