মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলা পরিষদের ভেতরে পুরোনো হলরুমের পাশে ভবন নির্মাণের জন্য মাটি খোঁড়ার সময় মানুষের হাড়, মাথার খুলি ও দাঁতের অংশবিশেষ দেখতে পান শ্রমিকেরা। পরে সেগুলোকে সংশ্লিষ্ট ইউএনও, থানা-পুলিশ ও স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের উপস্থিতিতে পার্শ্ববর্তী স্থানে পুঁতে রাখা হয়েছে।
স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের দাবি, এগুলো ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে নিহত রাজাকারদের কঙ্কাল। আজ মঙ্গলবার সকালে নির্মাণশ্রমিকেরা বেজ ঢালাইয়ের জন্য মাটি খুঁড়তে গিয়ে সেগুলো দেখতে পান।
স্থানীয়রা বলছেন, কৃষি যন্ত্র সংরক্ষণাগার ভবন নির্মাণের জন্য মাটি খোঁড়ার সময় মানুষের হাড়, মাথার খুলি ও দাঁতের অংশ বেরিয়ে আসে। পরে খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন সেগুলো দেখতে ছুটে যান।
এ বিষয়ে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আব্দুল হাই মিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় উপজেলা পরিষদের পুরোনো হলরুমের (তৎকালীন টিটিডিসি ভবন) ছাদে পাকিস্তানি দোসর ও রাজাকার বাহিনী ক্যাম্প স্থাপন করেছিল। ১৯ নভেম্বর বীর যোদ্ধাদের সঙ্গে স্বাধীনতাবিরোধীদের যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। যে কঙ্কাল পাওয়া গেছে সেগুলো একাত্তরের স্বাধীনতাবিরোধীদের।
খননকাজে নিয়োজিত শ্রমিক কিবরিয়ার ধারণা, ওই স্থানের মাটি খুঁড়লে আরও হাড়-গোড়, মাথার খুলি পাওয়া যেতে পারে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রামানন্দ পাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিষয়টি জেনেছি। স্থানীয় কৃষি বিভাগ ও মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে ধর্মীয় রীতিনীতি অনুযায়ী মাথার খুলি, হাড় উপজেলা পরিষদ চত্বরের এক পাশে মাটির নিচে রাখতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে মহম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অসিত কুমার রায় বলেন, ‘রাস্তা বা অন্যান্য কোথাও খোঁড়ার সময় কবর পাওয়া গেলে সেটা স্থানান্তর করা হয়। সেই নিয়ম অনুযায়ী পরে উপজেলার এক পাশে হাড়, মাথার খুলি পুঁতে রাখা হয়েছে।’
উপজেলা কেন্দ্রীয় মসজিদের পেশ ইমাম আবুল কালাম আজাদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ইউএনও, ওসি, কৃষি কর্মকর্তা ও মুক্তিযোদ্ধাদের উপস্থিতিতে ধর্মীয় নিয়ম মেনে মাটিতে হাড়গোরগুলো পুঁতে রাখা হয়েছে।