জামালপুর জেলার শ্রেষ্ঠ সার্কেল নির্বাচিত হয়েছেন ইসলামপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) অভিজিত দাস। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে জামালপুর পুলিশ সুপারের (এসপি) কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে গত এপ্রিল মাসের আইনশৃঙ্খলা ও অপরাধ পর্যালোচনাবিষয়ক সভায় কৃতিত্বপূর্ণ সাফল্যের জন্য তাঁকে জেলার শ্রেষ্ঠ সার্কেল ঘোষণা করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে গত রমজানে পাঁচ যুবককে হেনস্তার অভিযোগ রয়েছে।
এসপি মো. কামরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গতকালের সভার শুরুতে পূর্ববর্তী অপরাধ পর্যালোচনা সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা হয়। পরে জেলার বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, জঙ্গি দমন, অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার, কমিউনিটি পুলিশিং ও বিট পুলিশিং কার্যক্রম জোরদার, জেলার মুলতবি মামলা, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিষ্পত্তি, স্পর্শকাতর মামলাগুলোর অগ্রগতিসহ জেলার গোয়েন্দা কার্যক্রম বিষয়ে আলোচনা হয়।
সভায় এসপি মো. কামরুজ্জামান তাঁর বক্তব্যে জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও সামগ্রিক বিষয় নিয়ে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেন। পাশাপাশি দেশে বিরাজমান স্বাভাবিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে নিষ্ঠা, পেশাদারি ও সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
এএসপি অভিজিত দাস ছাড়াও গত এপ্রিল মাসে কৃতিত্বপূর্ণ সাফল্যের জন্য জেলার শ্রেষ্ঠ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিসেবে ভূষিত হন ইসলামপুর থানার ওসি সুমন তালুকদার। এর আগে গত ফেব্রুয়ারি মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক সেবা (পিপিএম-সেবা) পদকে ভূষিত হন তিনি। শ্রেষ্ঠ আইসি নির্বাচিত হয়েছেন নারায়ণপুর পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের পরিদর্শক মোহাম্মদ কামাল হোসেন এবং বিশেষ পুরস্কারে ভূষিত হন জামালপুর কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক এ বি এম মাঈদুল হাছান। শ্রেষ্ঠ উপপরিদর্শক (এসআই) নির্বাচিত হয়েছেন সরিষাবাড়ী থানার শিব্বির আহমেদ, শ্রেষ্ঠ সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) নির্বাচিত হয়েছেন জামালপুর সদর থানার মোস্তাফিজুর রহমান।
শ্রেষ্ঠ মাদক উদ্ধারকারী নির্বাচিত হয়েছেন জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) শাখা-১-এর এসআই আব্দুস সালাম, শ্রেষ্ঠ ওয়ারেন্ট তামিলকারী নির্বাচিত হয়েছেন মেলান্দহ থানার এএসআই মোহাম্মদ আলী হোসেন, শ্রেষ্ঠ বিট অফিসার নির্বাচিত হয়েছেন ইসলামপুর থানার এএসআই মো. আব্দুল হাদি, শ্রেষ্ঠ সর্বোচ্চ চোরাই ও হারানো মোবাইল ফোন উদ্ধারকারী নির্বাচিত হয়েছেন দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানার এএসআই মোহাম্মদ শাহীন মিয়া। এসপি মো. কামরুজ্জামান শ্রেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে নির্বাচিতদের সম্মাননাসহ সনদ দেন। এ ছাড়া বিশেষ কাজের জন্য মেলান্দহ থানার এসআই মো. মাসুদ রানা এবং নারায়ণপুর পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের এএসআই আশরাফুল ইসলামকে বিশেষ পুরস্কার দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, গত রমজানে সাহরি খেতে মাইকিং করার দায়ে এএসপি অভিজিত দাসের হেনস্তার শিকার হন এলাকার পাঁচ যুবক। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, সাহরি খেতে রাত ৩টার দিকে পৌর এলাকায় মাইকিং করছিলেন তাঁরা। এ সময় মাইকিং করার দায়ে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করাসহ তাঁদের মারধর করে থানা হাজতে আটকে রাখেন এএসপি অভিজিত দাস। সেখানে সাহরি খেতে না দেওয়ায় পরদিন তাঁরা রোজা রাখতে পারেননি। ভোরে পৌর কাউন্সিলর ও উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহন মিয়ার হস্তক্ষেপে তাঁরা ছাড়া পান। পরে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান দুলাল দুই পক্ষকে ডেকে সমঝোতা করে দেন। তবে পাঁচ যুবককে হেনস্তার অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছিলেন অভিজিত।