জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায় ‘এসো গড়ি সোনার বাংলা (AGSB)’ নামের একটি বেসরকারি সংস্থার বিরুদ্ধে ৫০ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা তাঁদের জামানত ও বকেয়া বেতন আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ রোববার বেলা ৩টায় কালাই উপজেলা পরিষদ চত্বরে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাকেন্দ্রের ভুক্তভোগী শিক্ষকেরা।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্পের (PEDP-4) সাব-কম্পোনেন্ট-২.৫-এর আওতায় ‘আউট অব স্কুল চিলড্রেন’ শিক্ষা কর্মসূচিতে ২০২২ সালে ভুক্তভোগী এই শিক্ষকেরা নিয়োগ পান। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে সহায়ক সংস্থা সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট সার্ভিস (SDS), আর মাঠপর্যায়ে কার্যক্রম পরিচালনা করে ‘এসো গড়ি সোনার বাংলা (AGSB)’ এনজিও।
নিয়োগের সময় প্রত্যেক শিক্ষককে ২০ হাজার টাকা জামানত হিসেবে দিতে হয়, যা প্রকল্প শেষে ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও সেই টাকা ফেরত দেওয়া হয়নি। এ ছাড়া মাসিক ৫ হাজার টাকার চুক্তিতে বেতন দেওয়ার কথা থাকলেও প্রতি ছয় মাসে কেবল আংশিক অর্থ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তাঁরা।
ভুক্তভোগী শিক্ষক খাদিজা খাতুন বলেন, ‘প্রতি ছয় মাসে ৩০ হাজার টাকার মধ্যে আমাদের দেওয়া হয়েছে মাত্র ২২ হাজার টাকা। প্রতিবছর ৫ হাজার টাকা উৎসব ভাতা এবং প্রতি মাসে ১ হাজার ২০০ টাকা কেন্দ্র ভাড়ার টাকাও দেওয়া হয়নি। মোটকথা, তিন বছরে আমাদের প্রত্যেকের প্রায় ৬৮ হাজার টাকা পাওনা রয়েছে এসো গড়ি সোনার বাংলা (AGSB) সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মো. মেহেদী হাসান ও তাঁর বাবা গাউসুল আযমের কাছে।’
মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য দেন শিক্ষিকা গোলসানা শিল্পী, তহমিনা বেগম, খাদিজা খাতুন, রিফাত জাহান প্রমুখ। অভিযোগকারীরা বলেন, সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মো. মেহেদী হাসান ও তাঁর বাবা গাউসুল আযম টাকা ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েও পরে তা অস্বীকার করেন এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। মানববন্ধন শেষে শিক্ষকেরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামিমা আক্তার জাহানের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।
জানতে চাইলে অভিযুক্ত গাউসুল আযম মোবাইল ফোনে বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে শিক্ষকদের আনীত অভিযোগগুলো মিথ্যা। এসব অভিযোগের স্বপক্ষে তাঁদের কোনো প্রমাণ নেই।’
এ বিষয়ে কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামিমা আক্তার জাহান বলেন, ‘আউট অব স্কুল চিলড্রেন শিক্ষা কর্মসূচির শিক্ষকদের বেতন ও জামানতের টাকা ফেরতের দাবিতে এসো গড়ি সোনার বাংলা এনজিওর বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’