মেহেরপুরের গাংনীতে পেঁয়াজ, রসুন, আলুসহ সব ধরনের নিত্যপণ্যের বাজারে হঠাৎ আগুন লেগেছে। ১০ থেকে ১৫ দিনের ব্যবধানে এসব পণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা। ক্রেতাদের অভিযোগ, একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীর সিন্ডিকেট এই লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির মূল কারণ। যেখানে শীতের এই মৌসুমে শাকসবজি থেকে শুরু করে নিত্যপণ্যের দাম কমার কথা, সেখানে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ক্রেতারা বলছেন, পর্যাপ্ত বাজার মনিটরিং না হলে তাঁরা আরও ঠকবেন।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে গাংনী উপজেলার বামন্দী বাজারে দেখা গেছে, পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকা কেজি, রসুন ৮০ টাকা কেজি এবং আলু ১০০ টাকায় ৪ কেজি। সবজির দামও বেড়েছে।
বাজার করতে আসা মো. ইলিয়াস হোসেন বলেন, ‘বাজারে পেঁয়াজের কেজি ১১০ টাকা। ১০-১৫ দিন আগে পেঁয়াজের দাম ছিল ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি। রসুন ছিল ৬০ টাকা কেজি। আলু ছিল ১০০ টাকায় ৫ কেজি, এখন ১০০ টাকায় ৪ কেজি। হঠাৎ পেঁয়াজ, রসুন ও আলুর দাম বেড়ে গেল কেন বুঝতে পারছি না। এ ছাড়াও বেড়েছে সবজির দাম।’
বাজার করতে আসা বক্কর আলী বলেন, ‘আমরা নিম্ন আয়ের মানুষ। কিছু জিনিসের দাম এত বাড়ে কেন জানি না। চাষিরা কোনো কিছু বিক্রি করতে গেলে দাম থাকে না। আর কিনতে গেলে দাম বেড়ে যায়। পেঁয়াজ, আলু ও রসুনের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। শীতে সবজির দাম কম থাকে, কিন্তু এখনো দাম কমেনি। কোনো কিছু কিনে স্বস্তি পাচ্ছি না।’
সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘গত হাটেও সবজির দাম কিছুটা কম ছিল। আজকে সবজির দাম বেড়েছে। মানুষ বাজার করে স্বস্তি পাচ্ছে না। যত দিন দাম কমবে না স্বস্তিও মিলবে না। শীত এসে গেছে তবু সবজির দাম কমছে না।’
বামন্দী বাজারের সবজি ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ইসহাক আলী বলেন, বেগুনের কেজি ৬০ টাকা, ফুলকপি ৮০, শসা ১০০, শিম ১০০, মুলা ৪০, করলা ৭০-৮০ টাকাসহ প্রায় সব সবজির দাম বেড়েছে। কিছু সবজির দাম গত হাটের চেয়ে ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে।
আরেক ব্যবসায়ী ফারুক আহমেদ বলেন, ‘বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১০০ থেকে ১১০ টাকা, রসুন ৮০, আলু ১০০ টাকায় ৪ কেজি বিক্রি হচ্ছে। মনে হচ্ছে, দাম আরও বাড়বে। ১০-১৫ দিন আগেও পেঁয়াজের কেজি ছিল ৭০ থেকে ৮০ টাকা। আর রসুন ছিল ৬০ টাকা।’
গাংনী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ইমরান হোসেন বলেন, ‘গাংনী উপজেলায় সবজির উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। আশা করি দামও কমবে।’
গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আনোয়ার হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। কোনো সিন্ডিকেট তৈরি করতে দেওয়া হবে না। দ্রব্যমূল্যের দাম অতিরিক্ত নিলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ব্যাপারে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর জন্য বাজারের পরিস্থিতি খারাপ হয়। বাজার নিয়ন্ত্রণে সকলের সহযোগিতা চাই।’