সুন্দরবনের পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ঢাংমারী স্টেশনে জেলেদের বিএলসি নবায়নে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। প্রতি বিএলসি নবায়নে সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে জেলেদের কয়েক গুণ বেশি টাকা দিতে হচ্ছে।
ভুক্তভোগী জেলেরা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন যাবৎ সুন্দরবনে মাছ ও কাঁকড়া ধরা জেলেদের নৌকার লাইসেন্স ও ধারণক্ষমতা (বিএলসি) নবায়নে ওই স্টেশনে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি করা হচ্ছে। চলতি অর্থবছরেও পূর্বের ন্যায় জেলেদের বিএলসি নবায়ন বাণিজ্য শুরু হয়েছে। আর এই বাণিজ্যের সার্বিক সহযোগিতায় রয়েছেন স্টেশনের নৌকাচালক (বিএম) ওয়াদুত মণ্ডল। সরকারি নিয়মানুযায়ী প্রতি ১০ কুইন্টাল ধারণ ক্ষমতা নৌকার অনুকূলে প্রতি বিএলসি নবায়নে ৫ টাকা নেওয়ার কথা। আবার ১০ কুইন্টালের বেশি বা ২০ কুইন্টাল পর্যন্ত ১০ টাকার সঙ্গে শতকরা ১৫ শতাংশ ভ্যাট নেওয়ার নিয়ম রয়েছে। এতে প্রতি বিএলসি নবায়নে ভ্যাটসহ মোট ৬ থেকে সর্বোচ্চ ১২ টাকা পর্যন্ত সরকারি রাজস্ব আসতে পারে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই স্টেশনে প্রতিবছর মাছ ও কাঁকড়ার প্রায় ৮০০ থেকে ৯০০ বিএলসি নবায়ন হয়ে থাকে। আর এই বিএলসি নবায়ন করে বিপুল অঙ্কের উৎকোচের টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে পানখালী ও কালাবগি এলাকার বেশ কয়েকজন জেলে বলেন, ‘এ বছর প্রতি বিএলসি নবায়নে আমাদের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা। আর নতুন বিএলসিতে ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা। অতিরিক্ত টাকা না দিলে বিএলসি নবায়ন বা নতুন বিএলসি দেয় না। উল্টো বিভিন্ন মামলায় জড়িয়ে হয়রানির ভয়ভীতি দেখিয়ে ঘুষের টাকা আদায় করা হচ্ছে। যে কারণে কোনো ঊর্ধ্বতন মহলে বিষয়টি জানাতেও পারি না।’
অভিযোগ অস্বীকার করে নৌকাচালক ওয়াদুত মণ্ডল বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সত্য নয়। আমি এ ধরনের কোনো কাজের সঙ্গে জড়িত নই।’
এ বিষয়ে ঢাংমারী স্টেশন কর্মকর্তা (এসও) সাইফুল বারী জানান, বিএলসি নবায়নে কোনো অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হয় না। যা নিয়মে আছে তাই নেওয়া হয়।
সুন্দরবনের পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বনসংরক্ষক (এসিএফ) মো. শহিদুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, ‘এ ধরনের কোনো অভিযোগের বিষয়ে আমার জানা নেই। আমি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেব।’