হোম > সারা দেশ > খুলনা

খুলনায় ট্রিপল মার্ডারের রহস্য উন্মোচন, দাবি পুলিশের

খুলনা প্রতিনিধি

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কর্মকর্তারা। ছবি: আজকের পত্রিকা

খুলনায় শিশু ফাতিহা (৭), মুস্তাকিম (৮) ও তাদের নানি মহিতুন্নেছা (৫৩) হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। শনিবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আবু রায়হান মুহাম্মদ সালেহ্।

ফাতিহা ও মুস্তাকিমের বাবা শেফার আহমেদের আপন মামাতো ভাই ফ্রান্সপ্রবাসী মো. শামীম শেখ ওরফে শেখ শামীম আহম্মেদসহ ৭ জন মাত্র ১ লাখ টাকার বিনিময়ে হত্যার মিশনে অংশ নেন।

জমাজমি নিয়ে বিরোধের জেরেই তিনজনকে হত্যা করা হয় বলে দাবি পুলিশের। হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার মো. শামীম শেখ ওরফে শেখ শামীম আহম্মেদ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, রূপসা আইচগাতী ইউনিয়ন ভবানীপুর গ্রামে ১ একর ৬৯ শতক পৈতৃক জমি নিয়ে শেফার আহমেদের সঙ্গে তাঁরই মামাতো ভাই শামীমের বিরোধ ছিল। এ নিয়ে আদালতে মামলাও চলছে। ২০০৩ সালে শামীম একটি অস্ত্র মামলার আসামি ছিলেন। এরপর তিনি ফ্রান্সে চলে যান। ২০১৭ সালে ফ্রান্স থেকে দেশে ফেরেন। এরপর তিনি অস্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর ৭-৮ মাস আগে জামিনে মুক্তি পান। জেলখানায় বসেই শামীম তাঁর ফুফাতো ভাই শেফারের পরিবারকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেন।

ওই কর্মকর্তা আরও জানান, অস্ত্র মামলায় জেলে থাকাকালে একটি সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্যের সঙ্গে সখ্য গড়ে ওঠে শামীমের। জামিনে বের হয়ে তিনি জেলখানায় পরিচিত সন্ত্রাসীদের ১ লাখ টাকার বিনিময়ে ভাড়া করে পতিপক্ষ শেফার আহমেদের পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করার পরিকল্পনা করেন।

১৬ নভেম্বর বেলা একটা থেকে দেড়টার মধ্যে শামীমের নেতৃত্বে ৭ জন লবণচরা এলাকার দরবেশ মোল্লা গলির শেফার আহমেদের বাড়িতে প্রবেশ করে। প্রথমে দেয়াল টপকে একজন ঢুকে প্রধান গেটের পকেট গেট খুলে দেয়। এরপর তারা একে একে তিনজনকে ইট দিয়ে থেঁতলে হত্যা করে মুরগির খামারের কক্ষে রেখে দেয়। পরে শেফার আহমেদ ও তাঁর স্ত্রী রুবি আক্তারকে হত্যা করার জন্য ওই বাড়িতেই অবস্থান করে। কিন্তু সে পরিকল্পনা সফল করতে না পেরে তারা কৌশলে পালিয়ে যায়।

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আবু রায়হান মো. সালেহ আরও বলেন, হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী শামীম আহম্মেদ ঘটনার দিন থেকে পলাতক ছিলেন। তিনি কৌশলে ফ্রান্সে পালিয়ে যাচ্ছিলেন। ২৭ নভেম্বর দিবাগত রাত ৩টায় ঢাকার বিমানবন্দর থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ছাড়া এ মামলায় আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁরা হলেন লবণচরা থানার মোল্লাপাড়া এলাকার মো. আজহারুল ইসলাম আরজুর ছেলে তরিকুল ইসলাম তারেক (২৬)। তাঁর বিরুদ্ধে একটি মাদক মামলা রয়েছে। এ ছাড়া এই ট্রিপল হত্যা মামলায় একই থানার জিন্নাহপাড়া এলাকার মো. বাবুল হাওলাদারের ছেলে তাফসির হাওলাদারকে (২০) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে চুরি ও ছিনতাইয়ের দুটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে শামীম আহমেদ শুক্রবার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দিতে শামীম বলেছেন, হত্যা মিশন সফল হওয়ার পর তিনি ভাড়াটে খুনিদের ১ লাখ টাকা পরিশোধ করেছেন।

ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ঘটনার পর ওই বাড়ি থেকে লুট হওয়া জমির দলিলপত্র ও স্বর্ণালংকার এখনো উদ্ধার করা হয়নি। এই মামলার সব আসামি ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। প্রেস ব্রিফিংয়ে নিহত ফাতিহা ও মুস্তাকিমের বাবা শেফার আহমেদ এবং মা রুবি আক্তার উপস্থিত ছিলেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও লবণচরা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ইউসুফ আলী বলেন, ‘আমরা আগে থেকে জেনেছিলাম এ মামলার সন্দেহভাজন ব্যক্তি শামীম আহমেদ যেকোনো মুহূর্তে দেশের বাইরে চলে যেতে পারেন। এমন সংবাদে দেশের প্রত্যেক বর্ডারে তাঁর ছবিসংবলিত তথ্য পাঠানো হয়। গত বুধবার গভীর রাতে ফ্রান্সে যাওয়ার আগে বিমানবন্দর পুলিশ তাঁকে আটক করে আমাদের কাছে হস্তান্তর করে। তাঁকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তিনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। তবে তদন্তের স্বার্থে তা প্রকাশ করা সম্ভব নয়।

জামায়াতের কৃষ্ণের চ্যালেঞ্জ অনেক

প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে শিশুর মরদেহ উদ্ধার: হত্যাকারীর ফাঁসির দাবিতে সড়ক অবরোধ

‘আদালতে হাজিরা দিতে এসে লাশ হয়ে ফিরলে কার কাছে বিচার চাইব’

খুলনায় জোড়া খুন: আসামিদের ভয়ে সন্ত্রস্ত পরিবার, পুলিশের মামলা অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে

পূর্ব সুন্দরবনে অভয়ারণ্যের খালে মাছ ধরার অভিযোগে ১০ জেলে গ্রেপ্তার

গল্লামারী সেতুর নির্মাণকাজ দ্রুত সম্পন্নের দাবিতে ১ ঘণ্টা ‘অচল কর্মসূচি’

খুলনায় ট্রেনে কাটা পড়ে যুবকের মৃত্যু

খুলনায় জোড়া হত্যা: বিলুপ্ত ‘ইহুদি’ বাহিনীর সদস্য আটক

ক্ষমতায় না গিয়েও অনেকে প্রশাসনিক ক্যুর চেষ্টা করছে: জামায়াত আমির

রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় খুলনা বারের সাবেক সভাপতি কারাগারে